নতুন মেয়র বরণে প্রস্তুতি শেষ, নগরজুড়ে উচ্ছ্বাস

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন

নতুন মেয়র বরণে প্রস্তুতি শেষ, নগরজুড়ে উচ্ছ্বাস

প্রথম নিউজ, অনলাইন: আইনি জটিলতা শেষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে বসতে যাচ্ছেন বিএনপির ত্যাগী নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন। আওয়ামী লীগের শাসনামলে মামলা, হামলা, গুন-খুনের মধ্যেও টানা ১৫ বছর দলীয় আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতে রাজপথ দখলে রেখেছেন এই নেতা। আগামী ৩ নভেম্বর ঢাকায় তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। এর মধ্য দিয়ে নতুন যাত্রা ও দায়িত্ব শুরু হবে। শপথের একদিন পর মঙ্গলবার তিনি যাবেন চট্টগ্রামে।

নতুন মেয়রকে বরণে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরী। নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে বিভিন্ন সড়ক। ডা. শাহাদাতের মেয়রের দায়িত্ব পাওয়া নিয়ে উচ্ছ্বসিত নগরবাসীও। নগরপিতা পেশায় চিকিৎসক, তাই সবার প্রত্যাশা পরম সেবার। শুশ্রূষার মাধ্যমে রোগীকে যেভাবে সারিয়ে তুলেন, তেমন করেই সারিয়ে তুলবেন রুগ্ ন চসিককেও।

চসিক সূত্রে জানা যায়, আগামী ৫ নভেম্বর সকালে ঢাকা থেকে রেলপথে রওয়ানা হবেন ডা. শাহাদাত। দুপুরে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে দলীয় নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানাবেন। পরে হযরত আমানত শাহ ও হযরত বদর শাহ (রহ.)-এর মাজার জেয়ারত করবেন। এরপর সিটি করপোরেশনের নতুন ভবনে (লালদিঘীর পাড়) বৈঠক করাসহ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। বিকেলে সিটি করপোরেশন কার্যালয়ে যাবেন। সেখানে খতমে কোরআন ও খতমে গাউছিয়া শেষে মোনাজাতে অংশ নেবেন। ৬ নভেম্বর থেকে নিয়মিত অফিস করবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে, নতুন মেয়রের আগমন উপলক্ষে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হয়েছে। তার কক্ষে বিছানো হয়েছে নতুন ফ্লোরমেট। বসানো হয়েছে নতুন চেয়ার, বার্নিশ করা হয়েছে আসবাবপত্র। ইন্টেরিয়র ডিজাইনেও আনা হয়েছে বেশ কিছু পরিবর্তন। সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মেয়র কার্যালয়ে এলে বরণের আনুষ্ঠানিকতা সারব।

এক কর্মকর্তা জানান, মেয়র না থাকায় সবকিছু ছিল ছন্দহীন। এখন কাজে গতি ফিরবে। ডা. শাহাদাত হোসেনের একান্ত সচিব মারুফুল হক চৌধুরী বলেন, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের জন্য অতিথির তালিকা জমা দিয়েছি। পরিবারের সদস্য, জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা এবং ঘনিষ্টজনরাও থাকবেন।

নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের বাসা নগরের বাদশা মিয়া সড়কে। আদালতের রায়ে মেয়র ঘোষণার পরই খানাখন্দে ভরা সেই সড়ক সংস্কারে নেমে পড়ে চসিকের প্রকৌশল বিভাগ। করা হয় কার্পেটিংও। এছাড়া নিয়মিত জ্বলছে সড়কবাতি। ডা. শাহাদাতকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার ফেস্টুনে ভরে গেছে নগরের টাইগারপাস সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কার্যালয় সড়ক। দলীয় নেতাকর্মীরা সেগুলো লাগিয়েছেন বলে জানা গেছে।

মহানগর যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মুহাম্মাদ সাগির কালবেলাকে বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারবিরোধী রাজপথের গণআন্দোলন-সংগ্রাম করতে গিয়ে বহুবার জেল-জুলুম নির্যাতনের শিকার হন গণমানুষের নেতা ডা. শাহাদাত হোসেন। সরকার পতনের দুদিন আগেও হত্যার উদ্দেশে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। পার্কিংয়ে থাকা সব গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। শপথগ্রহণ শেষে তার আগমন উপলক্ষে চট্টগ্রামবাসী ও দলের নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। নতুন মেয়রকে বরণে প্রস্তুত চসিক ঠিকাদার সমিতিও। সমিতির উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ টিটু বলেন, আগে চসিকে কাজ পেতে অসুবিধা হতো। ব্যাপকভাবে দলীয়করণ ছিল। আশা করছি, আর কোনো অনিয়ম আর থাকবে না।

এক ঠিকাদার বলেন, এ শহরবাসী ভালো করেই জানেন ডা. শাহাদাত কেমন মানুষ। দলের মতো করে চসিককেও আগলে রাখবেন।