‘পানি নাই’, লোডশেডিংকে দায়ী করলেন ওয়াসার এমডি

আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

‘পানি নাই’, লোডশেডিংকে দায়ী করলেন ওয়াসার এমডি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: অসহনীয় গরম ও লাগামছাড়া লোডশেডিংয়ের মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানি সংকট দেখা দিয়েছে। মূলত পানি সরবরাহ করতে না পারায় সেসব এলাকায় পানি সংকটে পড়েছেন নগরের অনেক এলাকার মানুষ। তবে ঠিকমতো পানি সরবরাহ করতে না পারায় ঢাকা ওয়াসার কোনও দোষ নেই বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান।

তিনি বলেন, সাময়িকভাবে পানি সরবরাহের যে সমস্যা হচ্ছে, বিঘ্নিত হচ্ছে, রাজধানীর অনেক এলাকার মানুষ পানি পাচ্ছে না, এতে ঢাকা ওয়াসার কোনও দোষ নেই। আমাদের প্রোডাকশনের ইকুইপমেন্টে বা যন্ত্রপাতিতে কোনও সমস্যা নেই। বিভিন্ন এলাকায় পানি না পাওয়ার একমাত্র কারণ লোডশেডিং। এখানে আমাদের দিক থেকে কোনও সমস্যা নেই।

আজ বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ওয়াসা ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

তাকসিম এ খান বলেন, আমাদের পানি প্রোডাকশন আমরা করতে পারছি, কিন্তু এটা সাপ্লাই দেওয়ার জন্য বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু কিছুদিন ধরে আমরা ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। ফলে আমাদের পাম্পগুলো বন্ধ থাকছে। লোডশেডিংয়ের কারণে পানিতে প্রেসার দিয়ে সরবরাহ করা যাচ্ছে না। পাম্পের ডিপ টিউবওয়েলগুলো বন্ধ থাকছে। ফলে পানি পৌঁছানো যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, ঢাকা ওয়াসার ১০টি জোনের মধ্যে ৪টি জোন এলাকায় বেশি সমস্যা হচ্ছে। গাড়িতে করে পানি সরবরাহ করতেও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কারণ গাড়িতে অনেক সময় পানি ভর্তি করা যাচ্ছে না। পানি সরবরাহ করতে আমাদের ৪৮টি গাড়ি দিয়ে সার্বক্ষণিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। জেনারেটর দিয়ে পাম্পগুলোকে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু জেনারেটরে বিদ্যুতের মতো প্রেসার পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, তাপমাত্রা কমে গিয়ে বৃষ্টি হলে ও লোডশেডিং কমে গেলে আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে সঠিকভাবে পানি সরবরাহ করতে পারব। আমরা নিজেরা বার বার মিটিং করে ও কর্মীদের সর্বোচ্চ এফোর্ট দিয়ে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছি।

ওয়াসার এমডি বলেন, গতকাল (বুধবার) ২৪০ কোটি লিটার পানি প্রোডাকশন করা গেছে। কিন্তু বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিংয়ের কারণে প্রেসার দিয়ে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া এই বিদ্যুৎ সমস্যার কারণে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। আশা করছি লোডশেডিংটা কমে গেলে আমরা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পেলে আর পানির সমস্যা থাকবে না।

ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, চাহিদার তুলনায় বেশি পানি উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে ওয়াসার। অন্যান্য সময় বা শীতকালে রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা থাকে ২১০ কোটি লিটার। কখন কখনও চাহিদা থাকে ২৩০/২৪০ কোটি লিটার। কিন্তু গরমকাল এলে চাহিদার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২৬০ কোটি লিটারে। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার প্রতিদিন প্রায় ২৯০ কোটি লিটার পানির উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। কিন্তু প্রতিদিন গড়ে ২৬০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে ঢাকা ওয়াসা। 

বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ৫টি পানি শোধনাগার রয়েছে। তবে ৪টি শোধনাগার থেকে পানি পাচ্ছে সংস্থাটি। চলতি বছরে উপরি তলের পানির উৎপাদন ৭০ শতাংশে উন্নীত করার কথা থাকলেও সেই লক্ষ্য পূরণ এখনও করতে পারেনি ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে উপরি তলের পানি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩৫ শতাংশ। আর বাকি ৬৫ শতাংশ ওয়াসার সরবরাহ করাব পানি তারা পাচ্ছে ভূগর্ভস্থ থেকে।