‘এই জয় প্রথম টেস্টে রান পাওয়ার মতো’- উচ্ছ্বসিত সৌরভ
টানা ৫ ম্যাচ হারের পর শঙ্কা দেখা দিয়েছিলো, এবোর বুঝি টিম ডিরেক্টর আর প্রধান কোচের চাকরি হারাতে চলেছেন সৌরভ গাঙ্গুলি এবং রিকি পন্টিং
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : টানা ৫ ম্যাচ হারের পর শঙ্কা দেখা দিয়েছিলো, এবোর বুঝি টিম ডিরেক্টর আর প্রধান কোচের চাকরি হারাতে চলেছেন সৌরভ গাঙ্গুলি এবং রিকি পন্টিং। ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার দুই ক্রিকেট মস্তিষ্কের সম্মিলনও যে দিল্লি ক্যাপিটালসকে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে বের করে আনতে পারছিল না!
অবশেষে ৬ষ্ঠ ম্যাচে এসে দারুণ স্বস্তির এক জয়ের দেখা পেল সৌরভ গাঙ্গুলিদের দিল্লি ক্যাপিটালস। এই জয় যেন তৃষ্ণার্ত সাহারা মরুর বুকে এক পশলা বৃষ্টির ফোটার মত। এর ফলেই এতটা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখা যাচ্ছে দিল্লির টিম ডিরেক্টর সৌরভ গাঙ্গুলিকে। কেকেআরের বিপক্ষে পাওয়া এই জয়কে তিনি তুলনা করছেন, তার নিজের প্রথম টেস্টে রান পাওয়ার আনন্দ অনুভূতির সঙ্গে।
টানা পাঁচ ম্যাচে হারের পর সৌরভই বলেছিলেন, পরের নয় ম্যাচ জিতবে দিল্লির দল। সে সঙ্গে তারা প্লে-অফেও পৌঁছাবেন। তাহলে কি সে অভিযানই বৃহস্পতিবার সফলভাবে শুরু করল দিল্লি! কলকাতা নাইট রাইডার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়ে এবারের আইপিএলে প্রথম জয়ের মুখ দেখল তারা। প্রথমে ব্যাট করে ১২৭ রান তুলেছিল কেকেআর। সেই রান ৬ উইকেট হারিয়ে তুলে নিল দিল্লি।
ম্যাচের পর দিল্লি ক্যাপিটালসের টিম ডিরেক্টর সৌরভ উচ্ছ্বাসভরে বলেন, ‘জিততে পেরে খুশি। আমি ডাগআউটে বসে ভাবছিলাম যে, এটা আমার ২৫ বছর আগে প্রথম টেস্টে রান পাওয়ার মতো। আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) ভাগ্যবান ছিলাম।’
তবে সৌরভ বোলারদের পারফরম্যান্সে খুশি হলেও, হতাশা প্রকাশ করেছেন ব্যাটারদের নিয়ে। মাত্র ১২৮ রান তাড়া করতে নেমে দিল্লিকে ১৯.২ ওভার খেলতে হয়েছে। মাত্র ৪ বল বাকি থাকতে তারা জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছায়।
সৌরভ তাই বলছেন, ‘এই মৌসুমে এর আগেও আমরা ভালো বোলিং করেছি; কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ব্যাটিংয়ে। আমাদের নিজেদের ভুলত্রুটিগুলো খুঁজতে হবে এবং দেখতে হবে কিভাবে আমরা আরও ভালো করতে পারি। স্পিনাররা ভালো বোলিং করেছে। আমি জানি আমরা ভালো খেলিনি এবং আরও ভালো ব্যাট করার পথ খুঁজতে হবে। আমাদের ছেলেদের কঠোর পরিশ্রম করে নিজেদের ফর্ম ফিরে পেতে হবে। সেটা পৃথ্বি, মানিশ হোক বা মিচেল মার্শ। তারা দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। আগামীকাল (আজ শুক্রবার) আমাদের একদিনের ছুটি আছে এবং এরপর হায়দরাবাদে উড়ে যাব। আশা করি, সেখানে ভালো ব্যাটিং উইকেট হবে, সাধারণত যেটা হয়ে থাকে।’
টানা পাঁচ ম্যাচ হারা দিল্লির কাছে এই ম্যাচ ছিল বাাচা-মরার লড়াই। সেই ম্যাচে অভিজ্ঞ ইশান্ত শর্মাকে সুযোগ দিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলি। আইপিএলে একাধিকবার দেখা গেছে সাবেক নাইটদের কেকেআরের বিরুদ্ধে ভাল খেলতে। এ ক্ষেত্রেও তেমনই হল। নিজের চার ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ২ উইকেট তুলে নিলেন ইশান্ত। অন্য এক সাবেক নাইট কুলদীপ যাদব তিন ওভারে ১৫ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। দু’টি করে উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল এবং এনরিখ নরকিয়া। একটি উইকেট নেন মুকেশ কুমার।
দিল্লির বোলারদের দাপটে কলকাতার রানের গতি একেবারে থমকে যায়। পাশাপাশি একের পর এক উইকেটও হারাতে থাকে তারা। মাত্র ১২৭ রানে নাইটরা অলআউট হয়ে যায়। জেসন রয়ের ৪৩ রান (৩৯ বলে) ছাড়া বাকিদের অবস্থা তথৈবচ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আন্দ্রে রাসেলের। অপরাজিত ৩৮ (৩১ বলে) রান করেন তিনি। এ ছাড়া দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছান মানদিপ সিং। করেছেন মাত্র ১২ রান (১১ বলে)। ২০ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান করে কেকেআর।
রান তাড়া করতে নেমে দিল্লিও যে আহামরি ব্যাটিং করেছেন, সেটাও নয়। তবে ডেভিড ওযার্নারের ৫৭ (৪১ বলে), মানিশ পাণ্ডের ২১ (২৩ বলে) এবং অক্ষর প্যাটেলের অপরাজিত ১৯ (২২ বলে) দিল্লিকে জয় এনে দিতে সাহায্য করে। ৪ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেটে জয় পায় দিল্লি। কলকাতার বরুণ চক্রবর্তি, নিতিশ রানা, অনুকূল রায় ২টি করে উইকেট নিয়েছেন।