খন্দকার মুশতাককে তালাক দিলেন মতিঝিল আইডিয়ালের সেই ছাত্রী
সোমবার (১২ জুন) রাতে ওই ছাত্রীর বাবা সাইফুল ইসলাম তালাকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: রাজধানীর মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাক আহম্মেদকে তালাক দিয়েছেন ওই কলেজের এক ছাত্রী। মুশতাককে লোভী ও বদমেজাজী বলে তালাকনামায় উল্লেখ করা হয়েছে। মুশতাকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উল্লেখ করে সেই ছাত্রী গতকাল রোববার (১১ জুন) আইনজীবীর মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। মুশতাক তাকে বলপ্রয়োগপূর্বক বিয়ে করেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার (১২ জুন) রাতে ওই ছাত্রীর বাবা সাইফুল ইসলাম তালাকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তালাকনামায় ওই ছাত্রী উল্লেখ করেছেন, খন্দকার মুশতাক আহম্মেদ মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গর্ভনিং বডির একজন দাতা সদস্য। তিনি একজন উচ্ছৃঙ্খল, বদমেজাজী, দুশ্চরিত্র ও নারী লোভী প্রভাবশালী ব্যক্তি। এ পর্যন্ত তিনি একাধিক বিয়ে ও বহু নারীর জীবন নষ্ট করেছেন। তার বয়স ৬০ বছরের বেশি। মুগদার একটি বাসায় আমি বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতাম। সেই সুবাদে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হই। ২০২২ সালে এসএসসি পাস করে একাদশে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হই। মুশতাক এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গর্ভনিং বডির দাতা সদস্য হয়েও আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। তার প্রস্তাবে রাজি হতে বিভিন্নভাবে হুমকি দিতেন। গুলশানে আমার নামে ফ্ল্যাট লিখে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিতেন। তার প্রতারণার জালে আটকা পড়ে গত ২৫ মে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে মুশতাকের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই।
এতে বলা হয়েছে, বিয়ের পর মুশতাকের আসল চেহারা বের হয়ে আসে। তিনি একজন নারী নির্যাতনকারী, নারী লোভী, প্রতারক ও বিশ্বাস ভঙ্গকারী ব্যক্তি। তার সঙ্গে আমার দাম্পত্য জীবন বজায় থাকলে আমার ভবিষ্যৎ জীবন বিপন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে কারণে আমি তাকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই।
ওই ছাত্রীর বাবা সাইফুল ইসলাম সোমবার রাতে বলেন, আমার মেয়ে মেধাবী ছাত্রী। সে পঞ্চম শ্রেণি থেকে এসএসসি পর্যন্ত সব পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেছে। তার ইচ্ছে ছিল চিকিৎসক হওয়ায়। আমিও তাকে ডাক্তারি পড়াবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। খন্দকার মুশতাক মেয়েটার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। তিনি প্রভাব খাটিয়ে আমাদের সম্মতি ছাড়াই আমার মেয়েকে জোর করে বিয়ে করেছে। বিয়ের পর মেয়ের সঙ্গে বাজে আচরণ শুরু করে। তিনি বলেন, গত ১১ জুন আইনজীবীর মাধ্যমে তালাকের কাজ সম্পন্ন এফিডেভিট করা হয়। বর্তমানে মুশতাকসহ তার দলবল আমাদের মেরে ফেলার ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন। এ বিষয়ে মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে খন্দকার মুশতাক আহম্মেদ সোমবার রাতে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। আমি আইন মোতাবেক তার (ওই ছাত্রীর) সম্মতিতে বিয়ে করি। তাকে তার পরিবার ভুল বোঝাচ্ছে। তালাকের বিষয়টি শুনেছি, তবে আমি কোনো কাগজ পাইনি। এদিকে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুশতাকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্তে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (শিক্ষা ও আইসিটি) প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।