মামলায় জিয়াউর রহমানের নাম সরকারের নির্দেশে: রিজভী
শুক্রবার সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “মামলাটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেওয়া হয়েছে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: পাঁচাত্তরে তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় ‘জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সরকারের নির্দেশে’ ৪৮ বছর পর জিয়াউর রহমানকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। খালেদ মোশাররফসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রসঙ্গ টেনে শুক্রবার সকালে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি বলেন, “মামলাটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেওয়া হয়েছে। কেন দেওয়া হয়েছে? শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের এখন ডুবু ডুবু অবস্থা। এই ডুবন্ত অবস্থা থেকে জনগণকে একটু যদি বিভ্রান্ত করা যায় সেজন্য …। লাভ কি?”
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানের মধ্যে মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীর উত্তম, কর্নেল নাজমুল হুদা বীর বিক্রম ও লেফটেন্ট কর্নেল এটিএম হায়দার বীর উত্তমকে হত্যার ঘটনার প্রায় পাঁচ দশক পর রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় ওই মামলা হয় বৃহস্পতিবার। সে প্রসঙ্গ ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, “কর্নেল হুদা সাহেবের মেয়ে যে মামলাটি দিলেন… তার মা (নীলুফার হুদা) একটা বই (‘কর্নেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’) লিখেছেন… তার মায়ের লেখা বইটা তো মেয়ে পড়ে দেখেননি… যে খালেদ মোশাররফ এবং কর্নেল হুদাকে সুরক্ষিত করার জন্য কর্নেল নওয়াজিশকে জিয়াউর রহমান নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেটা যে মেয়েটি গতকাল মামলা করেছেন শেখ হাসিনার নির্দেশে… তারই মা কিন্তু এই বই লিখেছেন।”
খালেদ মোশাররফসহ তিন মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হত্যায় ৪৮ বছর পর মামলা। নীলুফার হুদার লেখা আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘কর্নেল হুদা ও আমার যুদ্ধ’ এর প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, “আমরা ওই বইটা আপনাদেরকে পড়ে দেখতে বলব। এই ঘটনার সাথে কে জড়িত সেটাও স্পষ্ট করে লিখেছেন তার মা। কারণ যারা জড়িত তাদের সাথে এখন শেখ হাসিনার সখ্যতা। তাই তার নাম বলেননি। আর যাদেরকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য জিয়াউর রহমান বলেছেন, সেই জিয়াউর রহমানের নামে মামলা দিচ্ছে “
‘সিইসির বক্তব্য অনৈতিক’ বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, “প্রধান নির্বাচন কমিশনার গত পরশুদিন বলেছেন, কালো টাকা দিলে নিয়েন কিন্তু স্বাধীনভাবে ভোট দিয়েন। একটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান এই কথা বলতে পারেন… কালো টাকা নিয়েন…? “এই অনৈতিক কথার জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের পদত্যাগ করা উচিত।” পররাষ্ট্র মন্ত্রী একেএ মোমেনের সমালোচনা করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, “পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘স্বচ্ছ নির্বাচন হবে, বিদেশিরা যে যাই বলুক।’ বিদেশিদের সাথে আপনাদের শত্রুতা কেন যে, বার বার বিভিন্ন দেশ বলছে স্বচ্ছ নির্বাচন দিতে হবে, অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন দিতে হবে? তাহলে ‘বিদেশিরা যে যাই বলুক স্বচ্ছ নির্বাচন হবে’- এই কথাই তো রহস্যজনক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন সাহেব আপনার এই কথার মধ্যেই ইঙ্গিত বহন করে-আপনাদের উদ্দেশ্য অশুভ।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্নাসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা-১২ আসনের বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে এই মানববন্ধন কর্মসূচি হয়। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির মীর সরাফত আলী সপু, আবদুল খালেক, যুবদলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।