আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র সংঘর্ষে হবিগঞ্জ রণক্ষেত্র
বিকাল পাঁচটা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা চলা সংঘর্ষে শহরের শায়েস্তানগর ও সার্কিট হাউজ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
প্রথম নিউজ, হবিগঞ্জ: জেলা শহরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে রোববার। বিকাল পাঁচটা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা চলা সংঘর্ষে শহরের শায়েস্তানগর ও সার্কিট হাউজ এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ কাঁদানে ও রাবার বুলেট ছুড়ে। আগের দিন পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়াবহ সংঘর্ষের রেশ কাটতে না কাটতেই রোববার এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শায়েস্তানগরস্থ বিএনপি অফিসের সামনে বিএনপি ও থানা মোড়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা অবস্থান করছিল। মাঝখানে পুলিশ মাইকিং করে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকতে আহ্বান জানায়।
স্থানীয়রা জানান, শনিবারের পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষের ঘটনার জেরে শায়েস্তানগর এলাকায় রোববার বিক্ষোভ সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। এ কর্মসূচি চলাকালে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের একদল নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর শুরু করে। এ খবর পেয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রতিরোধ শুরু করেন। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিএনপি নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে থানা মোড় পর্যন্ত নিয়ে যান। এভাবে কয়েক দফা ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে নিরাপদে সরে যান। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের কারণে ব্যবসায়ী ও অনেক সাধারণ পথচারী অসুস্থ হয়ে পড়েন। সংঘর্ষে গুরুতর আহত আওয়ামী লীগের অন্তত ২০ জনকে হবিগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে আহত বিএনপি সমর্থক অনেকে গ্রেপ্তার এড়াতে বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ঘটনার বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক মেয়র জি কে গউছ জানান, শনিবারের সংঘর্ষের পর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে পুলিশি হয়রানী চলছে। রোববার বিকালে বিনা উস্কানীতে পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ব্যাপক ভাংচুর করেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর চৌধুরী বলেন, শনিবার বিএনপি বিনা কারণে পুলিশের উপর হামলা করেছে। তাদের আক্রমণে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ওসিসহ ৩০ জন পুলিশ আহত হয়েছেন। বিএনপির এ নৈরাজ্যের প্রতিবাদে আজ আমাদের শান্তিপূর্ণ সভা ছিল। বিএনপির কর্মীরা তাদের অফিসের সামনে থেকে হামলা করে। এতে আমাদের শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।