তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জামায়াতের
বিবৃতিতে বর্তমান সরকারের বিজাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলার জন্য দেশের আপামর জনতার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রথম নিউজ, অনলাইন ডেস্ক: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, সরকার কেরোসিন, ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেনসহ সব ধরনের জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির যে অন্যায়, অযৌক্তিক ও জনস্বার্থবিরোধী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের বিজাতীয় শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তুলার জন্য দেশের আপামর জনতার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শনিবার (১ জুন) জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শূরা বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সরকার কেরোসিন ও ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৭৫ পয়সা এবং পেট্রোল ও অকটেনের দাম প্রতি লিটারে আড়াই টাকা বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে তা সম্পূর্ণ জনস্বার্থবিরোধী। সকল প্রকার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে দেশের গোটা অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সকল ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। সকল জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে কেরোসিন ব্যবহারকারী দরিদ্র লোকদের ঘরে বাতি জ্বলবে না। যারা কেরোসিনের চুলায় রান্না করে তাদের রান্না খরচ বাড়বে। একইসঙ্গে বাস, লঞ্চ ও ফেরি ভাড়া বাড়বে। পানি সেচের খরচ বাড়বে। ফলে কলকারখানায় পণ্য উৎপাদনের খরচ বাড়বে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ও কৃষিপণ্য, তরিতরকারি এবং মসলার দাম আরও বাড়বে। দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগণের জীবনযাত্রার খরচ বাড়বে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। তারা পাশবিক শক্তির জোরে টিকে আছে। জনগণের দুঃখ-কষ্টে এ সরকারের কিছুই আসে যায় না। যে কারণে এ সরকার ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির সাথে সাথেই আবার সকল প্রকার জ্বালানির দাম বৃদ্ধি করেছে। সরকার জনগণের মাথায় একের পর এক মূল্যবৃদ্ধির বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। দরিদ্র জনগণের স্বার্থের কথা চিন্তা করে অবিলম্বে সকল প্রকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির অন্যায় ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি। এদিকে জামায়াতের মজলিসে শূরার বৈঠকে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে পৌত্তলিকতা মিশ্রিত নাস্তিক্যবাদী বিজাতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয় যে, বাংলাদেশের শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ধর্মনিরপেক্ষতার নামে পৌত্তলিকতা মিশ্রিত নাস্তিক্যবাদী শিক্ষানীতি চালু করে দেশের জনগণের ঈমান-আক্বিদা ধ্বংস করার জন্য বর্তমান সরকার দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ষড়যন্ত্র করে আসছে। এ দেশের জনগণ কখনো বিজাতীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি গ্রহণ করবে না।
আরও বলা হয়- স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই তারা বিজাতীয় শিক্ষা-সংস্কৃতি জাতির ঘাড়ে চাপানোর ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছে। বর্তমান আওয়ামী সরকারও দীর্ঘ ১৫ বছর ইসলামী শিক্ষা ও জনগণের ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস করার যে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে আসছে তা অবশ্যই ব্যর্থ হবে।