আ.লীগে যোগ দিলে আগুন সন্ত্রাসী ফেরেশতা হয়ে যায়: সাকি
আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) পল্টন মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘আগুন সন্ত্রাসী হয়েও ফেরেশতা হওয়া যায়। এটা প্রমাণ করে দিয়েছেন ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। যতগুলো মামলা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে করা হয়েছে। সবগুলো মামলা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের বিরুদ্ধেও করা হয়েছে। গাড়ি পুঁড়ানোর মামলায় যারা অভিযুক্ত হন, আওয়ামী লীগ তাদেরকে আগুন সন্ত্রাসী বলে। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগ দিলে আগুন সন্ত্রাসী ফেরেশতা হয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘এই ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর আগুন সন্ত্রাসী ছিলেন তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার সাথে সাথে ফেরেশতা হয়ে গেছেন। এখন উনি আর জঙ্গি সন্ত্রাসী নন। তারপরে তার জামিন কিভাবে হয় তাও আপনারা দেখলেন। আর আওয়ামী লীগের টিকেট কিভাবে পাওয়া যায়। এই আওয়ামী লীগের ভাষায় তথাকথিত আগুন সন্ত্রাসী এরা যদি আওয়ামী লীগে যোগ দেয় সবাই ফেরেশতা হয়ে যাবে।’
আজ বুধবার (৬ ডিসেম্বর) পল্টন মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে জেনারেল এরশাদকে অভিযুক্ত করা হতো তিনি রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কেনা-বেচা করছেন, তিনি রাজনীতিকে দুষিত করছেন। আওয়ামী লীগের অনেক নেতা জেনারেল এরশাদের সময়ে এভাবে রাজনীতির কেনা-বেচার শিকার হয়েছিলেন। কোরবান আলী থেকে শুরু করে অনেক। আজকে আওয়ামী লীগ সেই সামরিক স্বৈরাচারের সমস্ত পথ আরো ব্যাপকভাবে তারা কাজে লাগাচ্ছেন।’
‘রাজনীতি দুষিত করে পুরো রাজনৈতিক একটা প্রক্রিয়া, রাজনৈতিক একটা ব্যবস্থাকে তারা পুরোপুরি কবর দেয়ার ব্যবস্থা করছেন। বাংলাদেশ থেকে রাজনীতিকে উঠিয়ে দিয়ে বিরাজনীতিকরণ করে গণতন্ত্রকে ধবংস করে ওরা মিথ্যাচার-প্রতারণাকে একমাত্র অবলম্বন করেছেন। গতকাল ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, তারা নাকি গণতন্ত্রকে ত্রুটিমুক্ত করছে। এর চাইতে মিথ্যা কথা, এর চাইতে বড় প্রতারণা আর কোনো কিছু হতে পারে না।’
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এই একতরফা নির্বাচনে জনগন ভোট দেবে না। যে নির্বাচনে জানি কোন দল জিতবে। এই নির্বাচনে কে জিতবে আমরা সবাই জানি না? আওয়ামী লীগ জিতবে। জিতলে কে প্রধানমন্ত্রী হবে আমরা সবাই জানি না? শেখ হাসিনা হবে। তাহলে এই নির্বাচনে ভোট দেয়ার কোনো দরকার আছে?’
‘বাংলাদেশের কোনো মানুষ ভোট দিতে যাবে, কোনো দেশপ্রেমিক এই নির্বাচনে ভোট দিতে যেতে পারে? বাংলাদেশের কোনো দেশপ্রেমিক মানুষ এরকম একটি ভুয়া নির্বাচন ভোট দিতে যেতে পারে না। সেই কারণে বলি, জনগণকে আহ্বান জানাই এই ভোট বর্জন করুন। আপনার নিরব অবস্থান থেকেও যে প্রতিবাদ আপনি করতে পারেন সেটা করুন। নিজের নৈতিক কর্তব্য এদেশের প্রতি কর্তব্য আপনারা পালন করবেন।’ গণতন্ত্র মঞ্চ জনগণকে নিয়ে এই সরকার পতনের আন্দোলনে থাকবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, একতরফা’ নির্বাচনের নামে সরকার দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সাইফুল হক বলেন, ‘বলতে চাই, আপনারা যেভাবে দেশকে নিয়ে যাচ্ছেন, দেশটাকে যেভাবে মগের মল্লুক বানিয়ে দিয়েছেন। পুরোপুরি আপনারা (সরকার) একটা আফ্রিকার কার্যত একটা গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়ার পায়তারা ইতিমধ্যে শুরু করেছেন। এই খেলাটা বন্ধ করেন।’
সাইফুল হক বলেন, ‘এই নির্বাচন বাংলাদেশে নির্বাচন কেন্দ্রিক যে সংকট। একটা জবরদস্তিমূলক করে নির্বাচন করতে যেয়ে আপনারা (ক্ষমতাসীন সরকার) গ্রামকে ভাগ করে ফেলেছেন, ঘরে ঘরে আপনারা হামলা করছেন, আপনারা বাড়িতে বাড়িতে হামলা করছেন, আপনারা সমস্ত জনপদকে একটা সন্ত্রাসের ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে কোটি কোটি মানুষকে নির্ঘুম রাত যাপনে আপনারা বাধ্য করছেন। এর নাম নাকি গণতন্ত্র।’
‘কথা খুব পরিস্কার ’১৪ ও ’১৮ সালের মতো আরেকটা তামাশার নির্বাচন কোনভাবে এ দেশের মানুষ বরদাশত করবে না। নির্বাচন কমিশনকে বলতে চাই, এই নির্বাচন নির্বাচন খেলাটা বন্ধ করেন, এখনো সময় আছে পরিস্কার অবস্থান নেন। বাংলাদেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে কোনো জাতীয় নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এ কথা সরকারকে জানিয়ে দেন। সরকার যদি সিদা পথে না হাটে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে আপনারা পদত্যাগ করে আপনারা আপনাদের ওপর সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করেন।’ যোগ করেন সাইফুল।
‘অন্যথায় দেশে বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সরকারের একটা সহযোগী হিসেবে গণবিরোধী শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করবে’। বলে মন্তব্য করেন তিনি। গণতন্ত্র হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত আওয়ামী লীগ ৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্র দিবস পালনের কঠোর সমালোচনা করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক।
নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারের সভাপতিত্বে নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাখখারুল ইসলাম নবাবের সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, এসএম শামসুল আলম নিক্সন, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের দিদারুল ভুঁইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।