ভুয়া মেজর পরিচয়ে লাখ লাখ টাকার প্রতারণা
একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে ভুয়া নাম-পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়িক লেনদেন করে এবং ভুয়া চেক দেওয়ার মাধ্যমে জালিয়াতি করে আসছিল।
প্রথম নিউজ, ঢাকা: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারি, বেসরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি, এমডি সাজতেন একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্যরা। এরপর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মালামাল ক্রয় আদেশ দিয়ে ভুয়া চেক দিয়ে প্রতারণামূলকভাবে করতেন বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ। এমনই একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর সঙ্গে ভুয়া নাম-পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়িক লেনদেন করে এবং ভুয়া চেক দেওয়ার মাধ্যমে জালিয়াতি করে আসছিল।
সেই চক্রের ভুয়া মেজর পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎকারী এক প্রতারককে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন টিক্কা পাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২। গ্রেফতার ওই ব্যক্তির নাম মো. মহিউদ্দিন মজুমদার (৪৭)। তার বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ৩টি মোবাইল, সিমকার্ড ৬টি, ২টি বিদেশি এনজিওর সিল, ২টি সিল প্যাড, চেক বই এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দপ্তরের নাম, ঠিকানা সংবলিত প্যাড।
রোববার (১ অক্টোবর) এ তথ্য জানান র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সিনিয়র এএসপি শিহাব করিম। তিনি বলেন, আসামি মো. মহিউদ্দিন মজুমদার নিজেকে বড় বড় সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের পিডি, এমডি ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মাঝারি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোবাইলফোনে মালামালের ক্রয় আদেশ দেন। পণ্য সরবরাহকারীকে দেওয়া কাগজে ব্যবহার করেন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের নাম, ঠিকানা ও সিলমোহর। উক্ত ক্রয়কৃত মালামালের টাকা তিনি নগদ পরিশোধ না করে বাহকের মাধ্যমে চেক পাঠিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী কোম্পানি প্রদানকৃত চেক দিয়ে টাকা উঠাতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানায় চেকগুলো ভুয়া। ভুক্তভোগীরা আসামিকে ফোন দিলে আসামির মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, চক্রটির স্থায়ীভাবে কোনো অফিস না থাকলেও বিভিন্ন সময় ব্যবসায়িদের কাছে বিশ্বাস অর্জনের জন্য ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় নিয়ে মালামাল ক্রয়ের ডিল ফাইনাল করতো। আসামি মো. মহিউদ্দিন মজুমদার কোম্পানি থেকে মালামাল আনার জন্য নিজস্ব গাড়ি ব্যবহার না করে অ্যাপস ভিত্তিক ভাড়া গাড়ি দিয়ে মালামাল নিতেন। এর আগেও তিনি গ্রেফতার হয়, পরে জামিনে মুক্তি লাভ করে পুনরায় প্রতারণা শুরু করে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় ৬টিরও অধিক প্রতারণার মামলা রয়েছে। গ্রেফতার আসামিকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।