সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন: আগামী জাতীয় নির্বাচনের মহড়া
বাংলাদেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে অনেক আগেই। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে বিশিষ্ট নাগরিকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ।
রাশেদুল হক, প্রথম নিউজ:নির্বাচনী ব্যবস্থা হলো সাংবিধানিক নিয়ম অনুসরণ করে জনগণের মতামত জানাবার ব্যবস্থা। ভোট একটি দেশের জনগনের অন্যতম গণতান্ত্রিক অধিকার। এর মাধ্যমে জনগণ কোনো ব্যক্তি ও রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় আসার জন্য নির্বাচিত করে। স্বচ্ছ্বতা ও দায়বদ্ধতাকে গনতন্ত্রের একটা স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এজন্য অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন রাজনৈতিক-গণতন্ত্রের একটি আবশ্যিক পূর্বশর্ত। যে ধরনের নির্বাচনী ব্যবস্থাই অনুসরণ করা হোক না কেন তাতে জনগণের অবাধ-ভোটাধিকার প্রয়োগ ও ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করা নির্বাচনের প্রাথমিক ও মৌলিক উপাদান। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের অবাধ ভোটাধিকার প্রয়োগ ও ভোটের মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত ইচ্ছা ও মতামতের প্রতিফলন কী ঘটে? স্থানীয় নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় নির্বাচন কোথাও কী জনগণের ভোটাধিকার আছে? অথচ গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে অনেক আগেই। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে বিশিষ্ট নাগরিকেরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ।
১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা লাভের পর পছন্দের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে হেলিকপ্টারে করে ব্যালট পেপার ঢাকায় আনার ঘটনা মানুষ ভুলে যায়নি, মুলত সেখান থেকেই নির্বাচনে হস্তক্ষেপ শুরু। তারপর একদলীয় বাকশালের মাধ্যমেতো নির্বাচনী ব্যবস্থাই তুলে দেয়া হয়েছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে মানুষের ভোটের অধিকার ও বহু দলীয় গনতন্ত্র ফিরিয়ে দেন। তারপর এরশাদ সরকার আবার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ বছর লড়াই করে এরশাদ সরকারের পতন ঘটানো হয়। ১৯৯১ সালে সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে আবার গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনের পর আবারও দেশে গণতন্ত্র হোঁচট খায়। ২০০৯ সালে সেনাসমর্থিত সরকারের সর্মথনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলেও ২০১৪ সালের ৫জানুয়ারীর বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার একতরফা নির্বাচনে ভোট দিতে হয়নি জনগণকে। এরপর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, মেয়র নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনেও জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারেনি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয় সরকার দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করতে। বিগত ১৪ বছরের অধিক সময় ধরে গুম, খুন, বিচারবহির্ভত হত্যা, মিথ্যা গায়েবি মামলার হিড়িক চলে। মামলা থেকে বাদ যায়নি কবর বাসীও। বিগত বছর গুলোতে দেখা যায় কোন নির্বাচনে প্রার্থী হতে গেলে প্রথমে নমিনেশন কিনতে বাধা দেওয়া হয়েছে, নমিনেশন জমা দিতে গেলে হামলা হয়েছে, নমিনেশন জমা দিলে নির্বাচন কর্মকর্তারা বিনা কারণে তা বাতিল করেছে, নির্বচনী প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে, ভোটের আগে প্রার্থী ও তার সমর্থকদের এলাকা ছাড়া করা হয়েছে, নির্বাচন কেন্দ্রে এজেন্ট ঢুকতে দেওয়া হয়নি, কারা কারা এজেন্ট হবে তার তালিকা করে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তারপরও কেউ এজেন্ট হতে চাইলে দেখা গেছে তাকে তুলে নিয়ে নেওয়া হয়েছে, পরে এদের সন্ধ্যান মিলছে কারাগারে বা দুরে কোন জায়গায়। ভোট কেন্দ্র দখল করে দলীয় লোকেরাই ভোট মেরে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করে দিয়েছে। জনগণ ভোট দিতে গেলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনও দেখা গেছে সরকার দলীয় লোক না হলে বিজয়ী হলেও পরাজিত প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সর্বশেষ দেখা গেল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট বারের অভিনব নির্বাচন। আওয়ামী লীগের বদৌলতে নির্বাচনের নতুন নতুন কত যে স্টাইল দেখতে পেরেছে বাংলাদেশের মানুষ। গত দুই দিনে আদালত প্রাঙ্গণে যা ঘটেছে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে এ এক নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। প্রতিপক্ষ আইনজীবীদের ওপর সরকার দলীয় আইনজীবী ও পুলিশের হামলা, সাংবাদিকদের মারধর। রাতে ভোট দেয়ার অভিযোগ। