Ad0111

জনপ্রিয় হচ্ছে ই-টেন্ডার, বাড়ছে সরকারের আয়

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও ল্যাপটপ থাকলে ঘরে বসেই এখন জমা দেওয়া যায় টেন্ডার

জনপ্রিয় হচ্ছে ই-টেন্ডার, বাড়ছে সরকারের আয়

প্রথম নিউজ, ঢাকা: টেন্ডার জমা দেওয়া কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা একসময় ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে অহরহ। পেশিশক্তি যার বেশি সেই পেতো টেন্ডারে কাজ। ডিজিটালাইজেশনের কল্যাণে গত এক দশকে বদলেছে অনেক কিছু। ‘টেন্ডারবাজির’ সেই জামানাও এখন আর নেই বললেই চলে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট ও ল্যাপটপ থাকলে ঘরে বসেই এখন জমা দেওয়া যায় টেন্ডার। ই-টেন্ডারে বদলে গেছে পুরো দৃশ্যপট। সরকারের ঘরেও আসছে রাজস্ব।

বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) জানায়, উন্নয়ন কাজে গতি, দক্ষতা ও স্বচ্ছতায় বদ্ধপরিকর সরকার। ফলে হাতে হাতে দরপত্র (টেন্ডার) জমা দেওয়ার সনাতন পদ্ধতির বদলে বর্তমান সরকার ই-টেন্ডার পদ্ধতি চালু করে। দরপত্র ক্রয়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পাশাপাশি এ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি বন্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালের ২ জুন ‘ই-জিপি’ ওয়েব পোর্টালের উদ্বোধন করেন। শুরু থেকে ২০২১ সালের ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ই-টেন্ডারের মাধ্যমে সরকারের কোষাগারে জমা পড়েছে ১ হাজার ৬০৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা। এই সময়ে মোট টেন্ডার জমা পড়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার ৯৪টি।

সিপিটিইউর মহাপরিচালক সোহেলুর রহমান চৌধুরী বলেন, একসময় খবরের পাতায় বড় বড় নিউজ দেখেছি টেন্ডার জমা দেওয়া কেন্দ্র কেন্দ্র করে মারামারি-হানাহানির। ই-টেন্ডারের ফলে এটা আর নেই। টেন্ডার সংক্রান্ত কোনো ঝামেলা আর দেখতে পাচ্ছি না। ই-টেন্ডারে মানুষের আগ্রহও বেশি।

বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হয়। তবে এখন ৫৬টি মন্ত্রণালয়, সরকারি বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগ, দপ্তর, অধিদপ্তর ও পরিদপ্তরগুলো ই-টেন্ডার পদ্ধতি অনুসরণ করছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে ন্যাশনাল ই-গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্টের (ই-জিপি) নীতিনির্ধারণী কমিটি।

সিপিটিইউ জানায়, দেশের ৪৯টি ব্যাংকের ৬ হাজার ১৩৮টি শাখা এ সিস্টেমের মাধ্যমে সারা দেশে রেজিস্ট্রেশন এবং দরপত্রসংক্রান্ত ফি ও সিকিউরিটিজগুলো (টেন্ডার সিকিউরিটি ও পারফরম্যান্স সিকিউরিটি) অনলাইনে গ্রহণ, আপলোড করছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা তাদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনে পেমেন্ট বা অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন। টেন্ডার, রেজিস্ট্রেশন, নবায়ন ও টেন্ডার ডকুমেন্ট বিক্রি ফি সিপিটিইউয়ের (সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট) তহবিলে জমা হয়। এছাড়া দরপত্র জামানত ও কার্য সম্পাদন জামানত জমা হয় ক্রয়কারীর অ্যাকাউন্টে।

টেন্ডার প্রক্রিয়ায় কেউ যাতে বিপাকে না পড়েন সেজন্য ২৪ ঘণ্টা হট লাইন খুলে রেখেছে সিপিটিউ।

সরকারের ই-টেন্ডার ডিজিটাল সেবা আরও শক্তিশালী করার জন্য নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে আইএমইডি। ই-টেন্ডার বিষয়ে ১১ হাজার ২২০ জন কর্মকর্তা ও প্রশাসনিক কাজে কর্মরত এমন ২ হাজার ৯০১ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। টেন্ডারের সার্বিক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ৬ হাজার ৬০৩ জন, ব্যাংক ব্যবহারের বিষয়ে ৩২২ জন ও পলিসি লেভেল বিষয়ে ৫৩ জনকে। ই-টেন্ডারের বিষয়ে মোট ২১ হাজার ৯৯ জনকে নানা ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

আইএমইডি বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ই-টেন্ডারের মাধ্যমে জনগণ সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পাচ্ছে। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এসেছে ই-টেন্ডারে। নেই পেশিশক্তির ব্যবহার। আগে আমরা দেখতাম এক পার্টি টেন্ডার জমে দেবে অন্য পার্টি জমা দিতে দিতো না। এখন এই সমস্যার নিরসন হয়েছে। সামনে সিপিটিউ আরো ঢেলে সাজানো হবে।

সরকারি কেনাকাটায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশকে ইলেকট্রনিক সরকারি ক্রয় (ই-জিপি) কাভারেজ বাড়াতে চার কোটি ডলার বাড়তি সহায়তা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার সমান ৮৫ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় যা ৩৪০ কোটি টাকা। এই অর্থায়ন জরুরি ক্রয় প্রক্রিয়া শক্তিশালী করতে এবং টেকসই ক্রয়ের জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরি করতে সাহায্য করবে। ই-জিপি দরদাতা ও ক্রয়কারীর একটি দ্বিপাক্ষিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে বলে দাবি বিশ্বব্যাংকের।

Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:

https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews

https://youtube.com/prothom

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

This site uses cookies. By continuing to browse the site you are agreeing to our use of cookies & privacy Policy from www.prothom.news