আমতলীতে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে শতকরা ৫০ ভাগ গরু , খামারিরা বিপাকে
গতকাল সোমবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্তৃপক্ষ এ রোগে আক্রান্ত ৩৫টি গরু চিকিৎসা করে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন।
প্রথম নিউজ, জেলা প্রতিনিধি,বরগুনা: আমতলী উপজেলার শতকরা ৫০ ভাগ গরু লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগে আক্রান্ত। গত তিন মাসে অন্তত দুই শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের গরুর চিকিৎসা দিতে হিমশীম খেতে হচ্ছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ে এ রোগের ভ্যাকসিন না থাকায় মহাবিপাকে পরেছে খামারি ও কৃষকরা। দ্রুত সরকারি ভাবে ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন খামারিরা।
এদিকে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ ছড়িয়ে পরায় পশুর হাটে গরু ক্রয়-বিক্রয়ে ধ্বস নেমেছে। জানা গেছে, গত মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় আমতলী উপজেলায় গরুর লাম্পি স্কিন (এলএসডি) রোগ দেখা দেয়। মশা-মাছি বাহিত এ রোগ দ্রুত উপজেলার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। উপজেলার অন্তত ৫০ ভাগ গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানান প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক। গত মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে অন্তত দুই শতাধিক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। বর্তমানে মহামারি আকারে ধারণ করেছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতর ২ হাজার ৫০০ লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু চিকিৎসা দিয়েছেন বলে জানান উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা। কিন্তু
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতরে এ রোগের ভ্যাকসিন নেই। ভ্যাকসিন না থাকায় গরুর খামারি ও কৃষকরা বিপাকে পরেছে। খামারিদের ফার্মেসি থেকে
বিভিন্ন কোম্পানির অসুধ কিনতে হচ্ছে। এতে মহাবিপাকে পরছেন তারা। খামারিরা জানান, গরুর শরীরের গোটা গোটা উঠে প্রচন্ড জ্বর হয়। ওই গোটা
ফেটে প্রচুর পরিমাণে পঁচা রক্ত বের হয়। খামারিরা দ্রুত সরকারি ভাবে ভ্যাকসিন সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে লাম্পি স্কিন রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পরায় মানুষ আতঙ্কে কোরবানির গরু কিনছেন না। এতে বাজারে গরু ক্রয়- বিক্রয়ে ধ্বস নেমেছে। গতকাল সোমবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্তৃপক্ষ এ রোগে আক্রান্ত ৩৫টি গরু চিকিৎসা করে ব্যবস্থাপত্র দিয়েছেন। খামারি দেলোয়ার হোসেন বলেন, খামারে সাতটি গরুর তিনটিই লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে গরু এনে ব্যবস্থাপত্র নিয়েছি। কিন্তু প্রাণী সম্পদ অফিসে এ রোগের কোনো ভ্যাকসিন নেই। তাই ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে।
পুর্ব চিলা গ্রামের হেলাল হাওলাদার বলেন, গত শনিবার আমার একটি বাচ্চা গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। খামারি ছত্তার ফকির বলেন, লাখ টাকা দামের একটি ষাড় গরুর শরীরে গোটা উঠে মারা গেছে। আরো দুটি আক্রান্ত হয়েছে। আমতলী উপজেলা উপ-সহকারী প্রাণী সম্পদ কর্মকতা আবুল বাশার বলেন, গরুর চিকিৎসা দিতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। গত তিন মাসে লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত ২ হাজার ৫০০ গরু চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ টি গরুর হাসপাতালে এনে চিকিৎসা নিচ্ছে।
আমতলী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক বলেন, উপজেলার অন্তত ৫০ শতাংশ গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু মারাযাওয়ার সংখ্যা কম। প্রাণী সম্পদ অধিদফতর এ রোগের ভ্যাকসিন উৎপাদন করেনি। তিনি আরো বলেন, দেশীয় ও শাহীওয়াল (লাল গরু) এ রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।