অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন-বিভক্তিতে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্বেগ

রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে মঞ্চের নেতারা এ উদ্বেগ জানান।

অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন-বিভক্তিতে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্বেগ

প্রথম নিউজ, অনলাইন: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন, বিভক্তির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ। নেতারা বলেন, ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটে। সাড়ে ১৫ বছরের দুর্নীতি, লুটপাট, দু:শাসনের অবসানের পর দেশের জনগণ নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে। জনগণের সেই আকাঙ্খা বাস্তবায়নের জন্য রাষ্ট্রের যে সংস্কারের দাবি উঠেছে তা বাস্তবায়নে অভ্যূত্থানের সকল পক্ষ, সকল অংশীজনের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের বিকল্প নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসের বাঁকবদলের এই সন্ধিক্ষণে জনআকাঙ্খার নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। 

রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে মঞ্চের নেতারা এ উদ্বেগ জানান। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম। 

তারা বলেন, সফল অভ্যুত্থানের কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই নানান বিভাজন, বিভক্তির চর্চা শুরু হয়েছে। কোন কোন ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীকে রাজনৈতিক, সামাজিক, ধর্মীয় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে দেখা যাচ্ছে। বিদ্বেষমূলক, হিংসাত্মক বক্তব্য ছড়ানো হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং তাদের গৃহীত সিদ্ধান্তের উপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে নারীদের ওপর হামলা এবং হেনস্তা করা হয়েছে। মাজার, মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। কোন কোন পক্ষ ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে নিজদের অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্বের দাবি করে জনগণের ঐক্যের ভিত্তি দুর্বল করার চেষ্টা করছে। 

গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে ক্রিয়াশীল সকল পক্ষের সাথে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। যারা ঐক্য বিনষ্ট করে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে, ঘৃণা এবং বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে, অসহিষ্ণু, হিংসাত্মক এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। দেশের ইতিহাসের এই ক্রান্তিলগ্নে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়া অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে এই দায়িত্ব নিতে হবে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে গণতন্ত্র মঞ্চ অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। বিভাজন, বিভক্তির পথ পরিহার করে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ, রাষ্ট্র নির্মাণই এই মূহুর্তে দেশের জনগণের প্রত্যাশা।