নির্বাচন কতটা অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য, বিচার করবে জনগণ
এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, থাইল্যান্ড, ইরাক, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপের পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: সদ্য অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটা অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্য তা দেশের জনগণ ও গণমাধ্যম নির্ধারণ করবে বলে মনে করছেন ৯টি দেশের সমন্বয়ে গঠিত পর্যবেক্ষক দল। সোমবার (৮ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশগুলোর নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। এ সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, থাইল্যান্ড, ইরাক, ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল ও মালদ্বীপের পর্যবেক্ষক দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পর্যবেক্ষক দলের পক্ষে শ্রীলঙ্কা সংসদ সদস্য সৈয়দ আলী জহির মাওলানা ও কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর বক্তব্য রাখেন।
পর্যবেক্ষক দলটি বলছে, তারা ঢাকার ৩০টি পোলিংবুথ পরিদর্শন করেছেন। সেখানে যথেষ্ট ভোটার উপস্থিতি ছিল। কিছু রাজনৈতিক দল ভোটে অংশ নেয়নি, তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ পাওয়া গেছে। তবে সব সময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাকে উৎসাহিত করে তারা।
নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে পর্যবেক্ষক টিমের সদস্য ও কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশিস সুর বলেন, এটা বাংলাদেশের জনগণ, দেশের এতগুলো গণমাধ্যম আছে তারা যথেষ্ট সজাগ। তাদের প্রতিবেদনে বোঝা যাবে। গণমাধ্যমগুলো মাঠপর্যায়ে অনেক বেশি কাজ করছে। অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য কি না এটা রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, জনগণ ও বাংলাদেশের গণমাধ্যম বলবে। এটা নিয়ে আমাদের বক্তব্য দেওয়ার বিষয় নয়। আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে এখানে এসেছি।
তিনি বলেন, অর্থবহ ও গ্রহণযোগ্যতার সংজ্ঞা কি? আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা এসে কয়েকটি বুথে গিয়ে এতো বড় বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবে না। নির্বাচন মানুষের সঙ্গে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, এটাই শেষ কথা। আমরা মনে করি বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলে আসার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে সারা পৃথিবী পর্যবেক্ষক ও বিদেশি গণমাধ্যমের মাধ্যমে একটা বার্তা পেয়েছে, তারা কি দেখেছে? পর্যবেক্ষকরা আইন ও বিধি অনুসারে নির্বাচন প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষক করেছে।
অন্যদিকে জহির মাওলানা বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আমরা সব সময়ই প্রত্যাশা করি সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনে হবে। আমরা লক্ষ্য করেছি কিছু দল নির্বাচন অংশগ্রহণ করেনি। তবে আমরা সব দলের অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করি। সব রাজনৈতিক দলগুলোরই দায়িত্ব নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণের সময় আমরা প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং ব্যক্তি, তরুণ, পুরুষ ও নারী ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা দেখেছি কোথাও ১১ শতাংশ আবার কোথাও ৪৫ থেকে ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। দিনশেষে ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে। গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে পর্যবেক্ষক হিসেবে মন্তব্য করতে পারব না। আমরা নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করতে পারি। সেখানে নিরপেক্ষতা ও সুষ্ঠুর প্রমাণ পেয়েছি।
এর আগে সকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও জাপানের পর্যবেক্ষক দল সদ্য অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলে মন্তব্য করেন। ওই পর্যবেক্ষক দলের নেতৃত্ব দেন মার্কিন সাবেক কংগ্রেসম্যান মি. জিম বেটস, নির্বাচন পর্যবেক্ষক যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক বিশ্লেষক টেরি এল ইজলে ও আমেরিকার দ্য হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের (এনএসসি) চিফ অব স্টাফ আলেকজান্ডার বার্টন গ্রে পর্যবেক্ষক দলের নেতৃত্ব দেন। ওই তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার ২০টি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এবারের নির্বাচনে মোট ১৭২টি দেশের পর্যবেক্ষক টিম অংশ নেয় বলে জানা গেছে।