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মতো ঘটনার মধ্যদিয়ে গতকাল শেষ হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন। আওয়ামী লীগপন্থি আইনজীবীদের সাদা প্যানেলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে হওয়া নির্বাচন একতরফাভাবে হয়েছে। এতে ভোট দেননি বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের নীল প্যানেলের কেউ। ভোট দেন নি সাধারণ ভোটাররাও। ভোটে ছিল না কোনো উৎসবের আমেজ। উদ্বেগ, শঙ্কা আর পাল্টাপাল্টির মধ্যে কেটেছে ভোটের দুইদিন। তাই ভোটগ্রহণ শেষে ফল নিয়েও ছিল না কারও কোনো আগ্রহ। নির্বাচনকে ঘিরে হয়ে যাওয়া সংঘাতের পর নিন্দার ঝড় বইছে সর্বত্র। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আইনজীবী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের হামলা এবং একতরফা ভোটের ঘটনায় সাধারণ মানুষও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। অভিনব এ ভোট ডাকাতির খবর দেশ ছাড়িয়ে তা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। মানুষ বলতে শুরু করেছেন সুপ্রিম কোর্টের নির্বাচন হলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের মহড়া মাত্র। এটি আগামী নির্বাচনের নতুন ম্যাসেজ।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে, হামলা করে, মারধর করে, মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে, নির্যাতন করে, ভোটারদের ভোট কেন্দ্র থেকে বিতারিত করে একতরফাভাবে কিভাবে সরকার দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করা যায় সেটা দেখা গেছে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের হামলার শিকার হয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন ১০-১২জন সাংবাদিক।
সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচন পরিচালনাকে ঘিরে পুলিশের হামলাসহ বুধবার ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন ৮ সদস্যের আপিল বিভাগে তুলে ধরেছেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতকে বলেন, বুধবার আদালত প্রাঙ্গণে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে, যা আজও চলমান। আমাদের অনেকের রুমে তালা লাগানো আছে, অনেকের রুমের চারপাশে পুলিশ দেয়া হয়েছে। বাইরে থেকে এ ঘটনার পেছনে কেউ আছে কিনা, তা দেখতে হবে। এই অঙ্গনে এটা কি অনুমোদিত? তারা সমিতির জ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নির্যাতন করেছে। আমরা সুরক্ষা চাই। বিএনপি প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আপনারা দেশের বিচার বিভাগের অভিভাবক। সমিতির নির্বাচন হয় সব সময় উৎসবমুখর। তবে এবার কী হলো? আজও আমি রুমে ঢুকতে পারিনি। রুমের বাইরে থেকে তালা লাগানো। কক্ষের সামনে পুলিশ রয়েছে। হাজার হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। অনেক আইনজীবী আহত হয়েছেন। পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। গতকালের ঘটনা দেখেছেন, পুলিশ কীভাবে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বের করে দিয়েছে। আমরা কী অপরাধ করেছি? আমি প্রার্থী, আমি কেন ভোটকেন্দ্রে থাকতে পারবো না? বেশ কয়েকটি পত্রিকা আদালতে উপস্থাপন করে রুহুল কুদ্দুস বলেন, ‘আপনারা এ অঙ্গনের অভিভাবক। আপনারা দেখেন। বিচারপতি মনসুরুল হক চৌধুরীকে প্রধান করে সর্বসম্মতিক্রমে একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি করা হয়। ১৩ই মার্চ সন্ধ্যায় প্রার্থী পরিচিতি সভায় তিনি দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু হঠাৎ কী হলো! তিনি পদত্যাগ করলেন। তিনি ফোনে আমাকে জানিয়েছেন, বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক তাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন। তারা আলাদা ব্যালট পেপার তৈরি করে যেভাবে বলবে, সেভাবে কাজ করতে বলেছে। তাই উনি পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগের পর এখন সর্বসম্মতিক্রমে নতুন পরিচালনা কমিটি গঠন করতে হবে। তবে তা না করেই তারা ভোট গ্রহণ শুরু করেছে। নির্বাচনে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে ঘায়েল করতে মামলা করা হয়েছে। রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বুধবার রাতে মো. মনিরুজ্জামান (নির্বাচন উপ-কমিটির আহ্বায়ক) সাহেব বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। আমাকে ও সভাপতি প্রার্থীসহ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় আরেকটি মামলা করেছে সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে দিয়ে। সেখানে সমিতির বর্তমান কমিটির ৬ জন সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আপনাদের সবাইকে সম্মান করি। আপনারা ২ জন ১১টার সময় আসেন। কোনো করণীয় থাকলে করবো। প্রয়োজনে অ্যাটর্নি জেনারেলকেও ডেকে নেবো। সমিতির সভাপতি পদপ্রার্থী মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, নজিরবিহীন ঘটনা। ভোটকেন্দ্রে ৩০০ থেকে ৪০০ পুলিশ ঢুকে ধাক্কা দিতে থাকে। সবাই পড়ে যাচ্ছিল আর পুলিশ পা দিয়ে পাড়িয়েছে। আমার পায়ে ব্যথা। আমি ঠিকমতো দাঁড়াতে পারছি না। অনেক আইনজীবী ও সাংবাদিককে আহত করা হয়েছে। একপর্যায়ে রুমের তালা খুলে দেয়ার ও পুলিশ সরানোর আরজি জানান রুহুল কুদ্দুস। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, কোর্টে বসে এটি বললে আদেশ হয়ে যাবে। ১১টায় আসেন, শুনি।
