সর্বজনীন পেনশন টেকসই সামাজিক সুরক্ষা ও সময়োপযোগী উদ্যোগ
প্রথম নিউজ, ঢাকা : ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ দেশের সব স্তরের জনমানুষকে টেকসই সামাজিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বলয়ে অন্তর্ভুক্তিকরণে সময়োপযোগী একটি উদ্যোগ বলে মনে করছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। রোববার (২০ আগস্ট) এক বিবৃতিতে ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, সরকার প্রবর্তিত ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ সরকারের একটি জনবান্ধব উদ্যোগ, যা দেশের অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করবে। আমাদের সমাজের নানা শ্রেণিপেশার মানুষের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকল্পে বিশেষ করে বেসরকারি খাতে কর্মরত জনগোষ্ঠী, প্রবাসী, অনানুষ্ঠানিক খাত এবং নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ‘প্রগতি’, ‘সুরক্ষা’, ‘সমতা’ এবং ‘প্রবাসী’ নামে চারটি প্যাকেজের মাধ্যমে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীকে এ কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হবে।
উল্লেখ্য, ‘সমতা’ স্কিমের আওতায় স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ৫০ শতাংশ চাঁদা সহায়তার উদ্যোগ খুবই ইতিবাচক একটি দিক।
মো. সামীর সাত্তার বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে এবং আর্থিক কৃচ্ছতা সাধনের মতো পরিস্থিতিতে সার্বজনীন পেনশন স্কিম আমাদের অর্থনীতিতে অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ কর্মসূচি সমাজের নিম্ন আয়ের মানুষের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি দারিদ্র্য বিমোচন করবে, যেটি আগামী বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ও ব্যয় হ্রাসে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।
ডিসিসিআই সভাপতি মনে করেন, এটি কেবল দেশের সর্বস্তরের মানুষের জন্য সময়োপযোগী ও ফলপ্রসূ উদ্যোগই নয়, আমাদের বেসরকারি খাতও এর মাধ্যমে উপকৃত হবে। এ বিশাল উদ্যোগ ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের প্রবণতা হ্রাস করবে এবং সরকারের আর্থিক চাহিদা মেটাতে নতুন নতুন আর্থিক উৎসের সৃষ্টি করবে। সেই সঙ্গে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশি ঋণ গ্রহণ হ্রাস করবে। যেটি দেশের জিডিপিতে বিনিয়োগের অংশীদারিত্বকে বৃদ্ধি করবে।
এছাড়াও বেসরকারি খাতের জন্য প্রতিযোগী মূল্যে অর্থ প্রাপ্তিতেও সহায়তা করবে। একইসঙ্গে আমাদের স্থানীয় বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি এমএসএমই খাতে কর্মরত বিপুল জনগোষ্ঠীকে ‘প্রগতি’ স্কিমের আওতায় তাদের বার্ধক্যকালীন সময়ে সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, যেটি আমাদের বেসরকারি খাতে কর্মরত মানুষের কর্মস্পৃহা বৃদ্ধির পাশাপাশি চাকরি ত্যাগের প্রবণতাকেও হ্রাস করবে।
তিনি বলেন, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কানাডা, আইসল্যান্ড এবং সুইজারল্যান্ডসহ পৃথিবীর অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে এ ধরনের জনবান্ধব উদ্যোগ চলমান রয়েছে। এ ধরনের কর্মসূচি পরিচালনায় উল্লিখিত দেশগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের ‘সার্বজনীন পেনশন স্কিম’ কার্যকরভাবে পরিচালনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির বহুল প্রত্যাশিত রূপান্তরকে বেগবান করবে।
এ কর্মসূচির বিভিন্ন স্কিমের বিপরীতে প্রতিযোগিতামূলক ও নিরাপদ পেনশন প্রাপ্তির নিশ্চয়তা, সুশাসন এবং সাধারণ জনগণের অর্থ পরিচালনায় দক্ষ ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি বিষয়গুলো ভবিষ্যতে দেশের মানুষকে এ স্কিমের প্রতি আরও বেশি হারে আকৃষ্ট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি।