ঢাবিতে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ৫

শনিবার (৬ মে) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হাইকোর্ট এলাকায় হামলার এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঢাবিতে ছাত্রদলের ওপর ছাত্রলীগের হামলা, আহত ৫

প্রথম নিউজ, ঢাবি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে ফেরার পথে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। এতে ছাত্রদলের অন্তত পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আজ শনিবার (৬ মে) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন হাইকোর্ট এলাকায় হামলার এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীদের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত 'খ' ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ছিল। যেটি সকাল ১১টায় শুরু হয়ে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের অন্য সাতটি বিভাগীয় শহরে অনুষ্ঠিত হয়।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ফুল ও কলম দিয়ে বরণ করতে আসে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল। ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগের শক্ত প্রতিরোধের মুখে থাকা সংগঠনটির নেতাকর্মীদের ধারণা ছিল- পরীক্ষার দিনে হয়তো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে না। তবে প্রথমে ছাত্রলীগের বাধার মুখে কলাভবন থেকে কর্মসূচি সরিয়ে কার্জন হলে চলে যেতে হয় ছাত্রদলকে। পরে সেখানে দ্রুত কর্মসূচি শেষ করে চলে যাওয়ার সময় হাইকোর্ট মোড়ে পৌঁছালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন ছাত্রদলের নেতারা।

এতে ঢাবি ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মুমিনুল ইসলাম জিসান, জহুরুল হক ছাত্রদল কর্মী আব্দুল্লাহ আল সাব্বির, বঙ্গবন্ধু হলের সাংগঠনিক সম্পাদক অনিক, রাজু আহমেদসহ বেশ কয়েকজন আহত  হয়েছেন। এর মধ্যে আব্দুল্লাহ আল সাব্বির মাথায় গুরুতর চোট পেয়েছেন। তাকে রাজধানীর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় দুইজনকে আটক করা হয়েছে বলেও জানায় ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা কর্মসূচি দ্রুত শেষ করে বের হয়ে চলে আসছিলাম। হাইকোর্ট মোড়ে পৌঁছালে হুট করে তারা বাইক নিয়ে চলে আসে।  কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে একজন গুরুতর সহ মোট ৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। হামলার পর সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। আহতরা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে আছে।

পরীক্ষার দিন সকাল থেকে ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীদের সহায়তার পাশাপাশি বাইক শোডাউনসহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি দেখা যায়। সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল করিম শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন। হামলার ব্যাপারে ঢাবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সময় নবীনদের শুভেচ্ছা জানাতে ফুল ও কলমের বিরুদ্ধে যে ছাত্রসংগঠন সশস্ত্র হামলা চালায় তারা আদৌ ছাত্রসংগঠন কি না তা নিয়ে সন্দেহ আছে। ছাত্রলীগের এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

তবে হামলায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি মাজহারুল করিম শয়ন বলেন, ছাত্রলীগ নেতা কর্মীরা সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের সেবা-প্রদানে ব্যস্ত ছিল। এ ধরনের কোনো হামলায় আমাদের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকার সুযোগ নেই। আমরা শুনেছি ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফলে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। ভবিষ্যতের ছাত্রদল ক্যাম্পাসে কর্মসূচি পালন করতে আসতে পারবে কিনা এমন প্রশ্নে স্পষ্টভাবে কিছু না জানিয়ে তিনি বলেন, যার যার কর্মসূচি সে সে পালন করবে।