সেতু নির্মাণে বাড়তি যানবাহনের প্রস্তাব, তেল-গ্যাসেই ব্যয় ১১ কোটি
দেশব্যাপী ১৩ হাজার কালভার্ট-সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ১২টিসহ বাড়তি ২৭টি যানবাহনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব যানবাহন সচল রাখতে ১১ কোটি ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার তেল, গ্যাস ও লুব্রিকেট প্রয়োজন হবে।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: দেশব্যাপী ১৩ হাজার কালভার্ট-সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ১২টিসহ বাড়তি ২৭টি যানবাহনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব যানবাহন সচল রাখতে ১১ কোটি ৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকার তেল, গ্যাস ও লুব্রিকেট প্রয়োজন হবে। দুই বছরের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের এমন প্রস্তাবনায় ব্যাখ্যা চেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এটাসহ গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত প্রকল্পে ২৭টি যানবাহন ও ৪৯২টি মোটরসাইকেল সচল রাখার স্বার্থে জ্বালানি ও সংরক্ষণ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু মূল প্রকল্পে ১৫টি যানবাহন (জিপ ১১টি, পিকআপ দুটি এবং মাইক্রোবাস দুটি) ও ৫০০টি মোটরসাইকেলের জ্বালানি ব্যয়ের সংস্থান রাখা ছিল।
বাড়তি ১২টি যানবাহন ও ৪৯২টি মোটরসাইকেলের প্রাপ্তি, পরিচালনা ব্যয় সুস্পষ্টভাবে কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন। প্রস্তাবিত প্রকল্পে সাব-সয়েল ইনভেস্টিগেশন খাতে ২০ কোটি ৭২ লাখ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে, এ সম্পর্কে ডিপিপিতে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করা হয়নি। প্রকল্পে বাড়তি গাড়ি ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া জ্বালানি খরচ ১১ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের বলেছি, এটা যুক্তিসঙ্গত করতে। ১৫ মিটারের জায়গায় ২০ মিটার কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করেছিল। এটা আমরা না করে দিয়েছি। এছাড়া টাকা সাশ্রয়ের জন্য সেমিনার বাদ দিতে বলা হয়েছে প্রকল্পের আওতায়। বিষয়গুলো যুক্তিসঙ্গত করে নিয়ে এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে ‘১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কালভার্ট নির্মাণ’ প্রকল্পের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, নতুন করে প্রকল্পের আওতায় ২৭টি যানবাহন ও ৪৯২টি মোটরসাইকেল সচল রাখতে ১১ কোটি ৯ লাখ টাকার জ্বালানি খরচ চেয়েছি। আগামী দুই বছরের জন্য এই ব্যয় চাওয়া হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুই বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেছি। যদি আমাদের আবেদন মঞ্জুর হয় তবে দুই বছরের জন্যই এটা হবে। প্রকল্পের কিছু বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন ব্যাখ্যা চেয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাবে মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, যদি কমিশন ব্যাখ্যা চায় তবে আমরা ব্যাখ্যা দেবো।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে সেতু/কালভার্টের উভয় পাশে অ্যাপ্রোচের মাটি যথাস্থানে ধরে রাখার প্রয়োজনে ১৫ মিটার করে মোট ৩০ মিটার এইচবিবি গাইডওয়াল, রিটেইনিং ওয়াল, সিসি ব্লক-প্লেট নির্মাণে সংস্থান রাখা হয়েছে। কিন্তু কী পরিমাণ এইচবিবি গাইডওয়াল, রিটেইনিং ওয়াল, সিসি ব্লক-প্লেট নির্মাণ করা হবে, ব্যয় কত হবে এ বিষয়ে কোনো তথ্য সংযুক্ত করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর এ বিষয়ে সভায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে পারে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পে মূল ব্যয় ছিল ৬ হাজার ৫৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ৬ হাজার ৬১৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। ফলে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৪০ কোটি টাকা। মূল প্রকল্পটি ০১ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে ৩০ জুন ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা। এখন প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বৃদ্ধি করে ৩০ জুন ২০২৪ সাল নাগাদ প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্পটি ৬৪ জেলার ৪৯২টি উপজেলা, সিটি করেোরেশন ও পৌরসভায় বাস্তবায়িত হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পটি নিয়ে সম্প্রতি কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লি প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) শরিফা খানের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভা হয়। সভায় কমিশন কিছু মতামত তুলে ধরেছে।
