প্রথম নিউজ, খেলা ডেস্ক: ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। আফগানিস্তানকে উড়িয়ে শুরু করা টাইগারদের অবশ্য পরের গল্প হতাশার। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের কাছে হার দিয়ে শুরু এরপর নিউজিল্যান্ডের পর আজকের ম্যাচে ভারতের কাছেও পরাস্ত হয়েছে সাকিববিহীন বাংলাদেশ দল। স্বাগতিক ভারতের কাছে ৭ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ দল। টাইগারদের করা ২৫৬ রানের টার্গেট কোহলির শতকে প্রায় ৮ ওভার হাতে রেখে হেসে খেলে জিতেছে ভারত।
বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) পুনেতে টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান করেছিল বাংলাদেশ। হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন লিটন ও তামিম। জবাবে খেলতে নেমে ৪১ ওভার ৩ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত। দলের হয়ে সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৩ রান করেছেন কোহলি। বাংলাদেশের পক্ষে দুটি উইকেট নিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
২৫৭ রানের টার্গেটে ভারতের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। নিষ্প্রাণ উইকেটে নাসুম-শরীফুলদের কচু কাটা করে প্রথম দশ ওভারেই ৬৩ রান তুলে ফেলে রোহিত শর্মা ও শুভমান গিলের ওপেনিং জুটি। এই বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক রোহিত অবশ্য বাংলাদেশের বিপক্ষে ৫০ করতে পারেননি। হাসান মাহমুদের শর্ট বলে ৪৮ রানে ডিপ স্কয়ারে তাওহিদ হৃদয়ের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। এরপর শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি মিলে ভারতকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান।
ডেঙ্গুর কারণে বিশ্বকাপের প্রথম দুটি ম্যাচে না থাকা শুভমান গিল পেলেন ফিফটির দেখা। শরীফুলের বলে অফ সাইড থেকে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন তিনি। তবে ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ২০তম ওভারে এই ওপেনারকে ফিরিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। যেখানে বড় কৃতিত্ব আছে মাহমুদউল্লাহর। ডিপ মিড উইকেটে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়েছেন তিনি। সাজঘরে ফেরার আগে গিলের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৫ বলে ৫৩ রান।
এরপর কোহলির সাথে যোগ দেন শ্রেয়াস আইয়ার। তবে বেশিক্ষন ক্রিজে থিতু হতে পারেননি শ্রেয়াস। ১৯ রানে মিরাজের দ্বিতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। বাংলাদেশের সর্বশেষ সাফল্য অতটুকুই। এরপর বাকি ম্যাচজুড়ে শুধুই কোহলি শো। দুর্দান্ত এক শতক হাঁকিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়ান এই তারকা ব্যাটার। এক সময় মনে হচ্ছিল তার শতক হাতছাড়া হয়ে যাবে কিন্তু ঠিকই শতক নিয়েই মাঠ ছাড়েন ক্রিকেটের সেরা এই ব্যাটার। তিন অঙ্ক ছুঁতে সবমিলিয়ে খরচ করেছেন ৯৭ বল। শেষ পর্যন্ত তার অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ৫১ বল হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ভারত।
এর আগে টস জিতে পুনের ব্যাটিং বান্ধব উইকেট ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। ইনজুরিতে সাকিব আল হাসান না থাকায় টপ অর্ডারের ওপর প্রত্যাশার চাপ বাড়ে। ওই চাপ দারুণভাবে সামলান তরুণ তানজিদ তামিম ও লিটন দাস। তারা ৯৩ রানের জুটি দেন। তানজিদ ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করেই আউট হন। ৪৩ বলে পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় ৫১ রান করেন।
পরের ৪০ রানে আরও তিন উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ। ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান নাজমুল শান্ত (৮) ও মেহেদী মিরাজ (৩)। দল যে লিটন দাসে আশা দেখছিল তিনি ৮২ বলে সাতটি চারের শটে ৬৬ রান করে আউট হন। এরপর দলকে জুটি দেওয়ার চেষ্টা করে আউট হন তাওহিদ হৃদয়। তিনি ৩৫ বল খেলে মাত্র ১৬ রান করেন। সেট হওয়া মুশফিক ৪৬ বলে ৩৬ ও মাহমুদউল্লাহ ৩৬ বল খেলে তিনটি করে চার ও ছক্কায় ৪৬ রান করলে ৮ উইকেটে ২৫৬ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ।