দেশ আজ অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে: মির্জা ফখরুল
সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশে চলমান দুঃশাসনে এমন এক অস্বাভাবিক ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে অপরাধ করলেও দলীয় বিবেচনায় প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়। যার ফলে অপরাধীরা দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে নতুন নতুন অপরাধ করতেই থাকে। দেশ আজ যেন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। জনগণ আজ চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় এক রাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উপাসনালয়, ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরে গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গীতে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের এই ঘটনা শুধু ন্যক্কারজনকই নয়, তা রহস্যজনক, পূর্বপরিকল্পিত এবং কলঙ্কজনক। এই ঘটনার নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মন্দির, প্রতিমা ভাঙচুর করে যারা সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায়, তারা নরকের কীট। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে সরকারি খরচে প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ মন্দির পুনর্নির্মাণ করার দাবি জানান।
বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যেই মাঝেমধ্যে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এসব ঘটনা ঘটিয়ে সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে চায়। বালিয়াডাঙ্গিতে এক রাতেই বিপুল সংখ্যক মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা কোনোভাবেই স্বাভাবিক নয় এবং গভীর উদ্বেগের বিষয়।
এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় সমগ্র এলাকায় হিন্দু, মুসলমানদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে, যা সামাজিক সম্প্রীতির অন্তরায়। যেসব মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে, তার বেশিরভাগই সড়কের পাশে স্থাপিত ছিল। রাতে সাধারণত টহল পুলিশ থাকে। কিন্তু সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুপস্থিতিও রহস্যজনক। তাদের গাফিলতিতে দুর্বৃত্তরা অনায়াসে এত বিপুলসংখ্যক মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটাতে পেরেছে বলে সাধারণের ধারণা। সরকার এর দায় এড়াতে পারে না।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, এখন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড তো বটেই, সামাজিক ও ধর্মীয়ও কাজও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এর আগেও মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যান্য ধর্মীও উপাসনালয়েও হামলা হয়েছে। সরকার দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে পারেনি।
এরআগেও বালিয়াডাঙ্গীতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি ও তার পরিবারের সদস্য এবং তার অনুগত লোকজন শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমি দখল নয়, তাদের ওপর হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। তখনো তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।