চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান বিটিসিএল কর্মচারীদের

গতকাল ১০ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো বিটিসিএল এর পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি।

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান বিটিসিএল কর্মচারীদের

প্রথম নিউজ, অনলাইন: চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)-এর প্রধান কার্যালয়ে লাগাতার  অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মচারীরা। ২৮শে এপ্রিল দুপুর থেকে বিটিসিএল প্রধান কার্যালয়ের সামনে দিন-রাত শান্তিপূর্ণ অবস্থান পালন করছে তারা। গতকাল ১০ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো বিটিসিএল এর পক্ষ থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা আসেনি। ইস্কাটনে অবস্থিত বিটিসিএল’র কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দেশের প্রতিটি জেলা থেকে আগত প্রায় দেড় হাজার কর্মচারী প্রতিষ্ঠানটির সীমানার ভেতরে অবস্থান নিয়েছেন।

শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য তারা সেøাগানের মাধ্যমে কার্যালয় মুখরিত করে রেখেছেন। আশপাশেও এর আওয়াজ বহুদূর শোনা যাচ্ছে। আন্দোলনকারীদের দাবি, নিয়োগপত্রের শর্তাবলী অনুযায়ী, কর্মচারীদের শিক্ষানবিশকাল ১ বছর উল্লেখ থাকলেও প্রায় সাড়ে ৫ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো তাদের চাকরি স্থায়ী করা হয়নি। বিটিসিএলের ২৪, ৫৭ ও ৭৩ বোর্ড সভায় শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে কোম্পানির বিধি অনুযায়ী নিয়োগ এবং বেতন প্রদানের সিদ্ধান্ত হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। সুনির্দিষ্ট ঘোষণা ছাড়া কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন শ্রমিকরা। এতে প্রতিষ্ঠানটির মাঠ পর্যায়ের প্রায় সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

ওদিকে কর্মচারীদের রাতদিন অবস্থান ও রাতেও সেøাগান দেয়ায় আশপাশের আবাসিক ভবনে বাসিন্দাদেরও সমস্যা হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১শে জানুয়ারি বিটিসিএল’র ১২তম গ্রেডে (বিলোপযোগ্য) নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে ১ হাজার ৫৩৪ জন শ্রমিক যোগদান করেন। বিটিসিএল চাকরি বিধিমালা এবং নিয়োগপত্রের সকল শর্তাবলী পূরণসহ শিক্ষানবিসকাল ১ বছর উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও প্রায় সাড়ে ৫ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও স্থায়ীকরণ পত্র জারি না হওয়ায় তারা এই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। কর্মসূচি পালনকালে ৭ থেকে ৮ জন কর্মচারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া কর্মসূচি পালনকারী প্রায় সবাই অসুস্থ।

সার্বিক বিষয়ে বিটিসিএল শ্রমিক কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দীন মানবজমিনকে বলেন, আমাদের সাড়ে ৫ বছর হলো নিয়োগ হয়েছে। এখন চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য আন্দোলন করছি। আমরা অস্থায়ী ভিত্তিতে এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি শুরু করেছি। আমরা যারা মাস্টাররোল থেকে নিয়োগ পেয়েছি, তাদের কনফার্মেশন পত্রটি এখনো জারি করা হয়নি। নিয়োগপত্রের যে বিধিবিধান ছিল তার সবকিছু সম্পন্ন করা হয়েছে। বেসিক ট্রেনিং দিয়েছি, পরীক্ষা দিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়েছি। তা সত্ত্বেও আমাদের কনফার্মেশন পত্রটি দেয়নি। এজন্য আমরা বিভাগীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে কর্মবিরতি করেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় হবে না, কর্মচারীরা হাল ছাড়বে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা কনফার্মেশন পত্রটি না পাবো, ততদিন আমরা অবস্থান করবো।