আবারও বন্ধুত্বের নিশ্চয়তা নিয়ে ইউক্রেনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

 আবারও বন্ধুত্বের নিশ্চয়তা নিয়ে ইউক্রেনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : দুই দিন আগে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১৫ রুশ নাগরিক নিহত হওয়ার পর ইউক্রেনে হামলার মাত্রা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে রাশিয়া। বিশেষ করে, ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব অংশের খারকিভ অঞ্চলজুড়ে বৃষ্টির মতো বোমা ও বিমান হামলা চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই অঘোষিত সফরে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।

ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, রাশিয়ার এমন হামলার বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র যে ইউক্রেনকে ভুলে যায়নি ও শিগগিরই জেলেনস্কিকে অতি প্রয়োজনীয় সব অস্ত্র সরবরাহ করা হবে, তা নিশ্চিত করতেই কিয়েভে উড়ে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সোমবার (১৩ মে) রাতে পোল্যান্ড থেকে ট্রেনে করে কিয়েভে পৌঁছান তিনি। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এই নিয়ে ৪ বার ইউক্রেন সফর করলেন ব্লিঙ্কেন।

নাম না প্রকাশের শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, প্রথমত এই সফরের লক্ষ্য হলো- অতি সংকটময় পরিস্থিতিতে থাকা ইউক্রেনের জনগণকে এটা আশ্বস্ত করা যে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশে আছে। সপ্তাহখানেক আগেই ইউক্রেনের জন্য ৬ হজার ১০০ কোটি ডলারের আর্থিক সহযোগিতার অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন কংগ্রেসে (সংসদ)।

‘দ্বিতীয়ত, এই সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা কীভাবে পৌঁছাবে, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে ও যুদ্ধক্ষেত্রে শক্তিশালি অবস্থান ফিরে পেতে কাজে লাগাতে হবে, সে সম্পর্কে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করবেন।’

সোমবার (১৩ মে) মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয় হোয়াইট হাউজ জানিয়েছিল, ইউক্রেনে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সব অস্ত্র পাঠাতে সবকিছু করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, শিগগিরই ইউক্রেনের জন্য নতুন অস্ত্রের প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।

সম্প্রতি ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নতুন করে স্থল অভিযান শুরু করেছে রাশিয়া। নতুন স্থল আক্রমণ থেকে বাঁচতে এই অঞ্চলের হাজার হাজার বেসামরিক বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, নতুন এই অভিযানে খারকিভ অঞ্চলের বিভিন্ন শহর ও গ্রাম লক্ষ্য করে কামানসহ মর্টার দিয়ে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।

তীব্র এ লড়াইয়ের মুখে খারকিভ অঞ্চলে অবস্থান নেওয়া ইউক্রেনীয় সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রাম রাশিয়ার দখলে চলে গেছে।

ইউক্রেনের সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে যে রাশিয়া কৌশলগত সাফল্য অর্জন করছে। তবে জেলেনস্কির দাবি, খারকিভে শক্তিবৃদ্ধির জন্য আরও সেনা পাঠানো হয়েছে ও পাল্টা আক্রমণ চলছে।

ইউক্রেনের নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান অলেক্সান্ডার লিটভিনেনকো বলেছেন, খারকিভ অঞ্চলে নতুন অভিযানের জন্য মস্কো তার সেনা মোতায়েন ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত অন্তত ৫০,০০০ রুশ সেনা ওই অঞ্চলে যুদ্ধ করছেন। রাশিয়া আরও ৩০ হাজার সেনা পাঠাবে বলে জানা গেছে। তবে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার (২০ মাইল) দূরের খারকিভ শহরে হামলার কোনো আশঙ্কা এখন পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি না।