সুদানে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত ৩৩
স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ব্লু নাইল রাজ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে সুদান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, সংঘর্ষের পর বহু পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
প্রথম নিউজ, ডেস্ক: উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৩৩ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১০৮ জন। স্থানীয় সময় শনিবার দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ব্লু নাইল রাজ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে সুদান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপি বলেছে, সংঘর্ষের পর বহু পরিবার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।
সুদানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বার্টি এবং হাওসা নামের দুটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী দলের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত সোমবারে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। এ কয়দিনে তারা ১৬টি দোকানে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
আল-রোজারেস শহরের স্থানীয় কর্মকর্তা আদেল আগর এএফপিকে বলেছেন, ‘এসব সহিংসতায় বহু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। অনেকে প্রাণভয়ে থানায় আশ্রয় নিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের আরও সৈন্য প্রয়োজন।’ সহিংসতার অবসানে জরুরি ভিত্তিতে মধ্যস্থতাকারী প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
আদেল আগর আরও জানান, অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে সেখানে সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং শনিবার থেকে এক রাতের কারফিউ জারি করা হয়েছে। ব্লু নাইলের গভর্নর আহমেদ আল-ওমদা শুক্রবার এক মাসের জন্য ওই এলাকায় কোনো সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ করার আদেশ জারি করেছেন।
হাওসা নৃ-গোষ্ঠীর একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছেন, জমি সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব মেটাতে ‘একটি বেসামরিক কর্তৃপক্ষ’ গঠনের অনুরোধ করেছিল বার্টি। কিন্তু হাওসা সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে হাওসার এক সদস্য বলেছেন, বার্টিরা তাদের জমি দখল করতে গেলে তারা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছে। এতে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
আল-রোজারেস হাসপাতালের একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, হাসপাতালে আহতদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রচুর রক্তদাতা প্রয়োজন। প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জামও ফুরিয়ে গেছে।
সুদানে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি ভলকার পার্থেস সব পক্ষকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এক টুইটার পোস্টে তিনি বলেছেন, ‘সুদানের ব্লু নাইল অঞ্চলে আন্তঃসাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও প্রাণহানি খুবই দুঃখজনক ঘটনা। একই সঙ্গে উদ্বেগজনক।’
ব্লু নাইল রাজ্যের গভর্নর ওমদা বলেছেন, কিসান অঞ্চলে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে আল-রোজারেস অঞ্চলে সহিংসতা এখনো চলছে।
কিসান অঞ্চল এবং ব্লু নাইল রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে অস্থিরতা চলছে। সুদানের সাবেক শক্তিশালী প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির ২০১৯ সালে সেনাবাহিনী দ্বারা ক্ষমতাচ্যুত হন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে গত বছরের অভ্যুত্থানের পর নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে সহিংসতার পুনরুত্থান ঘটেছে। সুদান এমন একটি দেশ, যেখানে ভূমি, পশুসম্পদ, পানির প্রবেশাধিকার ও গোচারণভূমিকে কেন্দ্র করে নিয়মিত সংঘর্ষ হয়।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews