মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরীর জানাজায় মানুষের ঢল

গতকাল বিকালে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মাওলানা যোবায়ের আহমদ গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ খেলাফত মজলিস আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার পর ইফতারের আগ মুহূর্তে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন।

মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরীর জানাজায় মানুষের ঢল
মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরীর জানাজায় মানুষের ঢল

প্রথম নিউজ, মৌলভীবাজার: দেশের অন্যতম শীর্ষ আলেম ও বুজর্গ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আমীর শায়খুল হাদিস অধ্যাপক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরীর জানাজায় অংশগ্রহণ করেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। গতকাল বিকালে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। মাওলানা যোবায়ের আহমদ গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ খেলাফত মজলিস আয়োজিত ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার পর ইফতারের আগ মুহূর্তে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। এরপর তাৎক্ষণিক  সেখানকার হাসপাতালে নিয়ে  গেলে কর্তব্যরত চিৎিসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  জানাজার নামাজের ইমামতি করেন সিলেটের ভার্থখলা মাদ্রাসার মুহতামিম ও খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর হাফেজ মাওলানা মজদুদ্দিন আহমদ।

জানাজায় অংশ নেন জেলা বিএনপি সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এম নাসের রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাউর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পৌর  মেয়র ফজলুর রহমান, জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ভিপি মিজানুর রহমানসহ  খেলাফত মজলিস, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, আঞ্জুমানে আল-ইসলাহ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিরা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি স্ত্রী, ৪ ছেলে ৩ মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজন ও গুণাগ্রাহী রেখে  গেছেন। অধ্যাপক মাওলানা যোবায়ের ১৯৫০ সালের ১লা ডিসেম্বর  মৌলভীবাজার শহরের শাহ  মোস্তফা রোডস্থ বাসায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭১-৭২ সালে  মৌলভীবাজারের সুপ্রসিদ্ধ জামিয়া লুৎফিয়া আনোয়ারুল উলূম বরুনায় মেশকাত এবং দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন।

কর্মজীবন: ১৯৭৩ সালে  নেত্রকোনার মউ মাদ্রাসায় হাদিসের দরস প্রদানের মাধ্যমে জীবনের প্রথম শিক্ষকতা করেন। এ ছাড়াও ১৯৮৩-৮৫’র আগস্ট পর্যন্ত ইসলামী ইউনিভার্সিটি কুষ্টিয়ার ভাইস-চ্যান্সেলরের গাইডেন্সে তাফসিরে মাতুরীদী (ইমাম মাতুরীদী)-এর একমাত্র গবেষক হিসেবে কাজ করেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত ইসলামী বিশ্বকোষের অনুবাদক ও নিবন্ধকার ছিলেন। ২০১৪ হতে ২০১৬ সালের ২১শে নভেম্বর পর্যন্ত বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহকারী মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালের ২২শে নভেম্বর থেকে ২০২২ সালের ২৩শে নভেম্বর পর্যন্ত বেফাকের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী ১৯৮৯ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত খেলাফত মজলিসের মৌলভীবাজার জেলা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালের দিকে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হন। ২০১০ সাল  থেকে বেফাকে যোগদানের পূর্ব পর্যন্ত নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করেন। বেফাক থেকে চলে আসার পর ফের নায়েবে আমীর হন। ২০২১-২০২২ সেশনে দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর নির্বাচিত হন এবং বিগত ২৮শে জানুয়ারি ২০২৩ খেলাফত মজলিসের আমীর নির্বাচিত হন।