এ প্রসঙ্গে শরিফা খান বলেন, প্রকল্পে বাড়তি গাড়ি ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া জ্বলানি খরচ ১১ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। আমরা সংশ্লিষ্টদের বলেছি এটা যুক্তিসঙ্গত করতে। ১৫ মিটারের জায়গায় ২০ মিটার কালভার্ট নির্মাণের প্রস্তাব করেছিল। এটা আমরা না করে দিয়েছি। এছাড়া টাকা সাশ্রয়ের জন্য সেমিনার বাদ দিতে বলা হয়েছে প্রকল্পের আওতায়। বিষয়গুলো যুক্তিসঙ্গত করে নিয়ে এলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের মতামত: প্রকল্পের আওতায় নির্মিত প্রতিটি ব্রিজ নির্মাণের স্থান (গ্রাম উল্লেখসহ) ও দৈর্ঘ্য প্রকল্পে সংযুক্ত করা হয়নি। প্রস্তাবিত আরডিপিপিতে প্রকল্প সংশোধনকরণ অংশে সেতু-কালভার্ট নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা, বিভাজন এবং অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্যাবলির মাধ্যমে সেতু-কালভার্ট নির্মাণে প্রকৃত চিত্র সুস্পষ্ট হয়নি। এসবের ব্যাখ্যা প্রয়োজন। প্রকল্পে প্রস্তাবিত সেতু ও বক্স কালভার্ট-গার্ডার ব্রিজের আইডি নম্বর প্রবর্তন করা প্রয়োজন। এটি না থাকায় প্রস্তাবিত ব্রিজ-কালভার্ট একই ব্রিজ-কালভার্ট কি না বোঝা বা পৃথকীকরণের কোনো সুযোগ নেই। সেতু ও বক্স কালভার্ট-গার্ডার ব্রিজের আইডি নম্বরের ব্যবস্থা করা হয়নি।
তাছাড়া এ মন্ত্রণালয় থেকে পূর্বে নির্মিত সেতুসমূহের আইডি নম্বরসহ তালিকা ডিপিপিতে সংযোজন বা কমিশনে পাঠানো হয়নি। প্রকল্প সংশোধনের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে, অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অধিক দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ প্রয়োজন হলেও ১৫ মিটার পর্যন্ত বাধ্যবাধকতা থাকায় বাড়তি দৈর্ঘ্যের প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ করা যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সংশোধিত ডিপিপিতে ১ থেকে ২ মিটার দৈর্ঘ্য বাড়ানো যেতে পারে। প্রকল্পটি গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু-কালভার্ট নির্মাণের লক্ষ নিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০ মিটার সেতু নির্মাণের প্রস্তাব করার বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও সংস্থাকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করতে হবে। বিদ্যমান ইউনিয়ন ভিত্তিতে বরাদ্দের পরিবর্তে বাস্তব চাহিদার ভিত্তিতে জেলাভিত্তিক বরাদ্দের সংস্থান রেখে ডিপিপি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু কোনো জেলায় সেতু-কালভার্টের চাহিদা কম থাকায় সংখ্যা কমিয়ে কোনো জেলায় বৃদ্ধি করা হবে সে সম্পর্কিত সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নেই।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য: গ্রামীণ মাটির রাস্তার গ্যাপে সেতু/কালভার্ট নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। দুর্যোগের সময় জনসাধারণকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরের মাধ্যমে দুর্যোগজনিত ঝুঁকি হ্রাসকরণ এবং কৃষি উপকরণ সহজে পরিবহন ও বিপণন সহজ করা। এর মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং অবকাঠামো নির্মাণকালীন সাময়িক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে গ্রামীণ এলাকার দারিদ্র্য দূরীকরণ। নতুন করে প্রকল্পের আওতায় ২৭টি যানবাহন ও ৪৯২টি মোটরসাইকেল সচল রাখতে ১১ কোটি ৯ লাখ টাকার জ্বালানি খরচ চেয়েছি। দুই বছর প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করেছি। যদি আমাদের আবেদন মঞ্জুর হয় তবে দুই বছরের জন্যই এটা হবে। যদি কমিশন ব্যাখ্যা চায় তবে আমরা ব্যাখ্যা দেবো।
প্রকল্পের প্রধান প্রধান কার্যাবলি: ১৩ হাজার সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। এসব সেতু ও কালভার্টের প্রস্থ (চওড়া) ৪ দশমিক ৩ থেকে সাড়ে ৫ মিটার। এর মধ্যে ৭ হাজার ৮০০টি বক্স টাইপ ও ৫ হাজার ২০০টি মিটার টাইপ কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের আর্থিক ও বাস্তব অগ্রগতি: বর্তমানে প্রকল্পটির আর্থিক অগ্রগতি ১ হাজার ৪৭৭ কোটি ৮৮ লাখ টাকা, যা অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী মোট প্রকল্প ব্যয়ের ২২ দশমিক ৪৭ শতাংশ এবং বাস্তব অগ্রগতি ৪৩ শতাংশ। ৭ হাজার ১২৯টি (৬১ হাজার ৯৮৮ দশমিক ৯৭ মিটার ) সেতু- কালভার্টের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। তার মধ্যে বাস্তবায়নাধীন বক্স টাইপ ৬ হাজার ৩৯৬টি (৫১ হাজার ৯৬২ দশমিক ৩৭ মিটার) ও গার্ডার টাইপ ৭৩৩টি (১০ হাজার ২৬ দশমিক ৬ মিটার) সেতু-কালভার্ট। অবশিষ্ট রয়েছে বক্স টাইপ ১ হাজার ৪০৪টি (৪১ হাজার ৬৩৭ দশমিক ৬৩ মিটার) এবং গার্ডার টাইপ ৪ হাজার ৪৬৭টি (৫২ হাজার ৩৭৩ দশমিক ৪ মিটার) সেতু-কালভার্ট ।
