সেনবাগে এমপি মোরশেদ আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
আবু জাফর টিপু বলেন, তিনি (এমপি মোরশেদ আলম) টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের কমিটি দিচ্ছেন। তিনি ঘুষ, দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত।
প্রথম নিউজ, নোয়াখালী: অর্থের বিনিময়ে ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি দেওয়াসহ নানান অভিযোগ তুলে নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) আসনের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ শনিবার (১৩ মে) দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগে ঈদ পরবর্তী তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে এ ঘোষণা দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আবু জাফর টিপু।
এ সময় আবু জাফর টিপু বলেন, তিনি (এমপি মোরশেদ আলম) টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগের কমিটি দিচ্ছেন। তিনি ঘুষ, দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজির সঙ্গে জড়িত। তিনি ফ্রিডম পার্টি থেকে এসে আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছেন। আমি নিজেই নৌকা পেয়েছিলাম কিন্তু তিনি ফ্রিডম পার্টির লোক দিয়ে সেনবাগ পৌরসভায় নৌকাকে হারিয়েছেন। আমরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের কাছে অনুরোধ করছি, এই হাইব্রিড এমপিকে আগামীতে যেন মনোনয়ন না দেওয়া হয়। নৌকার মাঝির পরিবর্তন চাই। তিনি যদি আগামীতে মনোনয়ন পান তাহলে তৃণমূলের কেউ আগামীতে নির্বাচনে অংশ নেবে না।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভুঁইয়া মানিক বলেন, তিনি (এমপি মোরশেদ আলম) মনোনয়ন পাওয়ার পর এই সমাবেশস্থল থেকে মানুষের সেবা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অথচ তিনি কোনো কথা রাখেননি। তিনি আমাদের বলেন, আমরা কে? অথচ তিনি আমাদের দিয়েই ক্ষমতায় বসেছেন। এখন আমাদের চিনেন না।
ADVERTISEMENT
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপদেষ্টা অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ এফসিএ বলেন, মোরশেদ আলম তার সন্তান-স্ত্রী দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি পদ নিয়ে বাণিজ্য করছেন। লাখ লাখ টাকা নিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ আজ তার কাছে জিম্মি। তার অনিয়মের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আজ তৃণমূল ঐক্যবদ্ধ।
মতবিনিময় সভার সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ জাফর আহমেদ চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলে ক্ষোভ রয়েছে। আর এসব অনিয়ম মানা যাবে না। আমরা প্রতিবাদ জানাই। তিনি কোরআনের ভুল ব্যাখ্যা দেন। আমরা তারও প্রতিবাদ জানাই।
অভিযোগ ও অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিষয়ে এমপি মোরশেদ আলমকে একাধিকবার কল ও ফোনে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শিহাব উদ্দিন শিহাব, সেনবাগ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুজ্জামান চৌধুরী, সেনবাগ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল আজীম চৌধুরী মানিক, সেনবাগ উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নুর নবী চিশতী, ৬নং কাবিলপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন লিটন, সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কামরুজ্জামান বাবলু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলাম ফরহাদ, উপজেলা যুবলীগ নেতা আবদুর রাজ্জাক, পৌর যুবলীগের আহ্বায়ক দিদারুল ইসলাম দিদার প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এ সময় উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের তৃণমূল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।