জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাস্তায় মানববন্ধন

ভালুকায় স্কুলছাত্রী রিয়া হত্যা

জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রাস্তায় মানববন্ধন

প্রথম নিউজ, ভালুকা: ভালুকায় চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্রী স্কুলে যাওয়ার পথে ৯ শ্রেণির ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ভালুকা-বাটাজোর সড়কে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক ও সহপাঠীরা। উপজেলার বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল রাখিয়া সুলতানা রিয়া। সে বাটাজোর গ্রামের আবদুর রশিদের মেয়ে।

স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ, পরিবার ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক বছর আগে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার মাওশা গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে প্রবাসী রিপন মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় রিয়ার। বিয়ের পর রিপন সৌদি আরব চলে যান। এরপর রিয়ার ওপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান বলে অভিযোগ ওঠে। ছয় মাস আগে বাবার বাড়ি ফিরে আসে রিয়া। এক বছর বিরতি দিয়ে আবার পড়াশোনা শুরু করে মেয়েটি।

সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের সমাপনী প্রস্তুতি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় এই শিক্ষার্থী। বাড়ি থেকে আনুমানিক ১০০ গজ দূরে মুখ মোড়ানো ও মাথায় ক্যাপ পড়া এক ব্যক্তি রিয়াকে পেছন থেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। তখন তার মাকে ডাক দিয়ে চিৎকার করে দৌঁড়াতে শুরু করে রিয়া। তখন হামলাকারী পেছন থেকে ঘাড়, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে মেয়েটিকে জখম করে। মেয়ের চিৎকার শুনে মা মাজেদা খাতুন দৌঁড়ে এসে পাশের ধান ক্ষেত থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় কাদামাখা শরীরে উদ্ধার করেন। পরে মাজেদা খাতুনের চিৎকারে অন্যরা ছুটে আসেন। কিন্তু হামলাকারীকে তারা ধরতে পারেননি। পরে তারা মেয়েটিকে উদ্ধার করে ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় বিকেলে পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও ভালুকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুল আহম্মেদ ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। রাখিয়ার বাবার বাড়ি ও আর্থিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ১০ হাজার টাকা দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। পরে রাতে রিয়ার বাবা আব্দুল রশিদ বাদি হয়ে অজ্ঞাত নামা আসামি দিয়ে ভালুকা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। বর্তমানে রিপন আত্মগোপনে ও তার বাবা-মা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।

রিয়ার মা মাজেদা খাতুন জানান, ‘বিয়ের কিছুদিন পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে। মানসিক নির্যাতনে শ্বশুরবাড়ি থেকে চলে আসে তার মেয়ে। তারাই আমার মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যাকারীর ফাঁসি চাই আমি।’

ভালুকা মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তলকারী কর্মকর্তা কাজল হোসেন জানান, ‘হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিয়ার শ্বশুর মানিক মিয়া ও শাশুড়ি খেন্ত বেগমকে পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে রিপন মিয়াকে খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিষয়টি সন্দেহজনক।’