সরকারবিরোধী প্রচারপত্র বিলি করায় লাঞ্ছিত প্রবীণ প্রকৌশলী ইনামুল হক
দেশের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি দুঃখজনক উল্লেখ করে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান বলেন, যে ব্যক্তি ম ইনামুল হককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন, তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: নিজ দলের পক্ষে প্রচারপত্র বিতরণ করতে গিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও হামলার শিকার হয়েছেন দেশের প্রবীণ প্রকৌশলী ম ইনামুল হক। তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগালও করা হয়। গতকাল শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ ঘটনা ঘটে। ইনামুল হককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, হঠাৎ এক ব্যক্তি তাঁকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন। মারধরের পর ওই ব্যক্তি বলছিলেন, ‘দেশ ধ্বংস করছে মানে…। দেশ কই ধ্বংস হইছে? হ্যাঁ…।’
এই ঘটনায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক প্রথম আলোকে বলেন, সমালোচনার জন্য হামলার ঘটনা দেশে এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। যারা মতপ্রকাশে বাধা দেয়, তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আইনের ঊর্ধ্বে থেকে যায়। আর যারা মত প্রকাশ করবে, তারা হামলার শিকার হওয়ার সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রে ফৌজদারি মামলারও শিকার হবে—এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ম ইনামুল হক নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক মহাপরিচালক। এ ছাড়া হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর এবং পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থায় মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
শনিবারের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ইনামুল হক জানান, ২৭ ডিসেম্বর তাঁদের দলের পক্ষ থেকে অর্ধদিবস হরতাল ডাকা হয়েছে। হরতালের সমর্থনে শনিবার বিকেল চারটা থেকে শাহবাগে লিফলেট বিলি করছিলেন। এ সময় সাত-আটজন লোক এসে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘কত টাকায় আপনারা এসব করছেন?’ এ ধরনের কিছু কথাবার্তা বলে ওই লোকগুলো চলে যান। এরপর একজন সাংবাদিক মুঠোফোনে তাঁর ভিডিও সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন। সাক্ষাৎকার চলার সময় ওই লোকগুলো তাঁর পাশে এসে দাঁড়ান। তাঁদের মধ্য থেকে একজন হঠাৎ তাঁকে আঘাত করেন এবং গালমন্দ করতে থাকেন। পশমা পরা ও মুখে মাস্ক থাকায় ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
পরে ইনামুল হক ওই লোকগুলোকে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা মেহেরপুর থেকে আসার কথা বলেছিলেন। তাঁর ধারণা, লোকগুলো আওয়ামী লীগের সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন। তবে তাঁরা মেহেরপুর থেকেই এসেছিলেন কি না, তা যাচাই করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেবেন না বলে জানান প্রকৌশলী ইনামুল হক। তিনি বলেন, ‘মামলা করে কী হবে।’
দেশের একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি দুঃখজনক উল্লেখ করে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মো. নূর খান বলেন, যে ব্যক্তি ম ইনামুল হককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন, তাঁকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
Download করুন আমাদের App এবং Subscribe করুন আমাদের YouTube Channel:
https://apps.apple.com/de/app/prothomnews/id1588984606?l=en
https://play.google.com/store/apps/details?id=com.prothomnews