এমপির ছত্রছায়ায় আ.লীগ কর্মীদের পেটাচ্ছে বিএনপি: লতিফ বিশ্বাস

প্রথম নিউজ, সিরাজগঞ্জ: এমপি আব্দুল মমিন মণ্ডলের ছত্রছায়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা বেলকুচি-চৌহালীর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মারধর ও বাড়িঘর ভাঙচুর করছে বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) বেলকুচির কামারপাড়া নিজ বাসভবনে নির্যাতিত নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে করা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।  দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকা প্রতীকের মমিন মণ্ডলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি।  

আব্দুল লতিফ বিশ্বাস বলেন, বেলকুচিতে কোনোদিন আ.লীগ নেতাকর্মীদের ওপর আঘাত আসেনি। মমিন মন্ডল এমপি হয়ে বিএনপি-জামায়াতকে দলে ভিড়িয়ে তাদের দিয়ে আ.লীগ কর্মীদের নির্যাতন করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক হওয়ায় নির্বাচনের দিন থেকে প্রায় শতাধিক কর্মীকে মারপিট করে আহত করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মূর্তি। প্রায় ২ হাজার নেতাকর্মী হামলা ও মারপিটের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক এই সভাপতি আরও বলেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নাশকতা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ ট্রেন পোড়ানো মামলার আসামিরা নব্য আওয়ামী লীগ কর্মী সেজে নৌকা প্রতীকের ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এরা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরলেও রহস্যজনক কারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোনো ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।

অবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৃহৎ কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানূর বিশ্বাস, পৌর মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী আকন্দ ও নুরুল ইসলাম সাজেদুল, রাজাপুর ইউপি চেয়ারম্যান সনিয়া সবুর আকন্দ, বেলকুচি সদর ইউপি চেয়ারম্যান মির্জা সোলায়মান, সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক ভাষানী, পৌর
আ.লীগের সভাপতি শরিফুল মির্জা, সাংগঠনিক সম্পাদক আয়নাল হক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি গোপাল চন্দ্র ও সাধারণ সম্পাদক কামাল আহম্মেদসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডলের মোবাইল ফোনে বার বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।  তার ব্যক্তিগত সহকারী সেলিম সরকার বলেন, আমাদের লোকজন কোনো গ্যাঞ্জাম করেনি। বিভিন্ন জায়গায় তারাই আমাদের লোকজনের ওপর আক্রমণ করেছে।  

সহিংসতার ঘটনায় সম্প্রতি আটক হওয়া আমিরুল সম্পর্কে তিনি বলেন, আমিরুল গত নভেম্বর মাসে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। নির্বাচনে নৌকার কাজ করেছেন তিনি। কোনো মারামারির সঙ্গে জড়িত নন তিনি। তাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, যে কয়টা ঘটনা ঘটেছে মামলা হয়েছে। সাতটি মামলার প্রত্যেকটার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এনায়েতপুরে একটি ঘটনা ঘটেছিল। সেটাতেও মামলা হয়েছে এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমাদের কাছে যেসব ঘটনা এসেছে, যেগুলো মামলার মতো সেগুলোর মামলা গ্রহণ করেছে। যেটা মামলার মতো নয়, জিডি গ্রহণ করে তদন্ত করা হয়েছে। আসামিদেরও ধরা হচ্ছে। পুলিশের অবস্থান পরিষ্কার। অত্যন্ত নিরপেক্ষ শান্তিপূর্ণ ইলেকশন করেছি। ইলেকশনের পরে যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয়েছে। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।