‘গায়েবি’ মামলাকে হাতিয়ার করে দমন-পীড়ন চলছে: বিএনপি
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: ‘গায়েবি’ মামলাকে হাতিয়ার করে নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন ও হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটির দাবি, ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রার পর থেকে গায়েবি মামলার মিছিল থামছে না। এ ধরনের মামলা জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সব মহানগরে পদযাত্রা কর্মসূচি ছিল। কিন্তু অনিবার্য কারনেণ এ তারিখ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। সংশোধিত কর্মসূচি অনুযায়ী ১৭ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) দুপুর আড়াইটায় ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে পৃথক পদযাত্রা হবে। আর শনিবার চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, কুমিল্লা, ফরিদপুর, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর মহানগরে হবে পদযাত্রা। বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের সব ইউনিটকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
প্রিন্স বলেন, ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুরে এক গায়েবি মামলায় ২১নং আসামি করা হয়েছিল বক্তারপুর গ্রামের চানু মিয়াকে (৪০)। তিনি বিএনপির কোনো নেতা কিংবা কর্মী নন, অতি সাধারণ একজন খেটে খাওয়া মানুষ। অথচ ইউনিয়ন পদযাত্রার কর্মসূচির দিন রাতে ক্ষমতাসীন দলের কতিপয় নেতা তার বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পাঠিয়ে হয়রানি করে, হুমকি-ধমকি দেয়। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সোমবার ফুলপুর সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেই জানতে পারেন তার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও গায়েবি মামলা দেওয়া হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় চানু মিয়া মানসিকভাবে চরম ভেঙে পড়েন। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। এই মৃত্যুর দায় অবৈধ সরকারকেই নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘গায়েবি মামলায় শহর থেকে গ্রাম নিরীহ সাধারণ মানুষকে জড়িয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে বিরত রাখার জন্য ভীতসন্ত্রস্ত রাখা হচ্ছে। তবে অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর এই ভোঁতা কৌশল সাধারণ মানুষসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে বিরত রাখতে পারবে না। দমন-নিপীড়নের সত্য ঘটনাকে গণবিচ্ছিন্ন সরকারের মন্ত্রী-নেতারা যতই গল্প হিসাবে অভিহিত করুন না কেন, শান্তি সমাবেশের নামে অশান্তি সৃষ্টিকারীদের অসত্য বয়ানে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। জনগণ এখন ভয়াবহ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছে।’
প্রিন্স বলেন, ‘জনতার এই জাগরণ ক্ষমতাসীন দলের নেতা-মন্ত্রীরা জেনে বুঝেও নিজেদের বাঁচাতে মরণকামড় দেওয়া শুরু করেছে। তবে সময় খুবই সন্নিকটে যখন জাগ্রত মানুষের মরণছোবলে সরকারের ক্ষমতার অবৈধ মসনদ তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।’ অনেক অনুনয়-বিনয়ের পরেও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় গণতন্ত্র সম্মেলনেও বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত লজ্জার।
তিনি বলেন, ‘সরকার ও তাদের অনুগত লোকদের দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচারের কেলেঙ্কারিতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছেড়েও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছে না সরকার। এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী গণবিরোধী ও গণতন্ত্র বিধ্বংসী এ জালিম সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের আন্দোলন সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। জনগণের বিজয় সুনিশ্চিত।’ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরীন, সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।