যুক্তরাষ্ট্রের শুনানিতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে যা বলল বাংলাদেশ
গার্মেন্ট পণ্যের দাম বৃদ্ধি
প্রথম নিউজ, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশের গার্মেন্ট মালিকরা অন্যান্য দেশের ব্যবসায়ীদের তুলনায় মার্কিন বায়ার ও ক্রেতাদের কাছে তৈরি পোশাকের দাম বেশি রাখছেন বলে অভিযোগ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউনাইটেড স্টেটস ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কমিশন (ইউএসআইটিসি)।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে হয়েছে এই শুনানি। শুনানিতে ইউএসআইটিসির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির প্রেসিডেন্ট ডেভিড জোহানসনসহ ৩ জন এবং বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।
শুনানিতে অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিজিএমই’র সভাপতি ফারুক হাসান। প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতেই ইউএসআইটিসি দল জানতে চায়, যেখানে চীন প্রতি ইউনিট গার্মেন্ট পণ্যের বিক্রয়মূল্য ১ দশমিক ৮৬ ডলার এবং পাকিস্তান ২ দশমিক ৯৫ ডলার করে রাখছে, সেখানে ২০১৭ সাল থেকে দাম বাংলাদেশের গার্মেন্ট মালিকরা প্রতি ইউনিট গার্মেন্ট পোশাকের দাম ৩ দশমিক ২৩ ডলার রাখছেন কেন?
জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, চীন এবং পাকিস্তান বস্ত্র শিল্পের জন্য উপযোগী তুলা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ; কিন্তু বাংলাদেশকে প্রয়োজনীয় তুলার শতভাগ আমদানি করতে হয়। এছাড়া করোনা মহামারির পর থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ২৫ শতাংশ, গ্যাসের দাম বেড়েছে ২৮৬ দশমকি ৫ শতাংশ, ডিজেলের দাম বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। এসবের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পণ্য পরিবহন, সিটি কর্পোরেশন কর, সার্টিফিকেশনসহ ও এ সংক্রান্ত বিভন্ন খাতে ব্যয়ও অনেকাংশে বেড়েছে মহামারিপূর্ব সময়ের তুলনায়।
বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি, কারখানাগুলোতে কাজের পরিবেশ, স্বাস্থ্যসেবা ও শ্রম আইন সংশোধনে গত সাত বছরে বাংলাদেশ কী কী করেছে, তা ও জানতে চেয়েছে ইউএসআইটিসি।
ইউএসআইটিসির শুনানিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বিজিএমইএ লিখিতভাবে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করার পর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়। বাংলাদেশের পক্ষে বেশিরভাগ প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। এ ছাড়া শুনানিতে ২৪ মার্চ পর্যন্ত লিখিত বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ থাকবে। আগামী ৩০ আগস্ট কমিশন তাদের তদন্ত প্রতিবেদন ইউএসটিআরের কাছে উপস্থাপন করবে।
সোমবার বাংলাদেশ ছাড়াও শুনানিতে অংশ নেয় ভারত, কম্বোডিয়াসহ মোট ৫ দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিনিধিরা। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (ইউএসটিআর) অনুরোধে বাংলাদেশসহ এই পাঁচ দেশ নিয়ে তদন্ত শুরু করছে ইউএসআইটিসি। কীভাবে এ দেশগুলো মার্কিন পোশাকশিল্পের বাজারের এত বড় অংশ দখল করে রেখেছে, তা তথ্যানুসন্ধান করে দেখবে কমিশন। এই পাঁচ দেশের কেউ অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজার দখল করছে কি না, তা খুঁজে বের করাই প্রধান উদ্দেশ্য এ কমিশনের। অন্য চার দেশ হলো ভারত, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান।