মুন্সীগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নিহত, আটক ২
প্রথম নিউজ, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জ শহরে জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের মারধরে মোহাম্মদ উজ্জ্বল মোল্লা (৪২) নামে একজনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৪ মার্চ) রাত ১১টার দিকে শহরের মাঠাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে দাবি নিহতের স্বজনদের। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শহরের ডিসলাইন ব্যবসায়ী হুমায়ূন হোসেন ও তার ভাই মোহাম্মদ সোহেলকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত উজ্জ্বল মোল্লা মাঠপাড়া এলাকার শাহজাহান মোল্লার ছেলে। উজ্জল মুন্সীগঞ্জ পৌরসভায় তৃতীয় শ্রেণির কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি মুন্সীগঞ্জ শহর ছাত্রলীগের সাবেক সহ সভাপতি ছিলেন।
স্বজন ও স্থানীরা জানায়, দুই বছর ধরে উজ্জলদের সঙ্গে তার আত্মীয় সেলিনা-রুবিনা বেগমদের সঙ্গে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। কয়েক মাস আগে বিরোধ পূর্ণ সেই জমির দখল নেন শহরের দক্ষিণ কোটগাঁও এলাকার ডিসব্যবসায়ী হুমায়ুন। দখল নেওয়ার পর থেকে উজ্জলদের কাছ থেকে জোর করে জায়গা দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছিল হুমায়ুন। তার জের ধরে সোমবার রাত ১১টার দিকে হুমায়ুন ও তার ছোট ভাই সোহেলের নেতৃত্বে ১০-১২ জন উজ্জ্বলের মাঠ পাড়ার বসতবাড়িতে হামলা চালায়। উজ্জল তাদের বাধা দিতে গেলে হুমায়ুন, সোহেল ও তাদের লোকজন উজ্জ্বলকে কিল, ঘুষি, লাথিসহ বেধড়ক মারধর করে। এ সময় উজ্জলকে আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে যায় অভিযুক্তরা।
পরে স্থানীয়রা উজ্জ্বলকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ফেরদৌস হাসান জানান, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই ব্যক্তি মারা যান। নিহতের শরীরে দৃশ্যমান আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই বলেও জানান তিনি।
নিহতের ভাই রাজু মোল্লা বলেন, জমির বিরোধ নিয়ে অসংখ্যবার পৌরসভায় বসা হয়। শেষ পর্যন্ত ভূমি অফিস পর্যন্তও গড়িয়েছে। আমরা বলেছি আইন যা রায় দেয় তাই মেনে নেব। হুমায়ুনরা আইনকে তোয়াক্কা করছিল না। তারা তাদের শক্তি দিয়ে সম্পদ দখল করতে যায়। বাড়িতে ফাঁকা গুলি করে। আমাকে ও আমার ভাইকে বেদম মারধর করে। মার সহ্য করতে না পেরে উজ্জল ভাই শেষ পর্যন্ত মারা যান।
নিহত উজ্জলের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। তার স্ত্রী রুবিনা আক্তার বলেন, হুমায়ূনরা জায়গা দখল করতে গিয়ে আমার স্বামীকে মারতে মারতে মেরেই ফেলল। সামন্য জায়গার জন্য মানুষ কতটা নির্মম হয়। আমি আমার দুটো ছোট বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাব। আমাদেরকে দেখবে কে। আমরা উজ্জল হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
ঘটনার পর পর অভিযান চালিয়ে মূল অভিযুক্ত হুমায়ুন ও তার ভাই সোহেলকে আটক করেছে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল থান্দার খায়রুল হাসানসহ পুলিশের একটি দল।
সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) খায়রুল হাসান বলেন, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। মৃতের শরীরের বিভিন্নস্থানে রক্ত জমাটের চিহ্ন রয়েছে। তবে কি কারণে মারা গেছে তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে জানা যাবে।