সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশ ঘিরে চাঙ্গা বিএনপি নেতাকর্মীরা

বিএনপি’র সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতারাও সমাবেশের প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন।

সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশ ঘিরে চাঙ্গা বিএনপি নেতাকর্মীরা

প্রথম নিউজ, সিলেট: সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশের আয়োজন চলছে। আগামীকাল সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ সমাবেশ তরুণদের নিয়ে। এজন্য সমাবেশের আয়োজক যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। তরুণদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করতে আহূত সমাবেশকে ঘিরে সিলেটে ফের চাঙ্গা নেতাকর্মীরা। শুধু সহযোগী ৩টি সংগঠনের নেতাকর্মীরাই নয়, বিএনপি’র সিলেট বিভাগের সিনিয়র নেতারাও এ সমাবেশকে সফল করতে মাঠে নেমেছেন। 

বিএনপি’র সিনিয়র নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতারাও সমাবেশের প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। চলছে সাংগঠনিকভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতাও। আয়োজক ৩টি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সিলেটে অবস্থান করে নিজ নিজ সাংগঠনিক দক্ষতার প্রমাণ দেখাতে চষে বেড়াচ্ছে বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলা ও উপজেলা। বিশেষ করে সিলেট ছাড়াও অপর ৩ জেলা মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী সিলেটের এ সমাবেশে যোগ দেবেন। 

এরমধ্যে বেশির ভাগ নেতাকর্মী আজ সিলেট এসে পৌঁছাতে পারেন। সেজন্য তাদের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান নেতারা। তারা জানান, আজই ঢাকা থেকে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা সিলেট আসবেন। কয়েক দিন ধরে সিলেটে অবস্থান করছেন সমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু। ইতিমধ্যে সিলেট বিভাগ বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ এবং সিলেট জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সভা করেছেন। তার বৈঠকের পর থেকে সিলেট বিএনপি’র সিনিয়র নেতারাও সমাবেশ সফল করতে মাঠে নামেন। 

বৃহস্পতিবার তিনি জেলা বিএনপি ও শুক্রবার মহানগর বিএনপি’র সঙ্গে মতবিনিময় করেন। যুবদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, দেশের তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে পারে না। তাই এই ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ঘরে ফিরে যাবে না। দেশের তরুণরা বিএনপি’র এ কর্মসূচির সঙ্গে একাত্ম থাকবে বলে জানান তিনি। এদিকে আজ থেকে সিলেটের আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে মঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। 

সমাবেশের পূর্বেই শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছেন যুবদলের নেতারা। তারা সিলেটের এই আয়োজনে সার্বিক দেখভাল করছেন। জেলা যুবদল সভাপতি এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন মানবজমিনকে জানান, তারণ্যের সমাবেশ ভিন্ন আঙ্গিকে অনুষ্ঠিত হবে। এখানে চাকরি না পাওয়া বেকার যুবক, মামলায় জর্জরিত তরুণ, আহত হওয়া তরুণ তাদের বক্তব্য তুলে ধরবেন। সার্বিক প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দল সিলেট জেলার আহ্বায়ক আব্দুল আহাদ খান জামাল জানান, তারুণ্যের সমাবেশে যে পুলিশের বাধা নেই সেটি বলা যাবে না। 

সমাবেশের প্রচারণাকালে ফেঞ্চুগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে আমরা পুলিশি বাধার মুখে পড়েছি। এবং বাধা ডিঙিয়েই আমরা সমাবেশের আয়োজন করছি। তিনি জানান, এই বাধা ডিঙ্গিয়েই সিলেট বিভাগ থেকে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসবেন। এবং সমাবেশ সফল করতে কয়েক দিন ধরে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতারাও সিলেটে অবস্থান করছেন বলে জানান তিনি। এদিকে, মূল দল বিএনপি’র নেতাকর্মীরাও সমাবেশকে কেন্দ্র করে মাঠে সক্রিয় হয়েছেন। সিলেট বিভাগে প্রতিদিনই তারা চালাচ্ছেন প্রচারণা। 

সিলেটে ইতিমধ্যে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রচারণা চালানো হয়েছে। জেলা বিএনপি’র সভাপতি আব্দুল কাইয়ূম চৌধুরী, মহানগর সভাপতি নাসিম হোসাইন, জেলার সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে আলাদা আলাদাভাবে বৈঠক, প্রচারণা চালানো হচ্ছে। 

সিলেটে অবস্থান করে তারণ্যের সমাবেশে সার্বিক প্রস্তুতি পর্যবেক্ষণ করছেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়ার হাসান জীবন। তিনি মানবজমিনকে জানান, বিভাগীয় সমাবেশেও বাধা ছিল। কিন্তু জনগণের স্রোত থামানো যায়নি। তারুণ্যের সমাবেশে বাধা-বিপত্তি থাকলেও আশা করি আগামী কালের সিলেট বিভাগের কর্মসূচিতে তারুণ্যের ঢল নামবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময় তরুণরা অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। চাকরি পাচ্ছে না, কেউ কেউ নানাভাবে আক্রান্ত। সমাবেশে তরুণদের কথা আমরা শুনবো। ফলে সিলেটের এই সমাবেশে তরুণরাসহ বিএনপি’র নেতাকর্মীরাও উপস্থিত থাকবেন।