নানা কারণে প্রকল্পটি সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর।
প্রকল্প সংশোধনের কারণ: মন্ত্রণালয়ের স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাঠ পর্যায়ে সেতু/কালভার্টের স্থানীয় চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা ও উপযোগিতা বিবেচনায় বিশেষ ক্ষেত্রে সেতুর দৈর্ঘ্য ১-২ মিটার বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যবর্তী মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশেষ ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুসারে গার্ডার সেতুর স্প্যান দৈর্ঘ্য অনধিক ২০ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি। এলজিইডির নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী প্রাক্কলন সংশোধন। ডিপিপিতে বিদ্যমান জেলা/উপজেলা ইউনিয়ন ভিত্তিতে বরাদ্দের পরিবর্তে বাস্তব চাহিদার ভিত্তিতে জেলাভিত্তিক বরাদ্দের সংস্থান প্রয়োজন।
সেতু-কালভার্টের অ্যাপ্রোচের মাটি যথাস্থানে ধরে রাখার প্রয়োজনে সেতু-কালভার্টের উভয় পাশে ১৫ মিটার করে মোট ৩০ মিটার এইচ বি বি অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণসহ ক্ষেত্রবিশেষে রিটেইনিং ওয়াল ও গাইড ওয়াল নির্মাণ প্রয়োজন। অনুমোদিত ডিপিপিতে আগের প্রকল্পগুলো থেকে হস্তান্তরকৃত যানবাহনের ২৭টি যানবাহন এবং ৪৯২টি মোটরসাইকেল সচল রাখাসহ প্রকল্পের সুষ্ঠু তদারকির স্বার্থে জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দের সংস্থান রাখা প্রয়োজন। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে প্রকল্পের ক্রয় প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হয়েছে। এছাড়া অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রত্যাশিত তহবিলপ্রবাহ অপর্যাপ্ত হওয়ায় ক্রয়-পরিকল্পনা অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করা সম্ভব হয়নি। ফলে প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল বাস্তবতার নিরিখে দুই বছর বৃদ্ধি করে ১ জানুয়ারি ২০১৯ খ্রি . থেকে ৩০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত নির্ধারণ করা প্রয়োজন। চলতি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ প্রকল্পটির অনুকূলে ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
নানা কারণে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম দুর্যোগপ্রবণ দেশ। দেশটির মধ্যে দিয়ে অসংখ্য নদ-নদী প্রবাহিত হওয়ায় এবং খাল ও নিচু ভূমি থাকায় প্রায়ই এদেশে প্রায় সব জেলায় বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হয়। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে দুর্যোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। দুর্যোগের সব পর্যায়ে সাড়াদান, পুনরুদ্ধার, পুনর্বাসন ও পুনর্গঠন কার্যক্রমের সক্ষমতা বৃদ্ধির অন্যতম শর্ত হচ্ছে অবকাঠামোসহ উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। দুর্যোগ মোকাবেলা ছাড়াও কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষিপণ্য পরিবহন ও বিপণনের জন্য প্রয়োজন উন্নত গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর জানায়, ১৯৮২ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা উন্নয়নের কাজ শুরু হয়। রাস্তার সড়ক নির্মাণের সময় পানি নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা দূর করাসহ কৃষি উৎপাদনে কোনো ক্ষতি না করে যোগাযোগ ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রয়োজন হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর কর্তৃক ১৯৮২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় দেশের গ্রামীণ এলাকায় ২৮ হাজার ৬৭৪টি সেতু-কালভার্ট নির্মিত হয়েছে, যার দৈর্ঘ্য ২ লাখ ৪০ হাজার ৯৩ মিটার।
এছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশে গ্রামীণ বিভিন্ন এলাকায় সেতু-কালভার্ট নির্মিত হলেও গ্রামীণ রাস্তায় এখনো প্রায় ৮০ হাজারটি গ্যাপ রয়ে গেছে, যার দৈর্ঘ্য প্রায় ৬ লাখ ৭৯ হাজার। এই গ্যাপসমূহে পর্যাপ্ত সেতু-কালভার্ট নির্মিত না হওয়া এবং নদ-নদী, খাল-বিল থাকার কারণে দেশের অনেক ইউনিয়ন এখনো পুরোপুরি উন্নত যোগাযোগের আওতায় আসেনি। এ প্রেক্ষাপটে গ্রামীণ এলাকার কৃষিপণ্য পরিবহন ও বাজারজাতকরণসহ গ্রামীণ দুর্যোগের সময় জনসাধারণ এবং গবাদিপশু নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেওয়া, দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews