মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া ২ আসামির যাবজ্জীবন

ধর্ষণের পর শিশু ইতিকে হত্যা

মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া ২ আসামির যাবজ্জীবন

প্রথম নিউজ, ঢাকা: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামের নয় বছরের শিশু ফাতিমা আক্তার ইতিকে ধর্ষণের পর হত্যার মামলায় হাইকোর্টে খালাস পাওয়া দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। বহুল আলোচিত এই মামলায় ট্রাইবুন্যালের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। আপিলে খালাসের রায় বাতিল করে দুইজনকে যাবজ্জীবন দেন আদালত। আজ বুধবার (১৫ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগ এ রায় দেন।

আদালতে এদিন আসামি পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হেলান উদ্দিন মোল্লা ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। আর রাষ্ট্র পক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ সাইফুল আলম। এর আগে রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত বুধবার (৮ নভেম্বর) এ বিষয়ে রায় ঘোষণার জন্য ১৫ নভেম্বর দিন ঠিক করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। তারই ধারাবাহিকতায় আজ রায় ঘোষণা করা হলো।

এ মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ঝাটিবুনিয়া গ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে ফাতিমা আক্তার ইতি পাশের বুখাইতলা বান্ধবপাড়া গ্রামে নানার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতো। সে স্থানীয় হাতে মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। ২০১৪ সালের ৫ অক্টোবর সকালে গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য বিদ্যালয়ের মাঠে যায় ইতি। পরদিন দুপুরে বাড়ির পাশের একটি বাগানে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত শিশুটির বাবা অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। সে মামলায় পুলিশ মেহেদী ও সুমনকে আটক করে। পরে সুমন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

২০১৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল শিশু ইতিকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে তার মামাতো ভাই মেহেদী হাসান ওরফে স্বপন ও একই গ্রামের সুমন জমাদ্দারকে মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করে জরিমানার অর্থ নিহত শিশুর বাবা-মাকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে ২০২১ সালের ৩০ জুন হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এ এসএম আব্দুল মুবিনের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। এ রায়ের খালাসের দণ্ড স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।