কফির সঙ্গে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট মিশিয়ে অনলাইনে বিক্রি

বিজ্ঞাপনের নিচে পণ্যের গুণাগুণের ভালো রিভিউ দেয়া হয়। এতে করে ক্রেতারা আরও আকৃষ্ট হয়।

কফির সঙ্গে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট মিশিয়ে অনলাইনে বিক্রি

প্রথম নিউজ, অনলাইন: অনলাইনে চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে বিক্রি করা হয় কোরিয়ান রেড জিনসেং চা-কফিসহ বিভিন্ন নামিদামি ব্র্যান্ডের যৌন উত্তেজক পণ্য। বিদেশি আকর্ষণীয় পণ্য, দাম কম ও হোম ডেলিভারি ব্যবস্থা আছে দেখে ক্রেতারা এসব পণ্য কিনতে সহজেই আগ্রহী হয়। বিজ্ঞাপনের নিচে পণ্যের গুণাগুণের ভালো রিভিউ দেয়া হয়। এতে করে ক্রেতারা আরও আকৃষ্ট হয়। অথচ কোরিয়ান কিংবা কোনো নামিদামি ব্র্যান্ডতো দূরে থাকুক, এই পণ্যগুলো তৈরি করা হয় ঘরে বসেই। পরে কোরিয়াসহ প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়ক লাগিয়ে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে ক্রেতাদের কাছে। বিক্রেতারা ভেজাল চা ও কফির সঙ্গে যৌন উত্তেজক ট্যাবলেটের গুঁড়া মিশিয়ে ক্রেতাদের ঠকায়। এসব পণ্য খেয়ে ক্রেতারা কিডনি রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়। সম্প্রতি এমনই এক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ বলছে- এসব নকল চা-কফি সেবনে ক্যান্সার, কিডনির রোগসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়। অর্থাৎ অল্প দাম দেখে আকৃষ্ট হয়ে এসব কিনলে জীবনে নেমে আসতে পারে ভয়ঙ্কর পরিণতি।

সোমবার এই চক্রের ৪ সদস্যকে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তরা বিভাগ। গ্রেপ্তাররা হলো- রাতুল ইসলাম, রাকিবুল ইসলাম ওরফে রায়হান, আরাফাত হোসেন সাব্বির ও আল-আমিন ইসলাম। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৯০০ প্যাকেট ভেজাল কফি, ২০ কেজি ভেজাল কফির গুঁড়া, ২০ কেজি ভেজাল চায়ের গুঁড়া, একটি ল্যাপটপ ও বিপুল পরিমাণ স্টিকার উদ্ধার করা হয়। ডিবি বলছে, চক্রটি ভেজাল যৌন উত্তেজক স্প্রে ভিগা স্ট্রং, ভেজাল যৌন উত্তেজক মিশ্রিত কোরিয়ান রেড জিনসেং টি-কফি, জাজফিট পাপাইয়া কফি, জাজফিট মাকা কফি তৈরি করে বিক্রি করতো।

গতকাল নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশিদ বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে কোরিয়ান যৌন উত্তেজক কফি-চা তৈরি করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। এ জন্য তারা ‘ইওরহেল্ট.কম’ নামে ওয়েবসাইট খুলে চটকদার বিজ্ঞাপন দিতো। বিজ্ঞাপনে উপকারভোগী হিসেবে বিভিন্ন মানুষের বক্তব্য তুলে ধরতো তারা। কেউ পণ্য অর্ডার করলে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে বাসায় ডেলিভারি দিয়ে আসা হবে বলেও জানাতো তারা। এতে আকৃষ্ট হয়ে কেউ পণ্য অর্ডার করলে তাকে এসব নকল চা-কফি পৌঁছে দেয়া হতো। ২৫০ গ্রাম ওজনের কফির প্যাকেট চক্রটি ৯৯৯ টাকায় বিক্রি করে আসছিল। এভাবে গত কয়েক বছরে তারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

ডিবি’র উত্তরা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. ইমরান হোসেন মোল্লা বলেন, যৌনশক্তিবর্ধক পানীয় হিসেবে এসব নিম্নমানের কফি-চা পান করে মানুষ রোগাক্রান্ত হচ্ছে। চিকিৎসকরা আমাদের জানিয়েছেন, এগুলোতে ক্যান্সারের কারণও হতে পারে। চটকদার বিজ্ঞাপন দেখলেই কোনো পণ্য কিনে সেবন না করার পরামর্শ দেন তিনি। একইসঙ্গে গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডের জিজ্ঞাসাবাদে আরও বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে আসবে।