মহাসমাবেশে যোগ দিতে কৌশলে ঢাকায় তারা
রংপুর থেকে মহাসমাবেশে যোগ দিতে একসঙ্গে এসেছেন ৮ জন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা বাসে ওঠেন।
প্রথম নিউজ, অনলাইন: রংপুর থেকে মহাসমাবেশে যোগ দিতে একসঙ্গে এসেছেন ৮ জন। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা বাসে ওঠেন। এরপর গতকাল ভোরে ঢাকায় এসে পৌঁছান। তারা ৮ জন একসঙ্গে আসলেও টিকিট করেননি পাশাপাশি সিটে। আবার পরিকল্পনা করে একেকজন একেক স্থানে নেমে যান। তাদের ৮ জনের একজন পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়লেও সমস্যা হয়নি কোনো। আবার পূজার ছুটি শেষে অনেকেই গতকাল সকালে ঢাকায় আসেন। অনেকেরই শনিবার আসার ইচ্ছা থাকলেও মহাসমাবেশের কারণে একদিন আগেই ঢাকা আসেন। আশিক নামে এক ছাত্রদল নেতা বলেন, আসার আগেই ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভেট করে রাখছিলাম। সেইসঙ্গে গ্যালারিতে কোনো রাজনৈতিক ছবি রাখিনি। পুলিশ শুধুমাত্র ব্যাগ চেক করে।
কোথায় যাচ্ছি জানতে চাইলে বলি, ঢাকায় চাকরি করি। বাড়ি থেকে ফিরছি। আর পূজার ছুটি শেষে অনেকেই ঢাকায় ফিরছিলেন তাই সমস্যা খুব একটা হয়নি। তাদের সঙ্গে সবুজ বলেন, বিএনপি’র মহাসমাবেশ সফল করার উদ্দেশ্যেই ঢাকা আসা। গাবতলীতে প্রবেশ করা নিয়ে ভয়ে ছিলাম। তবে বাসে পুলিশ উঠলেও আমাকে চেক করেনি। অনেককেই করেছে।
দিনাজপুর থেকে ঢাকায় সকালে নেমেছেন আইয়ুব নামে একজন কর্মী। তিনি বলেন, আমার এক আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি। ঢাকায় এমনিতেই আসার দরকার ছিল। এই সুযোগে চলেই আসলাম। তিনি বলেন, পুলিশ আমিন বাজারে এসে চেক করে। প্রথমে আমার ব্যাগ এরপর মোবাইল। আমি প্রশ্নের জবাবে বলি আমার আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি দেখতে যাচ্ছি। মোবাইল চেক করেন আমার আত্মীয় যে হাসপাতালে ভর্তি সেই স্ট্যাটাসও দেখাই। এরপর আর কিছু বলে নাই। এরপর আরেক পুলিশ আমার অফিস আইডি কার্ড দেখতে চান। আমি দেখাই।
আবার অনেকেই আমিন বাজারের তল্লাশির ভয়ে বিকল্প পথ ব্যবহার করেছেন। ইলিয়াস হোসেন ঢাকায় এসেছেন দিনাজপুর থেকে। তিনি বলেন, আমি আমিন বাজারের আগেই নেমে পড়ি বাস থেকে। এরপর হেঁটে নদী পাড়ে যাই। সেখান থেকে নৌকা পাড়ি দিয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধে আসি।
ঢাকায় আসার পরও ভয় কাটছে না অনেকের। বিএনপি’র নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়, বন্ধু ও পরিচিতদের বাড়িতে। পটুয়াখালী থেকে আসা এক ব্যক্তি বলেন, আমি ঢাকায় আসলে বড় বোনের বাসাতেই উঠি। কিন্তু এবার আসার কথা শুনে আপু কেমন করে যেন কথা বললেন। বাধ্য হয়ে সেখানে আর যাই নাই। বাস থেকে নামার পর থেকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে আছি। এখানে থাকলে রোগীর আত্মীয় সেজে থাকা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো ভয় নাই। তিনি বলেন, বিকালে আমি ঢাকা মেডিকেলে এসেছি। এখানেই ভোর পর্যন্ত থাকবো। এরপর সমাবেশের দিকে যাবো। তবে ঘুমানো দরকার ছিল সেটা ঠিকমতো হচ্ছে না।
আবার অনেকেই ঢাকা এসে সময় কাটাচ্ছেন শপিংমলগুলোতে। ইব্রাহীম হোসেন বলেন, সকালে এসে নাস্তা শেষ করে বসুন্ধরা শপিং মলে আসি। এখানে দুপুর পর্যন্ত বিশ্রাম নেই। এরপর এখান থেকে যাই নিউ মার্কেট এলাকায়। এখানে রাত পর্যন্ত থাকবো। তিনি বলেন, রাতে নয়াপল্টনের দিকে যাবো। ওখানে অনেকেই রাত থেকে জড়ো হবেন বলে শুনেছি।
ঢাকায় আসা নেতাকর্মীরা বলেন, বিএনপি’র মহাসমাবেশ সফল করাই তাদের উদ্দেশ্য। রাইসুল ইসলাম বলেন, এত বিপদ মাথায় নিয়ে আমরা সমাবেশে এসেছি। আমাদের একটাই লক্ষ্য, বিএনপি ঘোষিত এক দফা দাবি আদায়ে সফল হওয়া।