প্রেমের বিয়ের ৬ মাস পর তরুণীর আত্মহত্যা

নরসিংদীর রায়পুরায় সানিয়া আক্তার (১৮) নামে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। ভৈরব রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি

প্রেমের বিয়ের ৬ মাস পর তরুণীর আত্মহত্যা
প্রেমের বিয়ের ৬ মাস পর তরুণীর আত্মহত্যা

প্রথম নিউজ, নরসিংদী : নরসিংদীর রায়পুরায় সানিয়া আক্তার (১৮) নামে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। ভৈরব রফিকুল ইসলাম মহিলা কলেজে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন তিনি। মাত্র ছয় মাস আগে প্রেম করে স্কুলজীবনের সহপাঠী সাজিদকে কোর্টে গিয়ে বিয়ে করেছিলেন তারা। 

মঙ্গলবার বিকালে নিজ ঘরে গলায় রশি পেঁচিয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করেন সানিয়া। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
 
নিহত সানিয়া আক্তার মির্জাপুর ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ নামাপাড়া গ্রামের শাজাহান হাজারীর মেয়ে। ছয় মাস আগে একই ইউনিয়নের মাহমুদাবাদ টানপাড়ার মিস্ত্রিবাড়ির মোহাম্মদ সানাউল্লাহ অভির ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সাজিদকে কোর্ট গিয়ে বিয়ে করেছিলেন তারা। 

আত্মহত্যায় প্ররোচিত করার দায়ে স্বামী সজ্জাদ, শ্বশুর সানাউল্লাহ ও শাশুড়ি সালমা বেগমের বিরুদ্ধে রায়পুরা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন সানিয়ার মা বিলকিছ বেগম।
 
সানিয়ার মা জানান, সাজিদ ও সানিয়ার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০২২ সালের ২৯ আগস্ট আমাদেরকে না জানিয়ে কোর্টে গিয়ে বিয়ে করে তারা। কিছুদিন পর সাজিদের মামা স্থানীয় ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিপনের মাধ্যমে তাদের বিয়ের বিষয়টি জানতে পারি। 

পরে ছেলের বাবা-মা আমাদের বাড়িতে এসে মেয়েকে দেখে যায়। তাদের ছেলের বয়স কম এবং প্রতিষ্ঠিত হলে মেয়েকে আনুষ্ঠানিকভাবে উঠিয়ে নেবে বলে তারা চলে যায়; কিন্তু তার কিছুদিন পরই শোনা যায় ছেলের মায়ের নাকি আমার মেয়েকে পছন্দ হয়নি। 

প্রায় এক মাস ধরে সাজিদ আর আমার মেয়ের সাথে যোগাযোগ করে না। বিয়ের কথা জানাজানি হওয়ার পর একদিনের জন্যও সাজিদকে আমাদের বাড়িতে আসতে দেয়নি তার মা। 

মঙ্গলবার আমরা সবাই দাওয়াতে চলে গেলে বিকাল সাড়ে ৪টায় এসে দেখি ৩ তলায় তার রুমের দরজা বন্ধ। পরে দরজা ভেঙে সিলিং ফ্যানে রশি দিয়ে তাকে লাশ ঝুলে থাকতে দেখি। তারা আমার মেয়েকে মানসিক চাপ দিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। আমি এর বিচার চাই।

সানিয়ার ভাবি শোভা বলেন, আমার ননদের সঙ্গে দেখা করবে ভেবে সাজিদের পরিবার সাজিদকে ঢাকায় নিয়ে যায়। বিয়ের কথা জানাজানির আগপর্যন্ত সাজিদ মাহমুদাবাদ টানপাড়ায় তার নানির বাড়িতেই থাকত। এক মাস ধরে সানিয়া সাজিদকে ফোন দিলেও সে রিসিভ করে না।

সাজিদের পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে সাজিদের মামা ইউপি সদস্য রিপন বলেন, বিয়ের বিষয়টি আমি জানার পর উভয় পরিবারকে জানিয়েছিলাম। 

ছেলের বাবা সানিয়ার বাড়িতেও এসেছিলেন। ছেলে প্রতিষ্ঠিত হলে সানিয়াকে নিয়ে যাবেন বলে কথা দেন। এরপর আমি আর কিছু বলতে পারি না।

রায়পুরা থানার এসআই আবুল কালাম আজাদ বলেন, সানিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলেই মনে হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel: