সপ্তাহের শেয়ারবাজার: বাড়লো মূলধন, কমেছে সূচক-লেনদেন

ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে একশ কোটি টাকার ওপরে। অন্যদিকে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৩১ শতাংশের বেশি। আর ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমেছে দশমিক ৪১ শতাংশ।

সপ্তাহের শেয়ারবাজার: বাড়লো মূলধন, কমেছে সূচক-লেনদেন

প্রথম নিউজ, ঢাকা: গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে কমেছে তার প্রায় তিনগুণের। এরপরও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে। তবে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন।

ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে একশ কোটি টাকার ওপরে। অন্যদিকে দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে ৩১ শতাংশের বেশি। আর ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমেছে দশমিক ৪১ শতাংশ।

এদিকে দাম কমার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি গত কয়েক মাসের মতো তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়ে। ফলে প্রায় দুইশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।

এমন বাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ১০১ কোটি টাকা বা দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। বাজার মূলধন কমার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ কমেছে।

এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে মাত্র ৫০টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৩৫টির। আর ২০৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স কমেছে ২৬ দশমিক ১০ পয়েন্ট বা দশমিক ৪১ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহ বাড়ার পর ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক কমলো। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ২৪ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৯ শতাংশ।

প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৩৬ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে দশমিক ২৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। এর মাধ্যমে ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক টানা দুই সপ্তাহ কমলো।

অন্যদিকে প্রধান মূল্যসূচকের মতো টানা চার সপ্তাহ বাড়ার পর গত সপ্তাহে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৯ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬৫১ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৯৪৭ কোটি ৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ২৯৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ। আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ২৫৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৪ হাজার ৭৩৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে ৪৭৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ২৩ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৬২ কোটি ৮২ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩ দশমিক ৫৩ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সি পার্ল বিচ রিসোর্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। ৯৩ কোটি ৬১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- জেমিনি সি ফুড, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, আরডি ফুড, লিগাসি ফুটওয়্যার, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স।