বাফুফে একাডেমীর দূত জাহিদ হাসান

 বাফুফে একাডেমীর দূত জাহিদ হাসান

প্রথম নিউজ, ডেস্ক : বাফুফের ডেভলপমেন্ট কমিটির সভা শেষেই হয়েছে সংবাদ সম্মেলন। পূর্ব নির্ধারিত সেই সম্মেলনে বাড়তি চমক নাট্যাভিনেতা জাহিদ হাসান। যদিও ফুটবলানুরাগী জাহিদ আগে থেকেই ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের স্থায়ী সদস্য। তিনি এবার বাফুফে একাডেমীর দূত হিসেবে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। 

সংস্কৃতি-অভিনয় জগতের জাহিদ ফুটবলের দূত হয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত-ই। বাফুফে ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,‌ ‘আমি ছোটবেলা থেকেই ফুটবলপ্রেমী। এখনও ফুটবলের খোঁজ-খবর রাখি। ফুটবল ফেডারেশন থেকে আমাকে প্রস্তাব করা হলে আমি সঙ্গে সঙ্গে সম্মতি দেই। আমার মাধ্যমে দুজনও যদি ফুটবলে উদ্বুদ্ধ হয় সেটাই আমার স্বার্থকতা।’

তবে জাহিদ সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন, এজন্য বাফুফে তাকে কোনো অর্থ প্রদান করবে না। সমাজের মধ্য ও উচ্চবিত্ত পরিবারের অনেকেই ছেলেদের সুস্বাস্থ্যের জন্য ফুটবল শেখাতে চায়। রাজধানী ঢাকায় এরকম ফুটবল একাডেমী নেই। তাই বাফুফে বিষয়টি অনুধাবন করে ‌‘ফুটবল ফর হেলথ’ স্লোগানে একাডেমীর যাত্রা শুরু করছে। যেখানে অনূর্ধ্ব-৮ থেকে ১১ পর্যন্ত ৪০ জন এবং অনূর্ধ্ব-১১ থেকে ১৪ পর্যন্ত ৪০ জন ফুটবল শিখতে পারবে। আগ্রহীদের বাফুফের নির্ধারিত ফরম দুই হাজার টাকা দিয়ে সংগ্রহ করে মাসিক তিন হাজার টাকা দিয়ে ভর্তি হতে হবে।

ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক ভর্তি কার্যক্রম সম্পর্কে বলেন, ‌‌‘ফরমটি বাফুফে ভবনে এসে সংগ্রহ করতে হবে। আমরা আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে ভর্তি নেব। পরবর্তীতে প্রতি ব্যাচে সংখ্যা বাড়তে পারে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ও জেলা পর্যায়ে এই একাডেমী ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’

দেশের ফুটবলের উন্নয়নের দায়িত্ব বাফুফের। সেখানে সুস্বাস্থ্য ও মাদক থেকে দূরে রাখার কাজটা মূখ্য নয়। এরপরও এই প্রকল্প হাতে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মানিক বলেন, ‘ ফুটবলই মূলত আমার দায়িত্ব। অনেক বাচ্চারাই ফুটবল শিখতে চায়, কিন্তু সুযোগ পায় না। আমাদের এই একাডেমী সবার জন্য উন্মুক্ত। এখানে যদি ভালো মেধাবী কাউকে পাওয়া যায় এবং পরিবার আগ্রহী থাকলে সে এলিট একাডেমীতে সুযোগ পাবে।’

বাফুফে কমলাপুরে একটি আবাসিক একাডেমী পরিচালনা করে। নতুন শুরু করতে যাওয়া এই একাডেমীটি পরিচালিত হবে কিছুটা বাণিজ্যিকভাবে। মূলত অর্থের বিনিময়ে এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে বাফুফে ভবন সংলগ্ন আর্টিফিশিয়াল টার্ফ, কমলাপুর স্টেডিয়ামে একাডেমী কার্যক্রম চলবে বৃহস্পতিবার বিকেল এবং শুক্র-শনিবার সকালে। বাফুফে একাডেমীর অনুশীলনের দুই ভেন্যুই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। সরকারের ভেন্যু বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার বা কোনো আয় হলে এজন্য অনুমতি এবং আয়ের ১৫ ভাগ দিতে হয়।

এই প্রসঙ্গে বাফুফে সহ-সভাপতি মানিকের ব্যাখ্যা, ‘আমরা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছি না। আমরা তরুণ সমাজকে ফুটবলে উদ্বুদ্ধ করতে চাই। এখানে কয়েকজন কোচ থাকবেন তাদের সম্মানী ও আনুষাঙ্গিক খরচ রয়েছে। সেই অর্থটুকু নেওয়া হবে, বাফুফের কোনো বাড়তি আয় থাকবে না। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আমাদের মাঠ ইজারা দিয়েছে। এখানে অনুমতির বিষয়টি হয়তো সেভাবে নেই।’
 
আজই দুই জন ফুটবলার ভর্তি হয়েছে বাফুফের ফুটবল একাডেমীতে। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে। ১৬ সেপ্টেম্বর বাফুফে ভবন সংলগ্ন আর্টিফিশিয়াল টার্ফে এই একাডেমীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। বাফুফের ফুটবল একাডেমীতে মাঝে মধ্যে আসবেন দূত জাহিদ হাসান। তার স্ত্রী মৌ আসবেন কিনা মাঝে মধ্যে এমন রসিকতা প্রশ্নে জাহিদ উত্তর দেন এভাবে, ‘আমেরিকায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, এক ভক্ত জিঞেস করলেন মৌ আপা কোথায়? আমি পাল্টা প্রশ্ন করলাম আপনার স্বামী কোথায়? আসলে পেশাদার জায়গায় একজন আরেক আরেকজনকে নিয়ে আসা হয় না (হাসি)। তবে এখানে সময় সুযোগ পেলে অবশ্যই সে আসবে।’

এদিকে, বাফুফের পরিকল্পনা রয়েছে ছেলেদের মতো নারীদেরও একটি একাডেমী করার।