কম দামেও আলু নিচ্ছে না কেউ, নষ্ট হচ্ছে মাঠে

ফলন ভালো হলেও হিমাগার না থাকায় আলু সংরক্ষণ করতে পারছেন না চাষিরা। ফলে লাভ তো দূরের কথা, আলু চাষের খরচটুকুও উঠছে না।

কম দামেও আলু নিচ্ছে না কেউ, নষ্ট হচ্ছে মাঠে
ফাইল ফটো

প্রথম নিউজ, বরগুনা: বরগুনার পাথরঘাটায় ক্রেতার অভাবে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার মণ আলু। ফলন ভালো হলেও হিমাগার না থাকায় আলু সংরক্ষণ করতে পারছেন না চাষিরা। ফলে লাভ তো দূরের কথা, আলু চাষের খরচটুকুও উঠছে না।

জানা গেছে, চলতি বছর বরগুনায় অকাল বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে অসংখ্য বীজ। এরপর আবার বীজ বপন করতে হয় চাষিদের। ফলে এ বছর আলু চাষে দ্বিগুণ খরচ হয়েছে। এরপর ফলন ভালো হলেও ক্রেতার অভাবে ক্ষেতেই স্তুপ করে ফেলে রাখা হয়েছে আলু। আবার খরচের ভয়ে অনেক কৃষক আলু তুলছেন না জমি থেকে। 

পাথরঘাটার রূপধন ও কামারহাট গ্রামে দেখা গেছে, ক্ষেতগুলোতে স্তূপ করে রাখা হয়েছে সদ্য তোলা আলু। কোনো কোনো স্তূপের আলুতে পচন ধরা শুরু করেছে। কোথাও আবার দেখা দিয়েছে ছত্রাকের আক্রমণ। আলুর ফলন বেশি হওয়ায় দাম কম হলেও ক্রেতা সমাগম নেই। এতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। এ কারণে এখন পর্যন্ত আলু তোলেননি অনেক চাষি।

পাথরঘাটার রূপধন ও কামারহাট গ্রামের খলিলুর রহমান, মালেক, টুকু, শাহিনসহ কয়েকজন চাষি জানান, প্রথম যে বীজ লাগানো হয়েছিল তা অকাল বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যায়। এরপর দ্বিগুণ খরচ করে আবার জমিতে আলু আবাদ করি। আলুর ব্যাপক ফলন হয়েছে। কিন্ত ক্রেতা ও হিমাগার না থাকায় মাঠেই পচে যাচ্ছে আলু।

রূপধন এলাকার চাষি আবদুর রব বলেন, আলুর ফলন ভালো হলেও বিক্রি করতে পারছি না। কম দাম হলেও কিনছেন না ক্রেতারা। আমার প্রায় ৪৫-৫০ মণ আলু স্তূপ করে রাখা হয়েছে। কোনো কোনো স্তূপে পচন ধরা শুরু করেছে। ক্ষেতে আরও আলু আছে।  কামারহাট গ্রামের চাষি শাহ আলম বলেন, আল্লাহর রহমতে আলুর ফলন বেশ ভালো হয়েছে। কিন্তু কম দামে দিলেও কেউ আলু নিচ্ছে না। তাছাড়া আমাদের এখানে আলু সংরক্ষণের জন্য হিমাগার নেই। হিমাগার থাকলে আলু পচে যেত না।

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা আবদুস সালাম কবির বলেন, উপজেলায় ব্যাপকভাবে আলুর ফলন হয়ছে। ক্রেতা সমাগম কম থাকলেও পাথরঘাটায় উৎপাদিত আলু শিগগিরই স্থানীয় বাজারে বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হবে। বরগুনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সৈয়দ জোবায়দুল আলম বলেন, বগুনায় প্রতি বছর ব্যাপক আলুর ফলন হয়। কিন্তু সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় মাঠেই পচে যায় আলু। এতে লোকসান হচ্ছে কৃষকদের।  হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করা গেলে বরগুনার উৎপাদিত আলু দিয়ে পার্শ্ববর্তী জেলার চাহিদা মেটানো সম্ভব হতো। আমি এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব।

তিনি আরও বলেন, জেলায় এ বছর ১ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে আলুর আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু পাথরঘাটায় আলুর আবাদ হয়েছে ৫৬০ হেক্টর জমিতে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

news.google.com

https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom