প্রকাশ্যে যুবলীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

কোটচাঁদপুরে এমপি-মেয়র গ্রুপের দ্বন্দ্ব

প্রকাশ্যে যুবলীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা
নিহত আক্তার ও জীবন

প্রথম নিউজ,ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর শহরের চৌগাছা বাসস্ট্যান্ডে বসা নতুন হাটের টোল আদায়কে কেন্দ্র করে শ্রমিকলীগ ও যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে প্রকাশ্যে আক্তার হোসেন (২২) ও জীবন মিয়া (২১) নামে দুই যুবলীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। তাদেরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ সময় সোহাগ ও সাব্বির নামে দুই যুবক গুরুতর আহত হন। নিহত জীবন কোটচাঁদপুর শহরের তালমিল পাড়ার ফিরোজ হোসেনের ছেলে ও আক্তার হোসেন একই উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের আবু তালেবের ছেলে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় এমপি ও মেয়র গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষে মেয়র গ্রুপের দুই কর্মী নিহত হন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চৌগাছা বাসস্ট্যান্ডের ওই কাঁচা বাজারটি এমপি গ্রুপের পরিচয় দিয়ে জাতীয় পরিবহন শ্রমিকলীগের আশরাফুল, আমিরুল, সোহাগ ও মিঠু নিয়ন্ত্রণ করতো। নতুন বছরে মালিকানা পরিবর্তন হয়ে নতুন একজন হাটটির ইজারা পান। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র গ্রুপের ডন ও হাসানের সমর্থকরা সেখানে টোল আদায় করতে যায়। বাজারে জাতীয় পরিবহন শ্রমিকলীগের অফিসেই ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অপেক্ষা করছিল প্রতিপক্ষ গ্রুপ।

ডন ও হাসানের সমর্থকরা বাজারে ঢুকে টোল আদায় করার সময় কথিত এমপি গ্রুপের পরিচয় দিয়ে জাতীয় পরিবহন শ্রমিকলীগের আশরাফুল, আমিরুল, সোহাগ ও মিঠু ডাসা ও রামদা দিয়ে হামলা করে। রমজান মাসের পবিত্রতা ও বাংলা নতুন বছরের উৎসবকে ম্লান করে দিয়ে উভয় গ্রুপ ধারালো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দুই পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় কোটচাঁদপুরের চৌগাছা বাসস্ট্যান্ড রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। অভিযোগ পাওয়া গেছে, জাতীয় পরিবহন শ্রমিকলীগের নাম ভাঙিয়ে সলেমানপুর গ্রামের তেতুলতলা পাড়ার আশরাফুল, আমিরুল, সোহাগ ও মিঠু এহেন কোন কাজ নেই তারা করেন না। তাদের সমাজ বিরোধী কর্মকাণ্ডে কোটচাঁদপুরের মানুষ অতিষ্ঠ। এই গ্রুপটি মাদকসেবী ও মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। কোটচাঁদপুর থানায় আশরাফুল ও আমিরুলের নামে হত্যা ও ডাকাতি মামলা রয়েছে।

জানা গেছে আশরাফুল ও আমিরুল গ্রুপটি বর্তমান মেয়রের ছোট ভাই শাহিনের গ্রুপ করতো। কিন্তু গত বছর আম বাজারের ইজারা ও বাগান দখল নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হলে আশরাফুলকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনার পর থেকে ওই সন্ত্রাসী গ্রুপটি মেয়রের পক্ষ ত্যাগ করে স্থানীয় এমপির নাম ভাঙিয়ে চলে। কোটচাঁদপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ইসরাত জেরিন জানান, সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই নিহত হন জীবন। তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল। তিনি আরো জানান, আহতদের মধ্যে আক্তার, সোহাগ ও সাব্বিরের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

যশোর হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যান আক্তার হোসেন। বিষয়টি নিয়ে কোটচাঁদপুর সার্কেকেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাইমেনুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে সরকার সমর্থক দুই গ্রুপের মধ্যে বাজারের টোল আদায় নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে দুইজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আনা হয়েছে। কোটচাঁদপুর থানার ওসি মো. মঈন উদ্দিন জানান, টোল আদায়কে কেন্দ্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ প্রকৃত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে। 

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom