লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার, নিয়ন্ত্রণ নেই কোথাও

সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশির ভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজার, নিয়ন্ত্রণ নেই কোথাও

প্রথম নিউজ, অনলাইন: লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না। বরং দাম বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এতে চাপে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশির ভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এ ছাড়া অস্থিরতা তৈরি হয়েছে ডিম ও মুরগির বাজারেও। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে। কাওরান বাজারের তুলনায় মিরপুরের বাজারগুলোতে ডিম ও মুরগির দাম বেশি বেড়েছে। কাওরান বাজারে বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ১২০ টাকা ছিল। এ ছাড়া সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা ডজন, যা এক সপ্তাহ আগে ১১৫ টাকা ছিল।

অন্যদিকে দাম বেড়েছে সোনালী জাতের মুরগির। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪১০-৪২০ টাকায়, যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা বেশি। তবে ব্রয়লার ২২০-২৩০ টাকার মধ্যে কেনা যাচ্ছে। আবার বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজনে ২০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় ঠেকেছে।

মালিবাগ বাজারে কেনাকাটা করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী আবদুর রহমান। ব্রয়লার মুরগির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য মুরগির যে দাম, তাতে মুরগি কেনা তো দূরে থাক, হাতই দেয়া যায় না। সাধারণ মানুষ মাংসের চাহিদা মেটানোর জন্য ব্রয়লার মুরগির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমান বাজারে সেই ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েই চলছে। তিনি বলেন, ২২০ টাকা কেজি দরে একটি দেড় কেজি ওজনের ব্রয়লার কিনলাম। আসলে ব্রয়লার মুরগির দাম তো এত হওয়ার কথা নয়। যখন যেভাবে ইচ্ছা, ব্যবসায়ীরা এর দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ সাধারণ ক্রেতার কথা ভেবে বাজার মনিটরিংয়ের কোনো উদ্যোগ দেখি না। এত দাম দিয়ে সাধারণত নিম্নআয়ের ক্রেতাদের ব্রয়লার মুরগি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়।

অন্যদিকে বাজারগুলোতে পটোল আর ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে। গাজর-শসা ও টমেটোও ৮০-১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৪০ টাকা বেড়ে ১৬০ টাকায় উঠেছে। সবজি বিক্রেতারা জানান, সপ্তাহ ব্যবধানে প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত। মূলত তীব্র গরমে গ্রাম পর্যায়ে সবজির দাম বাড়ায় রাজধানীর বাজারগুলোতেও এর প্রভাব পড়েছে।

এদিকে স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। ক্রেতারা মাছ কিনতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে গেছে অনেক আগেই। চাষের মাছও এখন বেশ চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের আগে এক কেজি ছোট ও মাঝারি আকারের পাঙাশের দাম ছিল ১৮০-২২০ টাকা, সেই একই পাঙাশ এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকায়। দাম বেড়ে তেলাপিয়া মাছের কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। মাঝারি ও বড় মানের তেলাপিয়া প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৮০ টাকায়। ঈদের আগে যা ছিল ২২০-২৫০ টাকা। চাষের কই বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ টাকার ওপরে। আর ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই মাছের দাম হাঁকানো হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। বড়গুলো ৩৬০-৪০০ টাকা। বাজারে ইলিশের সরবরাহ তেমন নেই। ৪০০-৫০০ গ্রামের ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০০-১৪০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম হলে ১৬০০-১৮০০ টাকা। আর কেজি সাইজের হলে দাম দুই হাজারের উপরে।