সরকার যা করছে, তা জাতির জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে: মঈন খান
শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মঈন খান এ মন্তব্য করেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, সরকার যা করছে, তা শুধু আওয়ামী লীগের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্য অচিরেই মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মঈন খান এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ৩০ নভেম্বর-পরবর্তী রাজনীতির গতি-প্রকৃতি নিয়ে বাস্তবতা উন্মোচন করতে গেলে যে কঠিন সত্যিটি উল্লেখ করতে হচ্ছে— তা হলো, সরকার মনোনয়ন জমা দেওয়ার দিনটিকে তাদের নির্বাচনে বিজয়ের দিন বলে উল্লাস করছে। এটা যে তাদের জন্যে কত বড় ভ্রান্তিবিলাস, তা তারা আজ বুঝতে না পারলেও এই ভুলের জন্য জনতার আদালতে আওয়ামী লীগকে আগামীতে যে বিশাল মূল্য দিতে হবে, সেটা তারা আজ কল্পনাও করতে পারছে না।
তিনি বলেন, ক্ষমতার মোহে ও অর্থবিত্ত আহরণের লোভে অন্ধ হয়ে তারা দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে গেছে, যা শুধু আওয়ামী লীগের জন্য নয়, পুরো জাতির জন্যই অচিরেই মারাত্মক এক পরিণতি ডেকে আনবে। জনগণের ভোটাধিকারের বিষয়ে মঈন খান বলেন, জনগণের ভোটাধিকারকে চিরতরে হরণ করার সরকারের এই যে কাণ্ডজ্ঞানহীন চিন্তাধারা, যা বাংলাদেশেকে ৭ জানুয়ারি একটি নির্বাচনি সার্কাসের দিকে ধাবিত করছে, সেটা আজ শুধু দেশের ভেতরে নয়, বরং সারা বিশ্বের গণতন্ত্রকামী মননশীল মানুষের সামনে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একটি কলঙ্কময় ভাবচিত্র প্রতিস্থাপন করবে।
তিনি বলেন, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মধ্যে উচ্ছ্বাস কিংবা আগ্রহ কোনোটাই নেই। এটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট যে নির্বাচনের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে কোনো রূপ ভোট দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পূর্ণ নিঃশেষ হয়ে গেছে। কারণ নির্বাচনের ফলাফল ইতিমধ্যে নির্ধারিত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, মানুষের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রয়োজন বাংলাদেশে চিরতরে ফুরিয়ে গেছে। ক্ষমতার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে এই যে নির্বাচন খেলা, সেটির পরিণাম কখনোই জাতির জন্য মঙ্গলজনক হতে পারে না।
মঈন খান বলেন, বিএনপি একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য, জনগণের ভোটাধিকার পুনর্বহালের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলন চলতেই থাকবে, যতদিন না গণমানুষের এই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হয়। মঈন খান বলেন, ইতিমধ্যে দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল পাতানো নির্বাচনের তফসিল বর্জন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বও এই নির্বাচন নিয়ে আস্থাহীনতার প্রশ্ন তুলেছে। তারা যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিল, সরকার তা আমলেই নেয়নি। ফলে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই নির্বাচনে পর্যবেক্ষকও পাঠাচ্ছে না। কারণ তারা বুঝে গেছে, নির্বাচনের নামে এখানে কত বড় প্রহসন হতে যাচ্ছে।
মঈন খান বলেন, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় এ দেশে জনগণের আন্দোলন কখনোই বৃথা যায়নি, এবারও যাবে না। সরকার মনে করেছে, আগের মতো এবারও একতরফা একটি নির্বাচন করে স্বাচ্ছন্দ্যে ক্ষমতায় থাকবে, সেটা হওয়ার নয়। কেন না, এখন ২০১৪ বা ২০১৮ নয়।