প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের ৭ বিচারপতির সঙ্গে দেখা করার পর বেলা সোয়া একটার দিকে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি একটি বেসরকারি সংগঠন। এখানে প্রধান বিচারপতির কিছু করার নেই। এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, প্রধান বিচারপতি তাকে ডেকেছিলেন। ওনার কক্ষে গিয়েছিলাম। তখন আপিল বিভাগের বিচারপতিরা বসে ছিলেন। ওনারা আমাকে জানান, বিএনপি থেকে সমিতির বর্তমান সভাপতি ও সম্পাদক প্রার্থী কথা বলতে গিয়েছিলেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন, এটি সমিতির বিষয়, আমাদের করণীয় নেই। প্রধান বিচারপতির এখানে কিছু করার নেই। এটি আপনারা যারা এ বিষয়ে বিজ্ঞ ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সবাই মিলে পরিবেশ সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করেন। যেহেতু এটি প্রাইভেট সংগঠন, সমিতির বিষয়। প্রধান বিচারপতির কিছু করার নেই।
এ বিষেয়ে সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট, আইনজীবী, বিচারপতি, প্রধান বিচারপতির ভূমিকা রাখার সুযোগ ছিল। প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের কোনো একটি বেঞ্চকে দিয়ে শুনানির ব্যবস্থা করতে পারতেন। হাইকোর্ট সুয়োমোটো রুল ইস্যু করতে পারতেন। হাইকোর্ট ডিভিশনের প্রত্যেক বিচারপতির এই এখতিয়ার আছে। বার একটা বেসরকারি সংগঠন। প্রধান বিচারপতির কিছু করার নেই বলে জানিয়ে দিলেন। কিন্তু আমি বলবো তার করার আছে। বার সুপ্রিম কোর্টেরই প্রমিসেস। তারপরেও ধরলাম ওটা সুপ্রিম কোর্টের অংশ নয়। কিন্তু তিনি তো বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি। তিনি দেশের যেখানেই অন্যায় হবে, অনিয়ম হবে। তার ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা রাখেন। মনে রাখতে হবে-এটা হয়েছে কোথায়? বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে, সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের নির্বাচনে। এখানে যদি কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে সারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে? বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে, সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের নির্বাচনে যদি কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে সারা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কীভাবে হবে?
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আইনজীবীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় একটি সংগঠন। ঐতিহ্যবাহী এই সংগঠনের একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। এ সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন দেশের বড় বড় আইনজীবী। তখন দলমত নির্বিশেষে সুপ্রিম কোর্ট বারের বিষয়ে সবাই এক ছিলেন। সে সময় বারের নেতাদের মধ্যে ভিন্ন মতালম্বীদের মধ্যেও সুসম্পর্ক ছিল। একে অপরকে সাংঘাতিক শ্রদ্ধা করতো। এখন একটু ভাটা পড়েছে। তাই বারের নেতাদের আগের ঐতিহ্যর কথা স্মরণ করে দু’পক্ষকেই সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। শফিক আহমেদ বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত ২ বছর ধরে সুপ্রিম কোর্ট বারে অনৈক্য দেখছি। যেসব অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, দেশে যে গণতন্ত্রের অভাব এর প্রতিফলন হলো সুপ্রিম কোর্টে সাম্প্রতিককালের নির্বাচন। সুপ্রিম কোর্ট বারের গত ২ নির্বাচন দেখে মনে হচ্ছে, বারের নির্বাচনের জন্য ২-৩ সপ্তাহের জন্য একটা তত্ত্বাবধায়ক নির্বাচনী ব্যবস্থা দরকার। বিদ্যমান অবস্থায় আর সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, বিগত দিনে বারের নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল বলে মনে হয় না। সবসময় সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন হয়েছে। এখন দেশে গণতন্ত্রহীনতার প্রভাব বিরাজ করছে। সুপ্রিম কোর্টও সেই প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। এটা এখন স্পষ্ট।