হেমোরেজিক ফিভার ও শক সিনড্রোমে বেশি মৃত্যু: স্বাস্থ্যের ডিজি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহম্মদ খুরশীদ আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

হেমোরেজিক ফিভার ও শক সিনড্রোমে বেশি মৃত্যু: স্বাস্থ্যের ডিজি

প্রথম নিউজ, ঢাকা: চলতি বছর এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শনিবার (১০ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহম্মদ খুরশীদ আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।

খুরশিদ আলম বলেন, ‘আমরা ক্লিনিক্যাললি তাদের মৃত্যুর কারণ জানার চেষ্টা করেছি। আমাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত মৃতদের প্রায় প্রত্যেকে ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অন্য আরও কারণ থাকতে পারে, যা জানার জন্য অটোপসি করা প্রয়োজন। কিন্তু তা পরিবার অনুমোদন দেবে না। আর এটা সাধারণ প্র্যাকটিসও নয়।’

স্বাস্থ্যের ডিজি জানান, চলতি বছর ঢাকার বাইরে তেমন রোগী ভর্তি নেই। বেশিরভাগ রোগী রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে বর্তমানে সর্বোচ্চ ১৪৭ জন রোগী মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি। সারাদেশে রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও আমরা সারাদেশের সব হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছি। এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সংশোধিত গাইডলাইন প্রত্যেক হাসপাতালে সরবরাহ করা হয়েছে। হাসপাতালগুলোর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক, ওষুধসহ সবকিছু সরবরাহ করা হচ্ছে।

পরীক্ষার বিষয়ে ঘাটতি রয়েছে কি না জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, যারা আমাদের কাছে আসছে তাদের ডায়াগনোসিস করা হচ্ছে৷ যারা আসছে না তাদের তো করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আমরা সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছি। গণমাধ্যমসহ সবাইকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। জ্বর হলে তারা যেন ডেঙ্গু পরীক্ষা করান।

তিনি আরও বলেন, প্রত্যেক বিভাগে ডেঙ্গু চিকিৎসায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে মশা নিধন করাটা সব থেকে জরুরি। সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগসহ সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটি সফল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রত্যেক হাসপাতালে মশারি সরবরাহ করা হচ্ছে; তবে রোগীরা মশারির ভেতর থাকছেন না বলেও জানান তিনি।

হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার পরিচালক শেইখ দাউদ আদনান জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষায় গুরুত্ব দিতে সব হাসপাতালকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। এক্ষেত্রে আমাদের গত বছরই পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যেক হাসপাতলে গাইডলাইন সরবরাহ করা হয়েছে। রোগীদের জন্য মশারি নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু রোগীরা মশারির ভেতর থাকছেন না। চিকিৎসক আসলে তারা মশারির ভেতর থাকছেন, বাকি সময়টা বাইরে থাকছেন। রোগীদের মশারির ভেতরে রাখার বিষয়ে পুলিশিং ব্যবস্থা আমাদের নেই। এ বিষয়ে আমাদের রোগীদেরই সচেতন হতে হবে।

এ সময় ডেঙ্গু জ্বর থেকে সুস্থ হওয়ার পর রোগীদের জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। ডেঙ্গু রোগীদের সব তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য ও ডেঙ্গুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রোগীদের তথ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালগুলোকে আগত রোগীদের মোবাইল নাম্বার ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গু ব্রিফিংয়ের আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এখন থেকে রাজধানীর ৫৩টি ডেডিকেটেড হাসপাতালের সঙ্গে আরও ৩২টি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৮৫টি হাসপাতালের তথ্য তুলে ধরা হবে।