প্রথম নিউজ, অনলাইন: আল্টিমেটাম, হাতাহাতি ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে শেষ হয়েছে ভোলাবাসীর তিন দফা দাবি আদায়ের সমাবেশ। রবিবার (২৭ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্যাস প্রদান, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সেতু নির্মাণের দাবিতে সমাবেশ করে ‘আগামীর ভোলা’ নামক এক সংগঠন।
এসময় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রেসক্লাবের ভিতরে এসে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে লাঠিচার্জ করে একাংশকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। অন্যদিকে, সমাবেশ শেষে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে স্বল্প সময়ের জন্য অবস্থান করে তারা। যাতে করে সাময়িকভাবে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
এসময় দাবি আদায়ে জন্য ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়। না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হবে বলেও জানান তারা। পরবর্তীতে আগামীর ভোলার পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এ বিষয়ে শাহবাগ থানার পেট্রোল ইন্সপেক্টর সর্দার বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘বিভিন্ন দাবি নিয়ে ভোলার বিভিন্ন স্তরের জনগণ সমাবেশ করতে এসেছিল। এসময় তারা প্রেসক্লাবের ভেতরে নিজেদের মধ্যে ক্ষিপ্ত আচরণ করেছিল। যেহেতু জাতীয় প্রেস ক্লাব একটি সংরক্ষিত এলাকা তাই পুলিশ কঠোর অবস্থানে গিয়ে সেখান থেকে তাদের বের করে দেয়। তবে কাউকে মারধর করেনি। আর এখানে আলাদা করে কাউকে চিহ্নিতও করা হয়নি।’
এর আগে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ভোলা জেলায় প্রায় ২৫ লাখ লোকের বসবাস। ভোলার প্রান্ত অঞ্চলের মানুষের ন্যূনতম চিকিৎসা সেবা নাই, যাতায়াতের জন্য সেতু নেই, গ্যাস নেই। এমনকি মূল ভূখণ্ডের মানুষের জন্য নামেমাত্র কিছু হাসপাতাল থাকলেও প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়াও দুষ্কর। এর মূল কারণ হলো ভঙ্গুর প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ডাক্তারদের ভোলায় হাসপাতালগুলোতে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন বহু লোক বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে।
আগামী ভোলার অন্যতম সমন্বায়ক মৃধা আল আমিন বলেন, গ্যাসসহ যে সব মৌলিক দাবি ছিল তার জন্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাইনি। বিগত ১৬ বছর ভোলাবাসীর জন্য কিছু করা হয়নি। এই সরকারের বলতে চাই দাবি মেনে নেন, না হলে আমরা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।
নাজিম উদ্দিন আলম বলেন, ভোলা খাদ্য স্বয়ং সম্পূর্ণ। তবুও আমরা অবহেলিত। এখনো আমাদের প্রতিটি ঘরে গ্যাস নাই। প্রতিটি বাড়িতে দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি। ভোলা বরিশাল সেতু অতিগুরুত্বপূর্ণ। এখন পর্যন্ত তা নির্মাণ করা হয়নি। চারদিকে নদী তবুও নানা সংগ্রাম করে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করছে। তবে অনেকের সম্ভব হচ্ছে না। উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি মেডিকেল কলেজ দরকার।
মীর জসিম বলেন, আজকের এই সমাবেশ মেডিকেল কলেজ, সেতু ও গ্যাসের দাবি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো।