নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব পরিচয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৪, প্রাইভেটকার জব্দ

গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা।

নারায়ণগঞ্জে র‌্যাব পরিচয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাই, গ্রেপ্তার ৪, প্রাইভেটকার জব্দ

প্রথম নিউজ, নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে র‌্যাব পরিচয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে অপরাধ কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি সিলভার রংয়ের প্রাইভেটকার, নগদ ৪ লাখ ৪৯ হাজার টাকা, ৩টি কালো রংয়ের র‌্যাবের কটি, একটি সেনাবাহিনীর পোশাকের রংয়ের কাঁধের ব্যাগ, লেজার লাইট, একটি খেলনা রিভলবার, এক জোড়া হ্যান্ডকাফ ও ২টি কালো রংয়ের মাথার ক্যাপ উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তাররা হলেন শামীম আহম্মেদ সবুজ (৩৪), ইকবাল হোসেন ওরফে ইসলাম (৪৫), হাফিজুর রহমান সুমন ও আব্দুর রহমান মেহেদী (৩০)।

গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা। এর আগে বুধবার তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ‘গ’ সার্কেল হাবিবুর রহমান ও আড়াইহাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এর নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ওই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তারকৃত ইকবাল হোসেন ওরফে ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া আইনশৃঙ্খলা পরিচয়ে দস্যুতা ও ছিনতাই সংক্রান্ত ৮টি, আব্দুর রহমান মেহেদীর বিরুদ্ধে ৪টি, শামীম আহমেদ সবুজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৫টি মামলা রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা জানান, গত ২৩শে মে রাত ৮টার দিকে আব্দুল বাতেন নামে এক ব্যবসায়ী তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ৫২ লাখ টাকা ও বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকের একাধিক চেক নিয়ে তার মেয়ের জামাই রানা আহমেদসহ নিজ প্রাইভেটকারে করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পৌনে ৯টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দুপতারা পাকা রাস্তার পাল্লা কবরস্থান সংলগ্ন রাস্তায় পৌঁছালে র‌্যাবের ব্যবহৃত পোশাক ও কটি পরিহিত অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন ব্যক্তি তাদের প্রাইভেটকারটি সংকেত দিয়ে পথরোধ করেন। র‌্যাবের ব্যবহৃত পোশাক ও কটি ছাড়াও ওই ব্যক্তিদের হাতে অস্ত্র, লাঠি, হ্যান্ডকাফ ও সিগনাল লাইট ছিল। একপর্যায়ে তারা বিভিন্ন ভয়-ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ব্যবসায়ী বাতেনের মেয়ের জামাই ও ড্রাইভার সুমনকে প্রাইভেটকার হতে নিচে নামিয়ে মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে দেয়। এরপর বাতেনের নিকটে থাকা ৫২ লাখ টাকা, বিভিন্ন ধরনের ব্যাংকের একাধিক চেক ও ৪টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে দুবৃর্ত্তরা ওই ব্যবসায়ীর প্রাইভেটকারসহ লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালানোর সময় মেয়ের জামাই রানা আহমেদ ‘৯৯৯’ এ কল দেয়।

‘৯৯৯’ এর কল পেয়ে আড়াইহাজার থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ওই প্রাইভেটকারটির পিছু নিলে দুবৃর্ত্তরা প্রাইভেটকার রেখে লুণ্ঠিত মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার সূত্র ধরেই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও এ মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।