রাশিয়া ছাড়তে চলেছেন বহিষ্কৃত শত শত জার্মান নাগরিক
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রুশ-জার্মান সম্পর্ক খারাপ হয়েছে রাশিয়া ছাড়তে চলেছেন শত শত জার্মান নাগরিক
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে রুশ-জার্মান সম্পর্ক খারাপ হয়েছে
রাশিয়া ছাড়তে চলেছেন শত শত জার্মান নাগরিক। জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক খাতে কর্মরত শত শত জার্মান নাগরিককে আগামী মাসে রাশিয়া থেকে বহিষ্কার করা হবে।
এছাড়া জুনের শুরু থেকে রাশিয়া জার্মান কর্মীদের সংখ্যা সীমাবদ্ধ করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে মিডিয়ায় আসা রিপোর্টও নিশ্চিত করেছে জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রোববার (২৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া ছাড়তে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে মস্কোর জার্মান স্কুলের শিক্ষক এবং গোয়েথে ইনস্টিটিউটের সাংস্কৃতিক সমিতির কর্মীরাও রয়েছেন। কূটনীতিকদের বহিষ্কার এবং রাশিয়া ও জার্মানির মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত মাসে রাশিয়া ও জার্মানি প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ দূতাবাসের ৪০ জন কর্মীকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বহিষ্কার করে।
জার্মান দৈনিক সংবাদপত্র সদেউৎশে জেইটুং জানিয়েছে, সর্বশেষ এই পদক্ষেপটি কূটনীতিকসহ ‘নিম্ন-থেকে-মধ্যস্তরের’ শতাধিক কর্মীকে প্রভাবিত করবে।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রটি বলেছে, ‘এই একতরফা, অন্যায় এবং অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে ফেডারেল সরকার এখন রাশিয়ায় কূটনৈতিক উপস্থিতি বজায় রাখার পাশাপাশি মধ্যস্থতাকারীদের ন্যূনতম উপস্থিতি নিশ্চিত করার বিষয়ে উদ্বিগ্ন।’
মন্ত্রণালয় বলেছে, এই পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় জার্মানিতে সর্বাধিক সংখ্যক রাশিয়ানদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় তারা বাস্তব ভারসাম্য নিশ্চিত করার দিকে লক্ষ্য রাখবে।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি দেশ রাশিয়ার কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে। গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে ৪০ জনেরও বেশি কূটনীতিককে ২০২২ সালের মার্চ মাসে চারটি ইইউ দেশ থেকে বহিষ্কারের আদেশ জারি করা হয়েছিল।
তবে রাশিয়া এবং জার্মানির মধ্যে গভীর অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ছিল। অবশ্য ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক আগ্রাসনের পর থেকে সেই সম্পর্কে অনেকটাই ভাটা পড়েছে। এছাড়া রুশ হামলা শুরুর কয়েক দিনের মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস সামরিক ব্যয় বাড়িয়ে এবং ইউক্রেনে সরাসরি অস্ত্র পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে জার্মানির বৈদেশিক নীতিতে কার্যত বিপ্লব ঘটান।
বিবিসি বলছে, শলৎস তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে জার্মানি ইউক্রেনে লিওপার্ড ২ ট্যাংক পাঠানোর ঘোষণা দেয়। এছাড়া চলতি মাসে ইউক্রেনকে ‘যতদিন প্রয়োজন ততদিন’ সহায়তা করার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ২.৭ বিলিয়ন ইউরোর অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন।
এছাড়া রাশিয়ান গ্যাসের ওপর নির্ভরশীলতার অবসান ঘটাতে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে জার্মানি। আর এই পরিস্থিতিতে কূটনীতিক এবং সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা কর্মীদের বহিষ্কারের ঘটনায় রাশিয়া এবং জার্মানির মধ্যে অবশিষ্ট সম্পর্ক আরও বেশি চাপের মধ্যে পড়তে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।