ইসি সরকারের দাস হিসেবে কাজ করছেন: গণতন্ত্র মঞ্চ

র‌বিবার (৩১ ডি‌সেম্বর) এক দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংযোগ করেন তারা।

ইসি সরকারের দাস হিসেবে কাজ করছেন: গণতন্ত্র মঞ্চ

প্রথম নিউজ, ঢাকা: প্রধান নির্বাচন কমিশনার ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় কথা বলছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সরকারের দাস হিসেবে কাজ করছেন ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রে‌ছেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা। র‌বিবার (৩১ ডি‌সেম্বর) এক দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণসংযোগ করেন তারা।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী ব‌লে‌ন, আমরা গতকাল নির্বাচন কমিশনকে লাল কার্ড দেখিয়েছি। গতকালকের প্রধান নির্বাচন কমিশন বলেছেন বিএনপি নাকি নির্বাচন প্রতিহত করবে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় কথা বলছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের দাস হিসেবে কাজ করছেন। 

তি‌নি ব‌লেন, গত ২৮ তারিখে যে ঘটনা ঘটছে তা আওয়ামী লীগের পরিকল্পিত কারণ ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন ২৮ তারিখে হেফাজতের যে অবস্থা হবে সেই অবস্থা বিএনপির হবে তার এই কথা থেকেই সব বোঝা যায়। ওবায়দুল কাদেরের এই সমস্ত পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন হতে দেব না। 

তি‌নি আরও ব‌লেন, আমাদের গণজাগরণকে চক্রান্তের মাধ্যমে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনার যত ষড়যন্ত্র করুন এবার আপনাদের ছাড় হবে না। এই নির্বাচন বন্ধ করে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। 

কমরেড সাইফুল হক বলেন, এদেশের জনগণের উপর বুকের উপর দাঁড়িয়ে অবৈধভাবে এই সরকার ক্ষমতায় বসে আছে। গোটা রাষ্ট্রের প্রশাসনকে তারা ব্যবহার করছে। দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে তারা ব্যবহার করছেন। অনেক ভোটারদেরকে তিনদিনের যে মজুরির সেরকম পরিমাণ টাকা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা ভোট ভোট খেলা শুরু করেছে। 

তিনি বলেন, সরকারকে বলেছি এই খেলা এবার জমবে না। সামাজিক সুরক্ষার যে কার্ডগুলো আছে সেগুলো আজকে তারা ভোট দেওয়ার শর্তে হাতিয়ে নিচ্ছে। যদি তারা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট না দেয় তাহলে তাদের সেই কার্ডগুলো ফেরত দেওয়া হবে না। বিরোধী দলীয় সকল দলকে মোকাবেলা করার সকল ক্ষমতা দ্বারা হারিয়ে ফেলেছে। 

তিনি আরও বলেন, গতকালকে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির লোকজন আওয়ামী লীগের নেতাদের হত্যা করার পরিকল্পনা করছে। নতুন নতুন নাটক করে একটা ক্রাকডাউন করতে চাই বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের উপর। যে নির্বাচন জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে সে নির্বাচনে সহিংসতার কোন প্রয়োজন নাই। ২০২৪ সালের শুরুতেই এই সরকারকে বিদায় দিয়ে নতুন মুক্তির বার্তা নিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে। 

শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন বলেন, আজকে তামাশা নির্বাচন দেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। বিদেশি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় এটাকে তামাশা নির্বাচন হিসাবে আখ্যা দিয়েছে। গতকালকের লাল কাড প্রদর্শনের মাধ্যমে আমরা এই নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছি। আপনারা যদি আপনাদের অবস্থান থেকে সরে না আসেন তাহলে এর জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা তাই করব। এদেশের শাসনব্যবস্থাকে বাংলাদেশের জনগণ মানে না। 

শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী, ফ্যাসিস প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্র হত্যাকারী প্রধানমন্ত্রী, ভোটের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া প্রধানমন্ত্রীকে আমরা বলব এখনো সময় আছে সংবিধানে অনুযায়ী আপনি সংসদ ভেঙে দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করুন। এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী কে? এই ভোট চোর প্রধানমন্ত্রীকে? আমরা অনুরোধ করব এই নির্বাচনী তফসিল বাতিল করুন। এখনো সময় আছে সবাই মিলে বসে অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আর যদি না করেন তাহলে কি করতে হবে এটা আমরা জানি, আমরা সেটাই করব। যেকোনো বিনিময়ে আমরা নির্বাচনকে প্রতিহত করব। 

সভাপতির বক্তব্যে এ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম বলেন, আজকে আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা, ঈগল মার্কা, ট্রাক মার্কা সবই হলো আওয়ামী লীগের কাজ। তারা সবাই নিজেদের মধ্যে নিজেদের নিয়ে মারামারি করার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের প্রকৃত নির্বাচনে যে ব্যবস্থা ছিল সেই ব্যবস্থাটাকে তারা ধ্বংস করে দিচ্ছে। বাংলাদেশকে এই সরকার তাদের নিজের স্বর্গরাজ্য হিসেবে তৈরি করছে। ২০২৪ সাল আমাদেরকে লড়াই দিয়ে শুরু করতে হচ্ছে। ২০২৪ সাল যেন আমরা বিজয়ের মাধ্যমে সমাপ্ত করতে পারি এই আহ্বান আপনাদের সবাইকে জানাচ্ছি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এর প্রধান সমন্বয়কারী এ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুমের সভাপ‌তি‌ত্বে সমা‌বে‌শে আরও বক্তব‌্য রা‌খেন জেএসডি সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিপ্লবী ওয়াকার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক। ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার।