ইন্টারনেটে ধীরগতি, নয়াপল্টনে মোবাইল নেটওয়ার্কেও বিভ্রাট

বিএনপির সমাবেশস্থল ও এর আশপাশে শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই ইন্টারনেটের গতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।

ইন্টারনেটে ধীরগতি, নয়াপল্টনে মোবাইল নেটওয়ার্কেও বিভ্রাট

প্রথম নিউজ, ঢাকা: মহাখালীর খাজা টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডে দুদিন ধরেই ইন্টারনেটে ধীরগতি। সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে সমস্যা নিরসনে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল থেকেই ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে বলেও ঘোষণা দেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। কিন্তু আজ শনিবার সকাল থেকে মন্ত্রীর ঘোষণার উল্টো চিত্র দেখা গেছে। ঢাকাসহ সারাদেশে ইন্টারনেটের গতি আরও কমেছে। মোবাইল ডাটা, ওয়াইফাই এমনকি ব্রডব্যান্ড সংযোগ ব্যবহারকারীরাও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে বিএনপির সমাবেশস্থল ও এর আশপাশে শুক্রবার মধ্যরাত থেকেই ইন্টারনেটের গতি নেই বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। শনিবার সকালে নয়াপল্টন এলাকায় ঘুরেও অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। কাকরাইল, নয়াপল্টন, বিজয়নগর এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্কেও বিভ্রাট দেখা যাচ্ছে। মহাসমাবেশে আসা বিএনপিকর্মী সিরাজুল ইসলাম ও আল-আমিন হোসেন জানান, শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা থেকেই নয়াপল্টন এলাকায় ইন্টারনেটের গতি কম। রাতেও একই অবস্থা ছিল। ফেসবুক, ইউউটিউব এবং কোন নিউজ পোর্টালে ঢোকা যাচ্ছে না।

বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘এখানে ইন্টারনেট থাকবে না সেটা আগে থেকেই আমাদের জানা। সরকার বরাবরই এটা করে থাকে। আমাদের মহাসমাবেশ লাইভ সম্প্রচারের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিবারই আমরা এ ব্যবস্থা রাখি। সাঈদ আজমান নামে একজন ফ্রিল্যান্সার জাগো নিউজকে বলেন, খাজা টাওয়ারে আগুনের পর ইন্টারনেটে যতটুকু গতি ছিল, আজ শনিবার সকাল থেকে তা আরও কমে গেছে। কোনো কাজই করা যাচ্ছে না। কাল মধ্যরাত থেকে এটা হচ্ছে।

তিনি বলেন, অনেকে মনে করছেন আজ বিভিন্ন দলের সভা-সমাবেশ ঘিরে এটা করা হতে পারে। এভাবে হঠাৎ ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দেওয়ায় ফ্রিল্যান্সাররা বিপাকে পড়েছেন। অনেক কাজ নেওয়া আছে, যেগুলো আজকের মধ্যেই সাবমিট করার কথা। ইন্টারনেট না থাকলে তো আর সেটা সম্ভব নয়।

ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি এমদাদুল হক  বলেন, ‘খাজা টাওয়ারে আগুনের কারণে আমরা একটা বিপর্যয়ের মধ্যে আছি। সমাবেশ ঘিরে কী হয়েছে, তা বলতে পারবো না। এবারের ঘটনাটা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, আশা করি রাতে ইন্টারনেট পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হবে । তিনি আরো বলেন, আইআইজি ও আইএসপি প্রতিষ্ঠানের জিজিএস ডিভাইস পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। অনেক রাউটারও নষ্ট হয়েছে। জিজিএস ডিভাইস পুড়ে যাওয়ায় ফেসবুকের ক্যাশ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে ফেসবুক স্লো হতে পারে। অনেকের ইউটিউবও ডাউন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো দু-তিন দিন লাগবে।

অন্যদিকে শুক্রবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার লিখেন, ‘খাজা টাওয়ারের বেশির ভাগ সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। সকাল নাগাদ শতকরা ৯৫ ভাগ সমস্যা থাকবে না।’ শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালে এ বিষয়ে জানতে মন্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশনস বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম রাজ্জাক বলেন, খাজা টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় ইন্টারনেট ধীরগতি। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সমস্যা নিরসনে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। বিটিআরসি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। ইন্টারনেট স্লো বা ফেসবুক স্লো হওয়ার ক্ষেত্রে অন্য কোনো কারণ জানা নেই।