ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ পথচারী
গতকাল রোববার দুপুর ১টার দিকে শহরের ইটেরপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রথম নিউজ, মাদারীপুর: মাদারীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুইপক্ষের সংঘর্ষে এক পথচারী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত আটজন। প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। গতকাল রোববার দুপুর ১টার দিকে শহরের ইটেরপুল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ সোহাগ তালুকদার (৩০) শহরের হরিকুমারিয়া এলাকার দেলোয়ার তালুকদারের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। আহত পুলিশ সদস্য রাজীবকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজীব সদর মডেল থানার ওসির দেহরক্ষী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে মাদারীপুর আদালতে মামলার কাজে যান ছাত্রলীগ নেতা সজীব সরদার ও সুমন কাজী গ্রুপের লোকজন। দুপক্ষ আদালতে মুখোমুখি হওয়ায় তাদের মধ্যে প্রথমে তর্কাতর্কি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শহরের ইটেরপুল এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। ঘণ্টাব্যাপী চলে সংঘর্ষ। এ সময় বেশ কয়েকটি হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে যাত্রী ও পথচারীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। খবর পেয়ে পুলিশ ফাঁকাগুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে পথচারী ইজিবাইক চালক সোহাগ তালুকদার গুলিবিদ্ধসহ আহত হন কমপক্ষে আটজন। আহতদের উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে জেলা সদর হাসপাতালে। তাদের মধ্যে রাজীব নামে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।
সোহাগের স্ত্রী মাকসুদা বেগম বলেন, ছেলেকে স্কুল থেকে আনতে আমার স্বামী বাসা থেকে বের হন। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান। পরে পুলিশের গুলিতে তিনি আহত হন। যারা প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় তাদের কিছুই বলেনি পুলিশ। অথচ পথচারীদের ওপর এমন গুলি করেছে- যার বিচার হওয়া উচিত।
প্রত্যক্ষদর্শী এক দোকানদার জানান, দুপক্ষ বোমা ফাটিয়ে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে জড়ায়। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভয়ে দোকান বন্ধ করে রাখি। তাদের হাতে বড় বড় অস্ত্র ছিল, কাছাকাছি থেকেও পুলিশ অসহায় ছিল।
জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াদ মাহমুদ জানান, হাসপাতালে কয়েকজন ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্য ও এক ইজিবাইক চালকও রয়েছেন। ইজিবাইক চালকের মাথায় গুলি রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সদর মডেল থানার ওসি এএইচএম সালাউদ্দিন জানান, আধিপত্যের জেরেই এ সংঘর্ষের ঘটনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে। সংঘর্ষে ৭-৮ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এক পুলিশ সদস্যও রয়েছেন। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
অভিযুক্ত সজীব সরদার মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আর সুমন কাজী সহ-সভাপতি। সজীব মাদারীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শাজাহান খানের অনুসারী। অপরদিকে সুমন ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন নাছিমের সমর্থক।