দেড় মাসে একমুঠো ধানও পায়নি সিরাজগঞ্জের তিন গুদাম

 দেড় মাসে একমুঠো ধানও পায়নি সিরাজগঞ্জের তিন গুদাম

প্রথম নিউজ, সিরাজগঞ্জ: দেড় মাসে সিরাজগঞ্জের তিনটি সরকারি খাদ্য গুদামে একমুঠো ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) পর্যন্ত উল্লাপাড়া, তাড়াশ ও কামারখন্দ উপজেলা খাদ্য গুদামে ধান সংগ্রহ করতে না পারলেও খাদ্য বিভাগের দাবি, অন্য চারটি গুদামে ৬৬ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করতে পেরেছে তারা।
এদিকে বাজারের চেয়ে সরকার নির্ধারিত মূল্য কম হওয়ায় বাজারে সরাসরি আমন ধান বিক্রি করছেন কৃষকরা। আর চালকল মালিকরা বলছেন, লোকসান গুনতে হলেও বাধ্য হয়ে খাদ্যগুদামে চাল দিতে হচ্ছে তাদের।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২৩ নভেম্বর আমন ধান ও চাল সংগ্রহের অভিযান শুরু হয়। এ অভিযান শেষ হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। এ জেলায় সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে দুই হাজার ৭৫১ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। অন্যদিকে চালকল মালিকদের কাছ থেকে ৭ হাজার ৩৬৭ মেট্রিক টন চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে চাল দিতে ২২৮ জন চালকল মালিক চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। গত দেড় মাসে ৪ হাজার ৯৩৬ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করতে পারলেও তিনটি গুদামে এক মুঠো ধানও সংগ্রহ করতে পারেনি খাদ্য বিভাগ। গুদামগুলো প্রতি কেজি চাল সংগ্রহ করে ৪৪ টাকা ও ধান ৩০ টাকা মূল্যে।

তবে স্থানীয় বাজার ঘুরে জানা গেছে, কৃষকরা প্রতি মণ ধান বিক্রি করছেন ১ হাজার ২৫০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা করে। সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল মমিন বলেন, তিনি ২ বিঘা জমি থেকে ৩৫ মণ ধান পেয়েছেন। কিন্তু সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারে বেশি মূল্য পাওয়ায় ধান খাদ্যগুদামে তিনি দেননি।

একই কথা জানিয়ে কৃষক শাহজাহান আলী বলেন, সরকারি গুদামে ধান দিতে অনেক ঝামেলা হয়। স্থানীয় বাজারে কোনো ঝামেলা নেই। দামও ভালো পাওয়া যায়। অন্যদিকে সরকারি গুদামে ধান দিতে গেলে বিল উত্তোলনসহ নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। এজন্য গুদামে ধান দেননি।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, ধান সংগ্রহ নিয়ে সংশয় থাকলেও চাল সংগ্রহ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। সরকারের উদ্দেশ্য কৃষক যেন ধানের ন্যায্যমূল্য পায়। সে হিসেবে কৃষক বাজারে বিক্রি করলে তার ন্যায্য দাম পাচ্ছে। তারপরও আমরা ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে চেষ্টা করছি।