সায়ানাইড দিয়ে ১২ বন্ধুকে হত্যা, নারী গ্রেপ্তার
সম্প্রতি তার এক বন্ধুর মৃত্যুর পর তদন্ত করতে গিয়ে এই ভয়াবহ নারীর মুখোশ উন্মোচন করতে পারে পুলিশ। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক : ১২ বন্ধু ও পরিচিতকে হত্যার দায়ে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে থাইল্যান্ডের পুলিশ। তাদেরকে হত্যায় সায়ানাইড ব্যবহার করেছেন ওই নারী। ওই নারীর নাম সররত রংসিউথাপর্ন। সম্প্রতি তার এক বন্ধুর মৃত্যুর পর তদন্ত করতে গিয়ে এই ভয়াবহ নারীর মুখোশ উন্মোচন করতে পারে পুলিশ। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে জানানো হয়, এ মাসের শুরুতেই সররতের সাথে বেড়াতে গিয়েছিল তার এক বন্ধু। নিহতের পরিবার তখন সন্দেহ করে যে তাদের মেয়ের মৃত্যুর পেছনে আছে সররত। এরই প্রেক্ষিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এতে সে স্বীকার করেছে যে, এভাবে মোট ১১ জনকে হত্যা করেছে সে। এরমধ্যে আছে তার এক প্রাক্তন প্রেমিকও। মূলত আর্থিক কারণেই সে এদেরকে হত্যা করেছে।
সররত সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে বলে জানা গেছে। থাই কর্তৃপক্ষ তার জামিন অস্বীকার করেছে।
দুই সপ্তাহ আগে সে তার বন্ধুর সাথে ব্যাংককের পশ্চিমে রাচাবুরি প্রদেশে গিয়েছিল। যেখানে তারা একটি নদীর তীরে বৌদ্ধ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরই তার বন্ধু সিরিপর্ন খানওং নদীতীরে হঠাৎ করেই পড়ে যায় এবং মৃত্যুবরণ করে। ময়নাতদন্তের সময় তার শরীরে সায়ানাইডের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সররত শুধু তাকে হত্যাই করেনি, তার দামি মোবাইল, টাকা ও ব্যাগও লুকিয়ে ফেলেছিল।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার হাতে খুন হওয়া অন্যদেরও একই পদ্ধতিতে হত্যা করে সে। যদিও সেসব হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। জানা গেছে, ২০২০ সালে প্রথম হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় সে। তার শিকারদের সবাইই তার পরিচিত এবং বন্ধু। আছেন এক প্রাক্তন প্রেমিকও। পুলিশ জানিয়েছে, সররত ভুক্তভোগীদের সবাইকে চিনত এবং সে আর্থিক কারণেই তাদেরকে হত্যা করেছে।
এরমধ্যে এক বন্ধুর থেকে সররত ২ লাখ ৫০ হাজার বাথ ধার নিয়েছিল। অর্থ ফেরত না দেয়ার লক্ষ্যে তাকেও হত্যা করার চেষ্টা করে সররত । সররতের সাথে দুপুরের খাবার খাওয়ার পর ওই নারী বমি করে অজ্ঞান হয়ে যান। তবে তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। তবে তার হাতে খুন হওয়া অন্যদের আত্মীয়রা জানিয়েছেন, মৃত্যুর পর তাদের গয়না ও নগদ অর্থ হারিয়ে গিয়েছিল। যদিও পরিবারগুলি প্রথমেই বুঝতে পারেনি যে এটা একটা হত্যাকাণ্ড হতে পারে।
এখন তার বিরুদ্ধে তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা চলছে। অনেক মরদেহ দাহ করা হয়েছিল। ফলে সেগুলো থেকে সায়ানাইডের প্রমাণ পাওয়া সম্ভব নয়। যদিও কবর দেয়া হলে মৃত্যুর কয়েক মাস পরেও মৃতদেহের মধ্যে সায়ানাইড সনাক্ত করা যায়। শরীরে সায়ানাইড প্রয়োগে হার্ট এটাকে আক্রান্ত হন মানুষ। এক পর্যায়ে বমি করতে করতে তাদের মৃত্যু হয়। থাইল্যান্ডে সায়ানাইড বিষ পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য। অবৈধভাবে সায়ানাইড রাখলে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে দেশটিতে।